Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফের চলন্ত বাসে ধর্ষণ খুন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের ক্ষত না শুকাতেই ধামরাইয়ে যাত্রীবাহি বাসে এক নারী শ্রমিককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর পৃথক দুটি স্থানে তিনটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, গত শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১৯ বছর বয়সী এক নারী শ্রমিককে ধামরাই এলাকায় একটি যাত্রীবাহি বাসে তুলে দেন তার মা। পোশাক কারখানায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে উঠা মেয়েটি সন্ধ্যা পরও বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। অনেক খোঁজাখুজির পরও তার সন্ধান মেলেনি। পরে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা রাতে কাওয়ালীপাড়া-বালিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশদিয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন। পরে সড়কের পাশে হিজলী খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের একটি ঝোপে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। ধামরাইয়ের কাওয়ালীপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আবু সাঈদ জানান, মৃতের গলায় আঘাতের দাগ রয়েছে। তাকে বাসের ভিতরে ধর্ষনের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা জানান, এ ঘটনায় ফিরোজ ওরফে সোহেল (৩০) নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোহলে রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানা এলাকার আমানত খানের ছেলে। সে ধামরাইয় উপজেলার জেঠাইল গ্রামে শশুর বাড়ি থেকে কালামপুর এলাকার প্রতিক সিরামিক্স কারখানার শ্রমিকবাহী বাসের চালক। কাওয়ালীপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রাসেল মোল্লা জানান, রাতেই ওই শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় লাশের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এছাড়া নিহতের নারীর পড়নের কামিজ ছেড়া অবস্থায় পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

এদিকে গত শুক্রবার রাজধানী ভাটারা থানায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান জানান, ভিকটিমের মা বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ভাটারা এলাকায় বাবা-মার সাথে বসবাসকারী ১১ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হন। পরে শুক্রবার সকালে ফাসেরটেকের একটি রাস্তার পাশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাকে পরীক্ষা করে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানান ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। তবে নির্যাতিতা শিশুর মার বরাত দিয়ে ওসি মোক্তারুজ্জামান জানান, শিশুটিকে ১৫/১৬ বছরের ছেলে ধর্ষণ করেছে। তবে তাকে গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। এছাড়া রাজধানীর রামপুরা এলাকায় এক সাথে দুই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় মুশফিক আলম নামের এক বাবুর্চিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রামপুরা থানার এসআই আক্কারুজ্জামান মুন্সি জানান, শুক্রবার রাতে মুশফিক আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে দুটি মামলা করেন ভুক্তভোগী দুই তরুণী। পরে রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ভুক্তভোগী দুই তরুণীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, ওই দুই তরুণী রামপুরা এলাকায় একটি মেসে থাকেন। রান্নাবান্না করে মেসের লোকজনকে খাওয়ানোর কাজ করেন বাবুর্চি মুশফিক আলম। ওই দুই তরুণীও তার কাছেই খাওয়া-দাওয়া করতেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী ওই বাসায় খেতে গেলে জোর করে তাকে ধর্ষণ করেন মুশফিক। একইভাবে চলতি মাসের প্রথম দিন ১৮ বছরের তরুণীটিও ওই বাবুর্চির ধর্ষণের শিকার হন। এছাড়া ওই তরুণী এর আগেও একাধিকবার ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হন বলে জানিয়েছেন। গত রাতে ওই দুই তরুণী একত্রিত হয়ে রামপুরা থানায় মুশফিকের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে রতন (১৮) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতার হওয়া রতন রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা শিশু ধর্ষণের মূলহোতা বলে জানান র‌্যাব র‌্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান।

রূপগঞ্জে শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : রূপগঞ্জে ৯ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে দুই দিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তারাব পৌরসভার গন্ধর্বপুর এলাকায়।
ধর্ষিতার পিতার অভিযোগ থেকে জানা যায়, তার মেয়ে গন্ধর্বপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত কয়েকদিন আগে গন্ধর্বপুর এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিব তার মেয়ের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নেয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গন্ধর্বপুর স্ট্যান্ডে তার মেয়ে ধারের টাকা ফেরত আনতে যায়। টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তৌসিব, রূপসী এলাকার তানভীর ও সোহাগ এবং কর্নগোপ এলাকার আফজাল তার মেয়েকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
পরে রূপসী এলাকার একটি বাড়িতে ও কর্নগোপ এলাকার একটি বাড়িতে তারা দুই দিন আটকে রেখে ১৫ বন্ধু মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকায় ধর্ষিতাকে ফেলে রেখে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকে মৌচাক থেকে উদ্ধার করে।
রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন রফিকুল হক জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ধর্ষণকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

Show all comments
  • Md Sajib Hossain ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ২:৫৬ এএম says : 0
    কোন একদিন শুনবো আমাদের দেশ ধর্ষিত হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Ibrahim Hasnat ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ২:৫৬ এএম says : 0
    আরেক জন মজনু খুজা শুরু করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা। আর মিডিয়া প্রস্তুত থাকুন সরকারের নির্দেশের আর আমরা আশায় আছি আরেকটি মজনু নাটক দেখার জন্য
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ismail ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
    ক্ষত বিক্ষত বাংলাদেশ কি ধর্ষন এর রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে না কি?
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mokaddas Ali ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
    না থামছেই না,মনে হচ্ছে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে ঘুম,খুন,ধর্ষণ, অর্থ কেলেঙ্কারি সহ যতো অসামাজিক কর্মকাডের।
    Total Reply(0) Reply
  • Nozir ahmed ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:৪৩ এএম says : 0
    কোনো একদিন শোনা যাবে ........কেও এই রকম ধর্ষণ করে ফেলেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ