Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত ১৯৬২ অপেক্ষা বেশি পর্যুদস্ত হবে

গালওয়ানে শীর্ষ সেনা কর্তা স্তরে বৈঠক : রাশিয়া-চীন-ভারত ভার্চুয়াল বৈঠক আজ গ্লোবাল টাইমসের নিবন্ধে হুমকি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

চীন সতর্ক করে দিয়েছে যে, দুই পারমাণবিক শক্তির মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি সত্তে¡ও ভারতের সাথে যুদ্ধে যেতে সে ‘ভীত নয়’। বেইজিং তার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় হুমকি দিয়ে দাবি করেছে যে, নয়াদিল্লি ‘১৯৬২-এর চেয়ে বেশি পর্যুদস্ত হবে’, যেখানে একটি সংক্ষিপ্ত, অথচ ভয়ঙ্কর যুদ্ধে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। গত সপ্তাহে হিমালয় সীমান্তের বিতর্কিত লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ভারত যুদ্ধক্ষেত্রে টহল এবং সেনা শক্তিবৃদ্ধি করে যোদ্ধা ও গুপ্তচর বিমান পাঠিয়েছে। ঐ ভয়াবহ যুদ্ধে ৫০০ সৈন্য হাতাহাতি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছিল কমপক্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয় হয়েছিল। গতকাল চুশুল এলাকায় দু’দেশের মধ্যে বৈঠকে চীন তাদের পক্ষে একজন কমান্ডিং অফিসারের প্রাণহানির কথা জানিয়েছে বলে ভারতীয় মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছে।

চীনা কমিউনিস্ট সরকার ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, ভবিষ্যতের যে কোনও সঙ্ঘাত তাদের জন্য ১৯৬২ সালের যুদ্ধের মতো পরাজয় নিয়ে আসবে। রাষ্ট্রীয় মুখপত্র, গ্লোবাল টাইমস-এর একটি নিবন্ধে লেখা হয়েছে, ‘চীনা সামরিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন যে, মূল চীনা সেনাদের সাথে যদি কোন বৃহত্তর স্তরের সামরিক সঙ্ঘাত ঘটে, তবে ১৯৬২ সালের যুদ্ধের মতোই তার পরিণতি হবে, অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত হতাহতের ঘটনা ঘটবে যা ভারতের পক্ষে যাবে না।
‘সম্ভাব্য আত্ম-প্রতিরক্ষা পাল্টা আক্রমণে চীন তার নিজস্ব অঞ্চল সুরক্ষিত করবে এবং বিজয়ী হয়ে ওঠার পরে ভারতীয় ভূখন্ডের দাবি করবে না, তবে এই যুদ্ধ ভারতকে এতটা ক্ষতিগ্রস্থ করবে যে, বিশ্বব্যাপী অবস্থান ও অর্থনীতি কয়েক দশক পিছনে নিয়ে যাবে।
লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঠিক আট দিনের মাথায় আজ রাশিয়া, চীন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। তিন দেশের এই বৈঠক অনেক আগে থেকে নির্ধারিত হয়ে থাকলেও লাদাখের সীমান্ত সংঘাতের পর ভারত তাতে যোগ দিতে খুব একটা রাজি ছিল না, কিন্তু রাশিয়ার অনুরোধেই শেষ পর্যন্ত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই বৈঠকে আসতে সম্মত হয়েছেন।
এদিকে গতকাল পূর্ব লাদাখে চুশুলের চীনা ভূখন্ড মলডোয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফ এই বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে। একটি সূত্র বলেছে, ‘গালওয়ানসহ সব বিষয় নিয়েই ওই বৈঠকে আলোচনা হয়। এর আগে, গত ৬ জুন সেনাবাহিনীর এই স্তরের বৈঠক হয়েছিল। সপ্তাহখানেকের উত্তেজনার পর সেই বৈঠকেই ডি-এসক্যালেশন অর্থাৎ বাহিনী সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে ঐক্যমত্যে পৌঁছে দু’দেশ। তবে আলোচনার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি গালওয়ানে বিশেষ অভিযানের জন্য পুরোপুরি তৈরি ভারতীয় সেনা। রোববার রাত পর্যন্ত সেনা সূত্রে খবর, পূর্ব লাদাখে ভারতের প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনা বাড়ছে। এ নিয়ে সরকারিভাবে কিছু বলা না হলেও উপত্যকায় সমরসজ্জা এবং নয়াদিল্লির তৎপরতা গালওয়ানে বিশেষ অভিযানের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে ধারণা সামরিক বিশেষজ্ঞদের।
মূলত চারটি বড় পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রথমত, স্থলে, পানি ও আকাশপথে কঠোরতম নজরদারির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তিন বাহিনীকে বলপ্রয়োগের পূর্ণ কর্তৃত্ব এবং স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। তৃতীয়ত যুদ্ধাস্ত্র কেনার জন্য সেনাবাহিনীর হাতে অর্থক্ষমতা দেয়া। চতুর্থত অভিযানের জন্য তৈরি করা হয়েছে পাঞ্জাব রেজিমেন্টের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘাতক কম্যান্ডোদের। যে ‘লিমিটেড এরিয়া অপারেশনে’র ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে তাতে আঘাত হানার সবথেকে বড় দায়িত্বটি থাকবে এ কম্যান্ডোদের ওপরে। ইতিমধ্যেই গলওয়ানে ফিঙ্গার ফোর থেকে ফিঙ্গার এইট পর্যন্ত এলাকায় চীনা সেনার গতিবিধি বেড়েছে অনেকটা। তার জেরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনে নিত্যদিনের টহলদারি বন্ধে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় সেনা।
ওদিকে গালওয়ানে সংঘর্ষে মৃত ভারতীয় সেনাকর্মীদের লাশে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত ছিল, এছাড়াও তাদের বেশিরভাগের দেহের একাধিক হাড় ভাঙা অবস্থায় ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের আঘাত করা হয়েছিল। সূত্র : দি ইউএস সান, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

Show all comments
  • MD Zafar Hossain ২৩ জুন, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 0
    The basic tenet of Indian foreign policy is malice to all neighbour and friendship to none.India is now isolated and encircled India's hegimonial attitude swallowed Sikim,Kashmir,Hydrabad &many other sovereign political entities It is high time India gave up destructive foreign policy.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৩ জুন, ২০২০, ৯:৪৫ এএম says : 0
    India must be Twenty part soon as possible. INSALLAH.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ