পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে হঠাৎ বেড়েছে খুনোখুনি। ৭২ ঘণ্টায় লাশ পড়েছে পাঁচজনের। তাদের মধ্যে তিনজনকে অন্য এলাকায় খুন করে লাশ ফেলে যাওয়া হয়েছে। দুজনকে হত্যা করা হয়েছে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে। চাঞ্চল্যকর এসব খুনের রহস্য উদঘাটন এবং খুনিচক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। এতে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। খুনের ঘটনায় কিছুটা চিন্তিত নগর ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তারাও। যদিও তারা বলছেন, ব্যক্তিগত বিরোধ এবং দ্ব›েদ্ব এসব খুনের ঘটনা ঘটেছে। খুব শিগগির সবকটি ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।
গত শনিবার দুপুরে পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ থেকে একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায় ওই ব্যক্তির নাম নবী হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে। পটিয়ার থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, করোনায় লকডাউন শুরু হওয়ার পর বিদেশ থেকে ফেরেন নবী হোসেন। এরপর থেকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তার বস্তাবন্দি লাশ মহাসড়কে কিভাবে আসলো তা তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ওসি জানান, পায়ের রগ কেটে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। গলায় ছিল গামছা পেছানো, হাত-পা বাঁধা। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকান্ড পরিকল্পিত এবং প্রতিহিংসার বশে খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি আশাবাদী খুব শিগগির খুনের রহস্য উদঘাটন ও খুনিরা ধরা পড়বে।
এদিকে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বিকাশের কমিশন এজেন্ট বিজয় কুমার বিশ্বাস (৩২) হত্যাকান্ডেরও কোন কিনারা হয়নি। পাহাড়তলী থানার ওসি মঈনুর রহমান বলেন, তিনি খুনের আগের দিন ইপিজেড থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ বা অপহৃত হন। তার লাশ পাওয়া গেছে পাহাড়তলী থানার সাগরিকার আলিফগলিতে। শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার লাশ বস্তায় ভরে ফেলে যাওয়া হয়। এর ফলে খুনের রহস্য উদঘাটন এবং খুনিদের চিহ্নিত করতে কিছুটা সময় লাগছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইপিজেড থানা এলাকায় গিয়ে তদন্ত করছেন। মামলার সঠিক তদন্তের জন্য তদন্তভার ডিবি পুলিশকে দেয়ার সুপারিশ করবেন বলে জানান তিনি। বিজয় কুমার বিশ্বাস কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার সন্তোষ কুমার দাশের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ পাওয়া যায়। পাহাড়তলী নাবিক কলোনির সামনে তার দোকান আছে। ওই এলাকায় তার বাসা। আট মাস আগে তার বিয়ে হয়। পুলিশের ধারণা, বিকাশের কমিশন এজেন্ট হওয়ায় তার কাছে সবসময় বড় অঙ্কের টাকা থাকত। সেই টাকার জন্যই এ খুনের ঘটনা হতে পারে।
একই রাতে নগরীর হালিশহর এরাকায় খুন হন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এম এ লফিতের ছেলে মিজানুর রহমান লিটন (৫২)। হালিশহর আবাসিক এলাকার এল ব্লকের খালপাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সোহেল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত খুনের রহস্য উদঘাটন এবং খুনিচক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে তেমন অগ্রগতি নেই বলে জানান তিনি। লিটন একসময় হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করলেও সর্বশেষ জমি বিক্রির মধ্যস্থতা করতেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। অন্য কোথাও খুন করে তার লাশ ওই এরাকায় ফেলে দেয়া হয়।
নগরীর বাকলিয়ার নতুন ফিশারিঘাট এলাকায় বেড়ার বস্তির আধিপত্য নিয়ে খুন হন শ্রমিক সর্দার (মাঝি) মো. আবু তৈয়ব (৪২)। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে তৈয়বকে আসামিরা পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এরপর তারা এ ঘটনাকে গণপিটুনি বলে প্রচার শুরু করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং তাদের গ্রেফতার করে। এ সাতজন হলেন- আক্তার হোসেন ওরফে কসাই আক্তার, মো. সাইফুদ্দীন, মো. রায়হান উদ্দিন ওরফে রানা, আশরাফুল ইসলাম, মো. সবুজ, মো. আবু তাহের ওরফে কালু ও হাসিনা। থানার ওসি নেজাম উদ্দিন জানান, এ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় আরও কারা জড়িত সে তথ্য বের করা হবে।
বুধবার রাতে ফটিকছড়ির সমিতিরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর এলাকায় ছুরিকাঘাতে হেলাল উদ্দিন (৩১) নামে এক যুবককে খুন করা হয়। এ ঘটনায় মেহেরাব হোসেন অপি (২১) ও মো. লতিফুর রহমান (২৫) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। থানার ওসি বাবুল আক্তার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই যুবক খুনের দায় স্বীকার করে। তারা জানায়, রাতের অন্ধকারে হেলাল উদ্দিনকে দেখে চোর ভেবে ছুরিকাঘাত করে তারা। এরপর তার মৃত্যু হয়। তবে হেলাল উদ্দিনের সাথে তাদের পূর্ব কোন বিরোধ ছিল না। ওসি বলেন, প্রকৃত ঘটনা জানতে দুজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।