Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

আজ থেকে দ্বিতীয় দফা লকডাউনে ফ্রান্স

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০১ পিএম

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ফ্রান্সে দ্বিতীয়বারের মত দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ পর্যায়ের লকডাউন নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চলবে। মি. ম্যাখোঁ বলেছেন, শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন লকডাউনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র চিকিৎসা অথবা জরুরি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হতে পারবে মানুষ। তবে এ পর্যায়ে রেস্টুরেন্ট এবং পানশালা বন্ধ থাকলেও স্কুল ও কারখানা খোলা থাকবে।
এপ্রিলের পরে ফ্রান্সে কোভিড সংক্রান্ত মৃত্যুর হার এখন সবচেয়ে বেশি। ফ্রান্সে বুধবার নতুন করে ৩৬ হাজার ৪৩৭ জনের মধ্যে কোভিড সংক্রমণ হয়েছে। মি. ম্যাখোঁ বলেছেন যে, তার দেশ ‘দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকির মধ্যে আছে, যা নিশ্চিতভাবে প্রথম দফার চেয়ে গুরুতর’ হবে।
জার্মানিও তাদের দেশে জরুরি লকডাউন আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জার্মানিতে লকডাউনের বিধিনিষেধের নিয়ম ফ্রান্সের তুলনায় কিছুটা শিথিল।
ফ্রান্স এখন কেন এই পদক্ষেপ নিচ্ছে?
বুধবার টেলিভিশনে প্রচার হওয়া এক ভাষণে মি. ম্যাখোঁ বলেছেন যে, ‘মহামারিতে নিমজ্জিত হওয়া ঠেকাতে’ ফ্রান্সের এখনই ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটি এমন গতিতে ছড়াচ্ছে যা সবচেয়ে হতাশাবাদী মানুষটিও চিন্তা করতে পারেননি’। ফ্রান্সের হাসপাতালগুলোর অন্তত অর্ধেক আসন এ মুহ‚র্তে কোভিড রোগীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ জানিয়েছেন, নুতন আইন অনুযায়ী ঘরের বাইরে যাওয়ার জন্য নাগরিকদের একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। যেকোন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে তিনি জানিয়েছেন, সরকারি অফিস ও কারখানা খোলা থাকবে এবং অর্থনীতি যেন ‘থেমে না পড়ে’ সেই বিষয়ে জোর দিয়েছেন তিনি। নিষেধাজ্ঞা পহেলা ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর এ নিষেধাজ্ঞার নিয়মকানুন পর্যবেক্ষণ করা হবে। প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন, ‘বড়দিন উপলক্ষে পরিবারের সদস্যরা একত্রিত’ হতে পারবেন।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা আক্রমণে ফরাসী সরকার বেশ বিস্মিতই হয়েছে। প্রতিদিন আনুমানিক ৫০ হাজার নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, এ সংখ্যা সংক্রমণের আসল সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। প্যারিসে হাসপাতালের জরুরি আসনের ৭০ শতাংশে বর্তমানে কোভিড রোগীরা রয়েছেন। দ্বিতীয় দফা লকডাউন জারি করায় ফ্রান্সে ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে - বিশেষ করে বিনোদন এবং ইভেন্টস সংক্রান্ত ব্যবসার ক্ষেত্রে। প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ অবশ্য ফরাসী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করার আশ্বাস দিলেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি। গত কয়েকমাসে ফরাসী অর্থনীতির অবস্থা কিছুটা ভাল হলেও এখন মনে হচ্ছে যে, বছরের শেষে নিশ্চিতভাবেই অর্থনীতি আরো খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। ফ্রান্সের সরকারের অনুমান, ২০২০ সালে মোট ১০ শতাংশ জিডিপি হ্রাস হবে।
সুস্থ হলেও শরীরে থাকতে পারে করোনা!
সুস্থ হওয়ার পরও কোভিড-১৯ আক্রান্ত কিছু রোগী শরীরে করোনাভাইরাস বহন করতে পারেন বলে এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে। ওই গবেষণায় সুপারিশ করা হয়েছে, সুস্থ হওয়ার পর কোয়ারেন্টিন ছাড়লেও অন্যদের খুব কাছাকাছি যাওয়া এড়িয়ে চলতে, মাস্ক পরতে এবং ভাইরাসমুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করার জন্য।
গবেষণাটি ১৩১ জন করোনা রোগীর ওপর পরিচালিত হয়েছে। যারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুসারে কোয়ারেন্টিনমুক্ত হয়েছেন। গবেষণায় দেখে গেছে, তাদের মধ্যে ১৭ শতাংশ পূর্ণ সুস্থ রোগী ফলো-আপ পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত হয়েছেন। গবেষণায় ১৩১ জনের মধ্যে ২২ জনের দেহে আবারও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে বয়স ও লিঙ্গভেদে করোনা নেগেটিভ ও পজিটিভ হওয়ার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।
গবেষণা দলের যৌথ নেতৃত্বে থাকা ইতালির ফন্ডাজিওন পলিক্লিনিকো ইউনিভার্সিটির ফ্রান্সেসকো ল্যান্ডি বলেন, আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে সুস্থ হওয়া রোগীদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক উপসর্গহীন হলেও ভাইরাস বহন করছেন। এতে দেখা গেছে, যেসব রোগীর গলা শুকিয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো লক্ষণ রয়েছে তাদের নতুন পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ