মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চীনেই প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় ১ বছর আগে দেশটিতে প্রথমবার লকডাউন জারি করা হয়। মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে উঠে এক বছর পরে এখন অর্থনীতির দিক থেকে বিশ্বের বাকিদেশগুলোকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে চীন। তাদের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণে সাফল্য ও বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অংশীদারিত্ব অর্জন।
ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে ২০২০ সালে মোট দেশজ উৎপাদনের পরিমাণ ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও তাদের অংশ গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু সেখানে চীনের শেয়ার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর চীনের জিডিপি ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রসারিত হবে। যার ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোকে ছাড়িয়ে শীর্ষে অবস্থান করবে। বিশ্বের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৮ সালের মধ্যেই চীন তাদেরকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে যাবে। এ বিষয়ে ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনে গ্লোবাল ইকোনমিক এবং ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক হোমি খারাস বলেন, তিনি পূর্বে যে অনুমান করেছিলেন, তার চেয়েও দুই বছর আগেই চীন শীর্ষে চলে যাবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপানো বাণিজ্য যুদ্ধ মোকাবেলা করার পরে, চীন এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করছে এবং দেশীয় উৎপাদনের উপরে নির্ভর করেই তারা পরবর্তী ধাপে বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা করছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চলতি সপ্তাহে বলেছিলেন যে, নতুন বছরে ‘সময় এবং পরিস্থিতি’ তাদের অনুকূলে রয়েছে। এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বছর শুরু হয়েছে ঘরোয়া অশান্তি ও বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে।
বিদায়ী বছরের শেষ প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে রয়টার্সের এক জরিপে উঠে এসেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। পরের তিন মাসে প্রবৃদ্ধি আরও বেড়েছে দেশটির। ৪৬ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই জরিপ করেছে তারা। করোনার ভয়াবহ প্রকোপ থেকে বড় অর্থনীতির মধ্যে কেবল চীনই নিজেদের সামলে নিয়েছিল দ্রুত। প্রবৃদ্ধিতে নেই করোনার প্রভাব। হুবেই প্রদেশের উহানে করোনার উৎপত্তি হওয়ার পর সংক্রমণ মোকাবিলায় কঠোর সব পদক্ষেপ নেয় চীন। পদক্ষেপের কারণেই সবার আগেই সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে দেশটি। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে ফিরে এসেছে প্রবৃদ্ধির ধারায়। ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে চীনের অর্থনীতি সংকুচিত হয় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, শেষ প্রান্তিকে চীনের এই ভালো অবস্থান এটাই ইঙ্গিত দেয় যে ২০২১ সালটিও ভালো যাবে। তবে কেউ কেউ সতর্ক করে বলছেন, চীনের জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো সামনের মাসের চান্দ্রবর্ষ উৎসব। ওই সময় অভ্যন্তরীণ পরিবহন এত বেশি বাড়ে যে সংক্রমণ আবার বাড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই চীনকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলেই মনে করছেন তারা। গত মাসে চীন নেতারা এ বছর অর্থনীতির জন্য ‘প্রয়োজনীয়’ নীতি সমর্থন বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ই গ্যাং গত সপ্তাহে বলেন, ২০২১ সালে তারা স্থিতিশীল মুদ্রানীতিকে অগ্রাধিকার দেবেন। তিনি আরও বলেন, প্রণোদনাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার যেকোনো পদক্ষেপই অর্থনীতিতে সামান্য প্রভাব ফেলবে। সূত্র: দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।