Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রিয়জনের মৃত্যুতে কাটতে হয় নারীর হাতের আঙুল!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ১১:৪০ এএম

মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তির জন্য বিভিন্ন ধর্মে নানা রকম নিয়ম চালু আছে। কিন্তু গভীর জঙ্গলে বসবাস করে যারা তাদের রয়েছে ব্যতিক্রম নিয়ম। তবে এসব নিয়ম অনেক ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতার মত।
আত্মীয়-পরিজন মারা গেলে সব মানুষই কমবেশি কান্নাকাটি করেন। জাতি,ধর্ম নির্বিশেষে শোক প্রকাশের এই চিরাচরিত প্রথা বিশ্বের যেকোনও প্রান্তেই দেখা যায়। চোখের পানিতে নিকটাত্মীয়কে শেষ বিদায় জানানোটাই মানুষের আদি পরম্পরা। কিন্তু বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে বিচিত্র লোকাচার কখনও কখনও মনে বিষাদ ডেকে আনে। এমন অনেক কিছু দেখা যায়,যেগুলো একইসঙ্গে বৈচিত্র্যময় এবং রহস্যময়। বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ব্যতিক্রমী জীবনাচার বা জীবনধারা আমাদেরকে বিস্ময়ে হতবাক করে। এ পর্যন্ত তবুও ঠিক ছিল। কিন্তু যদি এমন কোনও প্রথা বা পরম্পরা থেকে থাকে, যা শুনলে রোমকূপ খাড়া হয়ে যায় বা হাড়হিম হয়ে যায়।

হ্যাঁ,এমনই এক নিষ্ঠুর ও অমানবিক প্রথা এই একবিংশ শতাধীতেও বজায় রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম পাপুয়া এবং দানি অঞ্চলে কতিকা নৃ-গোষ্ঠীর কথা বলা হচ্ছে। প্রিয়জন বিয়োগের পর তাদের শোক প্রকাশের ধরন একইসঙ্গে যেমন নৃশংস,তেমনই রোমহর্ষক। নিকটজন কেউ প্রয়াত হলে আর পাঁচজন যখন কয়েকদিন কান্নাকাটি করেন,স্নান-খাওয়া বন্ধ রাখেন এবং সময়ের আপন গতিতে কয়েকদিনের মধ্যে শোক কাটিয়ে আবার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেন। সেখানে পাপুয়া ও দানি অঞ্চলের কতিকা নৃগোষ্ঠীর নিকটাত্মীয় কেউ মারা গেলে তারা হাতের আঙুলের ডগা কেটে ফেলেন। এটাই তাদের শোকের বহির্প্রকাশ। এভাবেই তারা মৃত পরিজনদেরকে সম্মান জানান। এইভাবে দেখা যায়,কারণ দুই হাতের ৫-৭টা আঙুল কেটে বাদ গিয়েছে। এই যন্ত্রণাময় বিষয়কে তাঁরা বলেন ‘ইকিপালিন’।

এই নৃশংসতার সবথেকে উল্লেখযোগ্য দিকটা হল,লিঙ্গবৈষম্য। কোনও পুরুষ কিন্তু নিজের হাতের আঙুল কেটে ফেলেন না। এটা করেন কেবলমাত্র নারীরা। যুগ যুগ ধরে এই বৈষম্যময় বিরল প্রথা চলে আসছে। যদিও বেশ কয়েকবছর আগে দেশটির সরকার আইন করে এই নৃশংসতা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু জঙ্গলাকীর্ণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে কে আইন মানছে, আর কে মানছে না,তার খোঁজখবর কে আর রাখে। কতিকা নারীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি নয়। তাদের যুক্তি হল– মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি ও মুক্তিলাভ নির্ভর করছে জীবিতদের আঙুল কেটে বাদ দেওয়ার ওপরেই। তাই এই যন্ত্রণা তারা হাসিমুখে হজম করেন জঙ্গলমহলের আড়াই লক্ষ মানুষ। সূত্র পুবের কলম

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিস্ময়কর

২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ