পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরাবরই উচ্চাভিলাষী ছিলেন রাজধানীর কদমতলীতে মা-বাবা ও বোন খুনের মুলহোতা মেহজাবিন ইসলাম মুন। আর এক পর্যায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। বিয়ের আগে থেকেই মুনের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছিলেন বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা। তার উচ্ছৃঙ্খল জীবন মেনে নিতে পারেননি প্রথম স্বামী আল-আমিন। উচ্ছৃঙ্খলতায় বাধা দেয়ায় বিয়ের পর স্বামী আমিনের সাথে শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব। এক পর্যায়ে বেপরোয়া মুন খুন করেন প্রথম স্বামীকে। এ জন্য তাকে জেলও খাটতে হয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর বাপ-দাদার সম্পদ ও ব্যাংকে জমানো কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন তিনি। সম্পদ ও টাকা আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে মা-বাবা-বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মুন। আর তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন দ্বিতীয় স্বামী শফিকুল ইসলাম অরণ্য। মামলা তদন্ত, মুন ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট পুলিশের একজন কর্মকর্তা গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘ক্রাইম প্যাট্রল’ ও মোবাইল গেমে আসক্ত ছিলেন মেহজাবিন ইসলাম মুন। মা, বাবা ও বোনকে হত্যার কৌশল রপ্ত করতে নিয়মিত ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ক্রাইম প্যাট্রল’ দেখতেন। অপরাধবিষয়ক এ অনুষ্ঠানটির প্রতিটি পর্ব তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন। সেইসঙ্গে তিনি একটি মোবাইলে অনলাইন গেমেও আসক্ত ছিলেন। অর্থের বিনিময়ে সেটি খেলতেন। তাতে নায়ক নানা কৌশলে শত্রুদের মেরে ফেলে। এ ছাড়া অচেতন করে হত্যার কৌশল সম্পর্কে জানতে অনলাইনে প্রচুর অনুসন্ধান চালান মেহজাবিন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুন এসব স্বীকার করেছেন বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
তদন্ত-সংশ্নিষ্টদের ধারণা, ক্রাইম প্যাট্রল দেখা, মোবাইল গেম খেলা ও অনলাইন অনুসন্ধানের মাধ্যমে পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। এসব ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মুন একাই তিনজনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তবে তার স্বজনরা বলছেন, অর্থ ও সম্পত্তির জন্য এ হত্যাকাণ্ড। এতে শফিকুলও জড়িত। এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য মুনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তার স্বামীকেও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দ্রুত খুনের প্রকৃত কারণ এবং এর সাথে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা পরিষ্কার হওয়া যাবে।
ট্রিপল হত্যামামলার বাদী মুনের চাচা সাখাওয়াত হোসেন জানান, নিহত মাসুদ রানা ২৬ বছর প্রবাসে ছিলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তার ১৩ শতাংশের একটি জমি ছিল। ২ বছর আগে মাসুদ রানা সেটি বিক্রি করে কেরানীগঞ্জে দুটি জমি কেনেন। কিছু টাকা কেরানীগঞ্জের একটি ব্যাংকেও জমা রাখেন। এই সম্পত্তি ও টাকা ছাড়াও দাদার বাড়ির সম্পত্তির প্রতিও লোভ ছিল মুন ও তার স্বামীর। সম্পত্তি ও টাকা দিতে মা-বাবাকে চাপের ওপর রাখতেন এই দম্পতি। ৬ মাস আগেও গ্রামের এক আত্মীয়ের কাছে দাদার বাড়িতে কী পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে জানতে চেয়েছিলেন মুন ও শফিকুল।
কদমতলী থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, মামলার আসামি মুন ও তার স্বামী শফিকুলকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন। হত্যার কারণ হিসেবে পতিতাবৃত্তি, পরকীয়া, সম্পত্তি আত্মসাৎসহ সম্ভাব্য সব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। গত শনিবার সকালে কদমতলীর মুরাদপুর রজ্জব আলী সরদার রোডের পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয়তলা থেকে মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী মৌসুমী ইসলাম (৪০) ও মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম মোহিনীর (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অচেতন অবস্থায় মেহজামিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম ও মেয়ে তৃপ্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।