Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘ডেভিল’ বাঁচাতে গিয়ে নিশ্চিহ্ন হলো পেঙ্গুইন!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২১, ৪:০৫ পিএম

একটা প্রজাতিকে বাঁচাতে গিয়ে তবে কি অন্য প্রজাতিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিলেন প্রাণীবিদরা? পূর্ব তাসমানিয়ার মারিয়া আইল্যান্ডের বাস্তবচিত্র এ প্রশ্নই তুলে দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বিলুপ্তপ্রায় তাসমানিয়ান ডেভিলকে বাঁচাতে ২৮টি ডেভিল ২০১২ সালে ছেড়ে আসা হয়েছিল মারিয়া দ্বীপে। ২০১৬-এর মধ্যেই তাদের সংখ্যা বেড়ে হয় ১০০। আর সেই শিকারি ডেভিল-বাহিনীর দাপটে ১১৬ বর্গকিলোমিটারের দ্বীপ থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে ৩ হাজার জোড়া ‘ব্রিডিং’ পেঙ্গুইন!

ফেসিয়াল টিউমারের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতেই তাসমানিয়ান ডেভিলের ঠাঁই হয়েছিল জনশূন্য এই দ্বীপে। এখানে গাড়ি চলার রাস্তা নেই, জনবসতি নেই- ফলে সংক্রমণ কোনও ভাবেই এখান অবধি পৌঁছবে না, এমনটাই ভেবেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণ না ছড়ালেও দ্বীপের যা অবস্থা, তাতে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে! 'বার্ডলাইফ তাসমানিয়া'র কনভেনার এরিক ওয়েহেলারের মতে, ‘পক্ষীকূলের জন্য এটা বড় ধাক্কা। তবে, এটা হওয়ারই ছিল। যতবারই মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে বা না বুঝে সমুদ্র তীরবর্তী দ্বীপে এমন স্তন্যপায়ীদের এনেছে, ততবারই এমন হয়েছে। দ্বীপের পক্ষীকূলের উপর বিপর্যয় নেমে এসেছে।’ ওয়েহেলারের দাবি, মানুষের জনবসতি বেড়ে চলার কারণে অস্ট্রেলিয়ার পেঙ্গুইনরা এমনিতেই বিপন্ন। সেক্ষেত্রে মারিয়া দ্বীপ, ভিক্টোরিয়া দ্বীপের মতো নির্জন স্থান ওদের বাসস্থান ও বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ। কিন্তু সেখানেও এখন বিপদ!

গত বছরের গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, শুধু পেঙ্গুইন নয়, দ্বীপের কাছে বাসা বানিয়ে থাকা সামুদ্রিক পাখিরাও তাসমানিয়ান ডেভিলের অত্যাচারে বিপন্ন। ওয়েহেলারের যুক্তি, বিড়াল বা ওই গোত্রীয় প্রাণীদের থেকে ডেভিল আকারে বড়, সেই সঙ্গে মাটি খোঁড়ার তৎপরতাও ওদের রয়েছে। সেই কারণেই ওরা মারিয়া আইল্যান্ডের পাখিদের জন্য ক্রমে বিপদের কারণ হয়ে উঠছে। মারিয়া দ্বীপের কেপ ব্যারেন হাঁসেরা সাধারণ মাটিতে বাসা বানায়, কিন্তু ওই দ্বীপে ডেভিল আসার পর থেকে টিকে থাকার তাড়নায় হাঁসেরও স্বভাব বদলাতে শুরু করেছে। ডেভিলদের আক্রমণ এড়াতে গাছে বাসা বানাচ্ছে তারা!

ওয়েহেলারের দাবি, এক দশক আগেও ফেশিয়াল টিউমার যে হারে ছড়াচ্ছিল, এখন সেই গতি অনেকটা কমেছে। তখন তাসমানিয়ান ডেভিলদের এখানে আনার যুক্তি ছিল, কিন্তু এখন দ্বীপের অন্য জীবকূল যখন বিপন্ন, তখন ডেভিলদের অন্যত্র সরানোর ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলেই মনে করেন তিনি। সূত্র: সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্ট্রেলিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ