মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের নাটকীয় উত্থান এমন এক সময়ে ঘটে যখন আমেরিকার ইরাক আক্রমণ এবং আফগানিস্তানে সামরিক উপস্থিতি এ অঞ্চলে মার্কিন কর্তৃত্ব এবং ব্যাপক আন্তর্জাতিকতাবাদ প্রকল্পকে অবনমিত করে তার একচেটিয়া আধিপত্যের আকাক্সক্ষা ক্ষুণ্ন করেছিল। দীর্ঘমেয়াদে এর ফলে আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলো দেশটির কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে এবং এখন তারা শান্তি আলোচনা ও প্রতিরক্ষা উভয় ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনকে পুরোপুরি পাশকাটানোর ক্রমবর্ধমান চেষ্টায় লিপ্ত।
এই পরিস্থিতি পশ্চিমে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে চীনের জন্য সহায়ক হয়েছে, যদিও চীনকে ঠেকাতে করতে মার্কিন চাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়া অঞ্চল থেকে একে একে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার চীনের কাছে একটি আকর্ষণীয় সুযোগ হিসাবে উপস্থিত হয়েছে। এটি একটি বিকল্প বিশ্ব ব্যবস্থা দাড় করাচ্ছে, যেখানে এশিয়াতে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি হ্রাস পেয়েছে এবং চীন কৌশলে তার সীমানা থেকে পশ্চিমাদের সরিয়ে দেয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
চীনের কৌশলটি অন্যান্য সমমনা রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির সাথেও খাপ খাচ্ছে, যা এখন একটি আন্দোলনের সূচনা করেছে, যেখানে দেশটির প্রাধান্য, শূচিতার মতবাদ এবং তার সীমান্তগুলো সমুন্নত রয়েছে। ‘এই ভাবনাটি চীনের এফএম ওয়াং ইয়ি’র মার্কিন বিষয়ক ঘোষণার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতে প্রতিধ্বনিত হয়েছে, যিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, বেইজিং আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সেনা প্রত্যাহার সমর্থন করে এবং ভবিষ্যত স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
বেইজিংয়ের দৃষ্টিতে, আফগানিস্তানে মার্কিন উপস্থিতি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল লক্ষ্য থেকে অনেক আগেই বিচ্যুত হয়েছিল এবং চীনের শক্তির বৃদ্ধি রোধে ভূ-রাজনৈতিক প্রকল্পে পরিণত হয়েছিল। তবুও, দীর্ঘ মেয়াদে, আফগান জটিলতাতে চীনের বৃহত্তর অংশীদারিত্ব তাকে অন্যান্য সঙ্কটপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চলে আমেরিকার সাথে প্রতিযোগিতা করাকে বিভ্রান্ত করবে। সুতরাং, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নেতিবাচক প্রভাবগুলো পশ্চিম এশিয়াতে চীনের শক্তি বৃদ্ধির সম্ভাব্য সুবিধার তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে।
সেক্ষেত্রে, আফগানিস্তানে কম ক্ষতিকারক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বেইজিংয়ের কার্যকর বিকল্প বৈদেশিক নীতি কী হতে পারে? বিশ্লেষকরা যুক্তি দিয়েছেন যে, বেইজিং আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তার নব্য ও সীমিত নিরাপত্তা কার্যক্রমকে এক বিস্তৃত সামরিক অভিযানে রূপান্তরিত করতে পারে; সম্ভবত একটি শান্তিরক্ষা মিশন।
এই বিষয়টি চীনের রাষ্ট্রবহির্ভূত নিরাপত্তা হুমকির মাত্রার উপর নির্ভর করবে। তবে, বেইজিংয়ের সম্ভাব্যতম প্রতিরক্ষা পদক্ষেপটি আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদী এবং চরমপন্থীদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য অন্যান্য আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলোর সাথে একত্রিত হওয়ার প্রচেষ্টার সংমিশ্রন ঘটাবে। রাশিয়া, পাকিস্তান এবং ইরান এই ইস্যুতে চীনের সাথে আনন্দের সাথে কাজ করবে। কারণ তারা এর মাধ্যমে এই অঞ্চল থেকে পশ্চিমা জোটকে এবং বিশেষত আমেরিকাটিকে সরিয়ে দেবে।
এক অর্থে, এই অনুপ্রেরণাটি উল্লেখিত ৪টি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রের কাছ থেকে আরো বৃহত্তর প্রচেষ্টাগুলোকে বের করে আনবে। কারণ ৪টি দেশই পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে একই চাপ (বিভিন্ন মাত্রায়) অনুভব করে আসছে। এরা পুরোপুরি বিকল্প বিশ^ ব্যবস্থা না হলেও (যা চীন চায়), অন্তত এমন একটি বিশ্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা তাদের জাতীয় স্বার্থ অনুসারে উল্লেখযোগ্যভাবে পুনর্র্নির্মাণযোগ্য। তথ্যসূত্র : ইউরেশিয়া রিভিউ (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।