পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে গুম, খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বাড়ছে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনাও। যাদের বিরাট অংশ গুপ্ত হত্যার শিকার। চলতি মাসের ২০ দিনে লাশ পড়েছে ২০ জনের। প্রতিমাসে বেওয়ারিশ হচ্ছেন ২১ জন।
পারিবারিক কলহ, ব্যক্তিগত শত্রুতা, ছিনতাই-ডাকাতি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঘটছে খুনের ঘটনা। করোনা মহামারীতেও অব্যাহত খুনোখুনিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আতঙ্ক সর্বত্রই। একটির কুল-কিনারা না হতে আরও একটি খুনের ঘটনা ঘটছে। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন আর খুনিচক্রের সদস্যদের পাকড়াও করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে র্যাব-পুলিশকে। পারিবারিক কলহে ঘটছে আত্মহত্যার ঘটনা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তুচ্ছ ঘটনায়ও মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা প্রতিহিংসা, লোভ-লালসায় মানবিক মূল্যবোধ লোপ পাচ্ছে। ফলে নিষ্ঠুরতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। স্বজনের হাতে খুনের ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। মহানগরী এবং জেলায় প্রতিদিনই লাশ পড়ছে। শুক্রবার নগরীর বাকলিয়া বড়মিয়া মসজিদ এলাকায় নিজ বাসা থেকে ইমন খান নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি ঘরের সিলিংয়ের সাথে ঝুলছিলো।
বৃহস্পতিবার রাতে ফটিকছড়ির ভূজপুর সীমান্ত এলাকায় ৫০ ফুট গভীর ক‚পের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের কঙ্কাল। এক বছর আছে তাকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়। একই দিন নগরীর সদরঘাটে একটি আবাসিক হোটেল থেকে তারেক হাসান নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
গত মঙ্গলবার নগরীতে এক গৃহবধূসহ দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আকবরশাহ থানা এলাকার একটি বাসা থেকে গৃহবধূ নূর টিনার (২২) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নূর টিনা গাইবান্ধা জেলার পূর্ব প্রতাপ সাদুল্যাপুর এলাকার মো. আল আমিনের স্ত্রী। তিনি স্বামীর সঙ্গে গোলপাহাড় এলাকার রমজানের মায়ের কলোনীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। একইদিন নগরীর খুলশী থানার পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পাশের একটি বাসা থেকে অজ্ঞাতনামা এক রিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
১৫ নভেম্বর নগরীর টাইগারপাসে বাটালি হিলের পাদদেশ থেকে আবু হানিফ (৪৩) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। তার বাসা নগরীর ব্যাটারি গলি এলাকায়। তিনি একটি হোটেলের বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন। ওই দিনই পটিয়ার ভাটিখাইন থেকে রানী আক্তার নামে নয় মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নগরীর পাঠানটুলি এলাকায় যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত মারুফ চৌধুরী মিন্টু ১৩ নভেম্বর রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। একইদিন নগরীর ডবলমুরিং থানার চারিয়াপাড়া থেকে ফারজানা আক্তার এবং পাহাড়তলী থানার হরি মন্দির এলাকা থেকে সাহেদা বেগম নামে দুই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
একইদিন লোহাগাড়া উপজেলায় এক প্রতিবন্ধীসহ দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ধানক্ষেতে পাওয়া যায় অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ। আর নিজ বাড়ি থেকে রাশেদুল ইসলাম নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১২ নভেম্বর সাতকানিয়ার কালিয়াইশে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে খুন হন কলেজ ছাত্র সাবিদুল ইসলাম সাজ্জাদ। কথা কাটাকাটির জের ধরে কিশোর রবিউল ইসলাম তাকে ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ১১ নভেম্বর আকবরশাহ থানার নিউ মনসুরাবাদ কসাইপাড়ার নিজ বাসা থেকে মাদরাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মা পারভীন আক্তার পোশাক কারখানায় ছিলেন। বাবা ইউসুফ থাকেন ঢাকায়। খালি বাসায় জানালার গ্রিলের সাথে তার লাশ ঝুলছিল।
১০ নভেম্বর হাটহাজারীর কুয়াইশ চন্দ্রাবিল থেকে লেগুনা চালক নাজমুল হোসেনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে র্যাব। তার তিন দিন আগে বরযাত্রীর জন্য ভাড়ার কথা বলে তাকে নগরীর অলঙ্কার থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। হত্যার পর লেগুনাটি ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। র্যাবের অভিযানে ইতোমধ্যে খুনিচক্রের দুইজন ধরা পড়েছে।
এর আগে রাউজানের বাগোয়ানে মমতাজ বেগম নামে এক দুবাই প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নগরীর আকবরশাহ থেকে উদ্ধার করা হয় রোকসানা আক্তার নামে এক গৃহবধূর লাশ। ৯ নভেম্বর ফটিকছড়ির দক্ষিণ রাঙ্গামাটিয়া থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
৬ নভেম্বর সাতকানিয়ার চরতি তুলাতুলীতে সাঙ্গু নদী থেকে উদ্ধার করা হয় ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তির লাশ। কুপিয়ে হত্যার পর তার লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। ৫ নভেম্বর নগরীর আগ্রাবাদের দাইয়াপাড়ায় নাসিমা মঞ্জিল থেকে সুপ্তা মল্লিক নামে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নগর ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, পারিবারিক কলহ-বিরোধ ও প্রতিহিংসার জেরে বেশিরভাগ খুনের ঘটনা ঘটছে। প্রায় প্রতিটি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। এদিকে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যাও বাড়ছে। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত আনজুমান মুফিদুল ইসলাম ২৩২ জনের লাশ দাফন করেছে। চলতি মাসে দিনে একজন করে বেওয়ারিশ হয়েছেন। জানুয়ারি মাসে ১৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৫ জন, মার্চে ২০ জন, এপ্রিলে ২২ জন, মে মাসে ২৯ জন, জুনে ২৩ জন, জুলাইয়ে ১৬ জন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ২১ জন করে এবং অক্টোবরে ৩০ জনের বেওয়ারিশ লাশ দাফন করে সংস্থাটি। গত বছর বেওয়ারিশ হন ২৮৪ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।