পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় মা ও দুই শিশু হত্যার পলাতক আসামি প্রকৌশলী রকিব উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হন্য হয়ে খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আর তাকে না পাওয়া গেলে ওই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করাও সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ঘটনার পর থেকেই তাকে খোঁজা হচ্ছে। এছাড়াও মামলা দায়েরর পর পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে অভিযান চালিয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করেও তার অবস্থান সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের একাধিক টিমও তার সন্ধানে মাঠে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রকিব উদ্দিনের স্বজনরাও তার সন্ধানে বিভিন্ন এলাকায় খুঁজাখোঁজি করছেন। তারাও কোথাও তার সন্ধান পান নাই।
জানা গেছে, গত ১২ ফেব্রæয়ারি সর্বশেষ দক্ষিণখান এলাকায় ছিলেন তিনি। ওই দিন বিটিসিএলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রকিব উদ্দিন আহমেদ সর্বশেষ তার এক সহকর্মী ও বাসার মালিকের সাথে কথাও বলেছিলেন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। পরে ১৪ ফেব্রæয়ারি বিকেলে দক্ষিণখান থানার প্রেমবাগান রোডস্থ কেসি স্কুলের পেছনের ৮৩৮ নম্বর বাসা থেকে তার স্ত্রী মুন্নী বেগম (৩৭), তাদের ছেলে ফারহান ভুঁইয়া (১২) ও মেয়ে লাইবা ভূঁইয়া (৪) লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে ময়না তদন্ত করে চিকিৎসকরা জানান, তিন থেকে চার দিন আগে তাদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মা মুন্নীকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। এছাড়াও দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করা হয়। এছাড়াও লাশ তিনটির উপরিভাগ বেশি পচনশীল ছিল। এদিকে এ ঘটনায় মুন্নীর ভাই বাদি হয়ে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলাও দায়ের করেন। ওই মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে রকিব উদ্দিনকে।
এদিকে, র্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি নিহত মুন্নী ও পলাতক রকিব উদ্দিনের স্বজনরাও তার সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন, কোথায় গেছেন? তা গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ বলতে পারেননি।
গতকাল সন্ধ্যায় নিহত মুন্নী বেগমের ভাই মুন্না রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে রকিব উদ্দিনের সন্ধানে তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখোঁজি করছেন। বিশেষ করে রকিব উদ্দিনের স্বজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা সন্ধান করছেন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ধারাবাহিকতায় গতকাল রকিব উদ্দিনের ছোট বোনের বাড়িতে অবস্থান করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আজ (গতকাল) আমরা উত্তরা এলাকায় রকিব উদ্দিনের ছোট বোনের বাড়িতে আসছি। সেখানে এসে তাদের সাথে কথা বলছি এবং রকিবের যত জায়গায় যাতায়াত ছিল সব জায়গায় আমরা খুঁজ নিচ্ছি। এছাড়াও রকিব উদ্দিনের স্বজনরাও আমাদের সাথে খুঁজাখোঁজি করছেন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমার বোনের বিয়ের পর থেকে বকির উদ্দিনের সাথে আমাদের কোনো ঝামেলা হয়নি। এমনকি আমার বোনও কখনো ঝামেলার কথা আমাদের বলে নাই। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাসে ৬০ লাখ টাকা ঋণ আছে; এমন তথ্য আমাদের জানিয়েছে রকিব উদ্দিন। তবে তা সমাধান করার আশ্বাসও দেওয়া হয়ছিল পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তারপরও এমন ঘটনা কেন ঘটানো হয়েছে তা বুঝা যাচ্ছে না।
চিরকূটের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনার হাতের লেখা আমি কখনো দেখি নাই। তবে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। উনার (রকিব উদ্দিন) অফিসের লেখার সাথে মিলিয়ে দেখলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
চিরকূটের ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, এটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত হতে এক্সপাটদের দ্বারস্ত হতে হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ঘটনাস্থল থেকে একটি ডায়রি উদ্ধার করা করে পুলিশ। ওই ডায়রিতে ৬০ লাখ টাকা ঋণের কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও তার স্ত্রী-সন্তানরা যাতে কারো ওপর বোঝা না হয় এজন্য তাদের তিনি হত্যা করেছেন। এমনকি নিজেকে কোনো এক রেল লাইনের পাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যাবে বলে লিখা রয়েছে ওই ডায়রিতে।
পলাতক রকিব উদ্দিন আহমদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাতশালা এলাকায়। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে রাজধানীর দক্ষিণখান প্রেমবাগান রোডস্থ কেসি স্কুলের পেছনের ৮৩৮ নম্বর বাসায় বসবাস করছিলেন।
ক্যাসিনোতে কোটি টাকা খুইয়েছেন রকিব:
প্রকৌশলী রকিব উদ্দিন আহমেদ অনলাইনে ক্যাসিনো খেলায় প্রায় কোটি টাকা খুইয়েছেন একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্রমতে, ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পর গত ডিসেম্বরে একবার রকিব উদ্দিন নিখোঁজ হন। সেই সময় তিনি বাসায় মোবাইল ফোনটি রেখে যান। তখন তার ফোনে অনেকেই ফোন করে পাওনা টাকার কথা বলছিল। মূলত সেই সময়ই পরিবারের সদস্যরা তার ঋণের কথা জানতে পারেন। তবে ওইসব টাকা তিনি ক্যাসিনো ব্যবসায় খুইয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে , নিখোঁজ হওয়ার পর কুমিল্লার সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে বাসায় ফিরে আনা হয়। পরে তিনি কেন নিখোঁজ হয়েছিলেন জানতে চাইলে রকিব উদ্দিন বলেছিলেন, বাড়িওয়ালি (ডলি বেগম) তাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। রকিবের নোটবুকেও ডলি বেগমের নামে কিছু কথা লেখা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।