Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিস্ময়কর পিলার্স অব ক্রিয়েশন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

অনন্ত রহস্যে ঘেরা মহাবিশ্ব। এসব রহস্য উন্মোচনে মানুষের চেষ্টার অন্ত নেই। সেই চেষ্টা থেকেই বিস্ময়কর টেলিস্কোপ জেমস ওয়েবের উদ্ভাবন। গত ডিসেম্বরে এটি স্থাপনের পর মহাশূন্যের একের পর এক জট খুলছে। বর্তমানের পৃথিবীতে ফিরে আসছে অতীত। সহজ করে বললে, অতীতের চিত্র তুলে ধরতে পারছে টেলিস্কোপটি। পিলার্স অব ক্রিয়েশন সে ধরনের একটি চিত্র। স্থানীয় সময় গত বুধবার এই ছবি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

বাংলায় আক্ষরিক অর্থে পিলার্স অব ক্রিয়েশন মানে সৃষ্টির স্তম্ভ। এগুলো হাইড্রোজেন ও ধুলোর তৈরি এক ধরনের ঘনীভূত মেঘ। তবে পৃথিবীর মেঘের মতো এরা ক্ষণস্থায়ী নয়। এগুলো ছিল ক্রমপরিবর্তনশীল। এদের অবস্থান পৃথিবী থেকে ৬ হাজার ৫০০ আলোকবর্ষ দূরে মহাকাশের মেসিয়ার-১৬ বা এম-১৬ অঞ্চলে। শূন্যের এ অঞ্চল ঈগল নেবুলা নামেও পরিচিত। এদের নাম সৃষ্টির স্তম্ভ হওয়ার কারণ সম্পর্কে নাসা জানিয়েছে, মূলত হাইড্রোজেন ও ধুলোর এ মেঘ ঘনীভূত হয়েই তৈরি হয় একেকটি নক্ষত্র। এ প্রক্রিয়ায় লেগে যায় কোটি কোটি বছর। সেসব নক্ষত্র থেকে জন্ম নেয় গ্রহ-উপগ্রহ। সেগুলোও ক্রমে শীতল হয়। এ কারণে নক্ষত্রের আদি ও প্রাথমিক অবস্থাই হলো এ পিলার্স অব ক্রিয়েশন। ঈগল নেবুলা› মহাশূন্যে সক্রিয় নক্ষত্র গঠনের অঞ্চল হিসেবেই জ্যোতির্বিদদের কাছে পরিচিত। এর অবস্থান পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পূর্বসূরি হাবল অবজারভেটরির স্বপ্ন ছিল, এ পিলার্স অব ক্রিয়েশনকে গভীরভাবে দেখার। নানা সীমাবদ্ধতায় হাবল পূর্ণাঙ্গ চিত্র ধারণে সক্ষম হয়নি। ১৯৯৫ সালে এটি কিছু চিত্র নিয়েছিল। তবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ বেশ পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেয়েছে। কারণ, এর আছে অতীতের দৃশ্য গ্রহণের অসাধারণ ক্ষমতা। ইনফারেড ডিটেক্টরের মাধ্যমে এটি অতীতের আলোকে ধারণ ও চিহ্নিত করতে পারে। এসব আলো ধারণের মধ্য দিয়েই পূর্ণ চিত্র তৈরি করে নিতে পারে জেমস ওয়েব। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির বিজ্ঞানবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক মার্ক ম্যাককোরেন বিবিসিকে বলেন, তিনি ১৯৯০-এর দশক থেকে ঈগল নেবুলা› নিয়ে গবেষণা করছেন। নবগঠিত নক্ষত্রের সন্ধান পেতে তিনি চেষ্টা করেছেন আলোকবর্ষ দূরে থাকা এসব পিলার্স› দেখতে। অবশেষে জেমস ওয়েব এটা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, তিনি জানতেন চিত্রগুলো দারুণ কিছু হবে। এটা হয়েছেও তা-ই। এম-১৬ অঞ্চলের এসব পিলার্সে› পার্শ্ববর্তী নক্ষত্রগুলোর আলো প্রতিফলিত হয়। এ কারণে এগুলো নানা রং ধারণ করে। বিস্ময়কর সত্য হলো, কোনো অলৌকিক ক্ষমতায় আমরা যদি ওই অঞ্চলে পৌঁছাতে পারি, তাহলে এ পিলার্স অব ক্রিয়েশনকে দেখতে পাব না। কারণ, এগুলো এখন আর সেখানে নেই। আমরা এগুলোকে দেখতে পাচ্ছি কেবল অতীতের দিকে তাকানোর মাধ্যমেই। জেমস ওয়েব তার আয়নায় অতীতের আলোকে ধারণ করেই তৈরি করেছে চিত্র।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিস্ময়কর পিলার্স অব ক্রিয়েশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ