বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লালদিয়ার চরে চট্টগ্রাম বন্দরের হাজার কোটি টাকার ৫২ একর জমি দখলমুক্ত হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের ধারক দেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ কর্ণফুলীর দুই তীরে হাজারো অবৈধ স্থাপনা এখনো অক্ষত থেকে গেছে।
শুধু তাই নয় দিনে দিনে বাড়ছে দখলদারদের অবৈধ স্থাপনা। নদী দখল করে গড়ে উঠছে বড় বড় ভবন। রাঘব বোয়ালদের দখলবাজীতে সংকুচিত হয়ে গেছে কর্ণফুলী নদী।
তাতে চট্টগ্রাম বন্দরের মূল চ্যানেল সরু হয়ে গেছে। নদী কোন কোন অংশ খালের আকার ধারণ করেছে। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় কমছে গভীরতা। ফলে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়েও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
আদালতের নির্দেশে বিগত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। টানা পাঁচ দিনের অভিযানে নগরীর সদরঘাট থেকে বাংলাবাজার পর্যন্ত অংশে ৩৮০টি স্থাপনা গুঁড়িয়ে ১০ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছিল। তবে অভিযান থেমে যাওয়ায় ওই জমি ফের দখলদারদের কব্জায় চলে যায়। সেখানে ফের অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
এদিকে আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ৫২ একর জমি দখলমুক্ত করে। তবে নদী তীরে অবশিষ্ট অবৈধ স্থাপনা কখন উচ্ছেদ করা হবে তা নিশ্চিত করে বলছে না কেউ। এ জন্য বন্দর এবং জেলা প্রশাসনের রশি টানাটানি চলছে।
জেলা প্রশাসনের ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, এই নদীর অবৈধ স্থাপনা ২ হাজার ১১২টি। তবে গত কয়েক বছরে অবৈধ স্থাপনা আরও বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরাবলছেন দখলের কারণে নদীটির ভৌগোলিক অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রস্থ কমে গেছে ৫০ থেকে ২৫০ মিটার পর্যন্ত। দখল ও দূষণের কারণে এর নাব্যতা এবং প্রসস্ততার ক্ষতি হয়েছে।
আদালতের নির্দেশ আছে, পাড়সহ নদীর জায়গা কোনোভাবেই ইজারা বা হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু এ নির্দেশ মানছে না বন্দর। বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম বন্দর কিছু সংস্থাকে নদীসংলগ্ন এলাকা ইজারা দিয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি ইনকনট্রেড কনটেইনার ডিপোকে দিয়েছে ১৯ দশমিক ৬ একর জায়গা। আর ফিশারিঘাট নতুন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রকে দিয়েছে ৪ একর। জেলা প্রশাসন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তবে বন্দরের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারা ছাড়াই অনেক এলাকায় স্থাপনা গড়ে উঠেছে। সদরঘাট থেকে শুরু করে বালুরঘাট পর্যন্ত নদীর দুই তীরে হাজার হাজার স্থাপনা। রাজনৈতিক দলের নেতা এবং প্রভাবশালীদের এসব স্থাপনা কর্ণফুলী নদীকে চেপে ধরেছে।
২০১০ সালে কর্ণফুলী নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে নদীর সীমানা নির্ধারণ, দখল, ভরাট ও নদীতে যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই কর্ণফুলী নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ভূমি জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ লক্ষ্যে গঠিত ১৬ সদস্যের কমিটি ২০১৬ সালের ১৮ জুন আরএস ও বিএস রেকর্ড অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর বর্তমান অবস্থান ও দখলদারদের চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদীর দুই তীর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা সরাতে ৯০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে আদেশ প্রদান করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।