পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তালেবানের চুক্তি কার্যকরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আফগানিস্তানে জোরালো কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন উদ্যোগ অনুযায়ী, তালেবানের অংশগ্রহণে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা এবং আফগানিস্তানের মাটিতে সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অবসান ঘটানোর কথা বলা হয়েছে। এ প্রচেষ্টার সাফল্যের ওপরই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করছে। তালেবানের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের স্বাক্ষরিত চুক্তি ২০২১ সালের মে মাসে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। এর আওতায় আফগানিস্তান থেকে অবশিষ্ট আড়াই হাজার মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। তবে হোয়াইট হাউজে ক্ষমতার পালাবদলের পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই বোঝাপড়া মেনে নেবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।
এরই মাঝে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøনকেনের ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি গোপন চিঠি আফগান সংবাদমাধ্যমে আলোড়ন তুলছে। ওই চিঠিতে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করলে তালেবান দ্রæত আরও এলাকা দখল করে নিতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহান্তে লেখা বিøনকেনের চিঠি অনুযায়ী বাইডেন প্রশাসন আফগানিস্তানে আমূল পরিবর্তন এনে নতুন একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনে তালেবানের অংশগ্রহণ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করছে। তিনি আফগান নেতাদের বিষয়টি বিবেচনা করতে উৎসাহ দিয়েছেন। তারা রাজি হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তুরস্কে সব পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে তালেবানসহ সব পক্ষের মধ্যে নতুন একটি শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা তুলে ধরছে মার্কিন প্রশাসন। নেপথ্যে ক‚টনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক সদিচ্ছা যাচাই করে সেই পথে এগোনোর চেষ্টা শুরু হয়েছিল। তবে ওই চিঠি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন পক্ষ চাপের মুখে পড়বে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে বিশেষ মার্কিন দ‚ত হিসেবে নিজের আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লরেল মিলার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন সম্ভবত বিভিন্ন বিকল্প খতিয়ে দেখছে। ট্রাম্পের চুক্তি কার্যকর করা অথবা নতুন কোনও বোঝাপড়ার মধ্যে কোনটা বাস্তবসম্মত হবে, তা বিবেচনা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিøনকেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির উদ্দেশ্যে সাবেক ট্রাম্প প্রশাসনে আফগানিস্তানের দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ দ‚ত জালমাই খালিলজাদের প্রস্তাব দ্রæত বিবেচনার জন্য চাপ দিচ্ছেন। সব পক্ষ বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাব মেনে নিলে বিøনকেন একাধিক পদক্ষেপ তরান্বিত করতে চান। প্রথমত তালেবানকে ৯০ দিনের জন্য বসন্তকালে বাৎসরিক সশস্ত্র অভিযান থেকে বিরত থাকতে হবে। আমেরিকার উদ্যোগে তুরস্কে সব পক্ষের মধ্যে আলোচনার পাশাপাশি বিøনকেন জাতিসংঘের উদ্যোগে আফগানিস্তানের সব প্রতিবেশী দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের প্রস্তাব দিয়েছেন। বিশেষ করে পাকিস্তান ও ইরানের সমর্থন ছাড়া কোনও শান্তি চুক্তি কার্যকর করা কঠিন হবে বলে তিনি মনে করছেন। ১ মে-র মধ্যে চ‚ড়ান্ত বোঝাপড়া সম্ভব না হলেও ক‚টনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হলেই ওয়াশিংটন সন্তুষ্ট হবে। কোনও বোঝাপড়া ছাড়া আচমকা সেনা প্রত্যাহার করতে চায় না বাইডেন প্রশাসন। তালেবানের সঙ্গে আপোসের প্রশ্নে আফগানিস্তানের সরকার ট্রাম্প ও বাইডেন প্রশাসনের উদ্যোগ নিয়ে মোটেই উৎসাহ দেখাচ্ছে না। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ বলেন, একটি ঘরে মাত্র ২০ জন মিলে দেশের ভবিষ্যৎ স্থির করা চলে না। তালেবান নির্বাচনে অংশ নিলে তার অবশ্য কোনও আপত্তি নেই। আমরুল্লাহ সালেহ বলেন, বৈদেশিক শক্তির উপর নির্ভরতা সত্তে¡ও দেশের সাড়ে তিন কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার অন্য কারও হাতে দেওয়া হবে না। তালেবানের একটি স‚ত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, যে সরাসরি অন্তর্ববর্তীকালীন সরকারে অংশ না নিলেও তালেবান এমন সরকার গঠনের বিরোধিতা করবে না। ডিডবিøউ, হিন্দুস্তান টাইমস, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।