মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে অস্ট্রেলিয়ার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল। মার্কিন মহাকাশ সংস্থার নাসার উপগ্রহে চিত্রে এবার ধরা পড়ল অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী দাবানলের ছবি। গতবছর নভেম্বর মাস থেকে জ্বলছে নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়ার বনাঞ্চল। ক্রমেই তা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এর মাঝেই জানা গেল এই ভয়াবহ দাবানলের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বন্যপ্রাণীদেরও। ঝলসে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি পশু-পাখির।
সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিধ্বংসী দাবানলের জেরে পুড়ে গিয়েছে প্রায় কয়েক লাখ একর জমি। ভস্মীভূত হয়েছে প্রায় দু’শোরও বেশি বাড়ি। কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি। গত বুধবারই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিস্থিতির জেরে নিউ সাউথ ওয়েলসে সপ্তাহব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রশাসন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদদের গত বৃহস্পতিবার দেয়া তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বর থেকে এযাবৎকাল প্রায় ৫০ কোটি স্তন্যপায়ী, পাখি ও সরীসৃপের মৃত্যু হয়েছে দাবানলে ঝলসে। যার সংখ্যা আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা।
সেই তথ্য থেকেই জানা গিয়েছে, দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে প্রায় হাজার হাজার কোয়ালা। প্রায় বিলুপ্তির তালিকায় থাকা এই প্রজাতির বেশিরভাগেরই বাস ছিল অস্ট্রেলিয়ার বনাঞ্চল। যা বর্তমানে দাবানলে ছারখার হয়ে গিয়েছে। মূলত, নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্য-দক্ষিণ উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত প্রায় আট হাজার কোয়ালার মৃত্যু হয়েছে। যা এই অঞ্চলের কোয়ালা-সংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং একাধিক ছবিতেও দেখা গিয়েছে যে, অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে দাবানলের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করছে ক্যাঙারুরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য প্রাণী পুড়ে মরে গিয়েছে। কাকাতুয়া-সহ অন্য অনেক পাখির মৃতদেহও গাছের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। বিধ্বংসী দাবানল থেকে বাঁচতে যেসব কৃষক আগুন থেকে বাঁচার জন্য অন্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, পরে বাড়ি ফিরে তারা দেখেন পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ফসলি জমি এবং গৃহপালিত প্রাণীরা।
পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের পরিবেশবিদ মার্ক গ্রাহামের কথায়, দাবানলের জেরে সৃষ্টি হওয়া তীব্র গরম এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুনে ঝলসে মারা গিয়েছে অসংখ্য প্রাণী। বিশাল এলাকা এখনও জ্বলছে। যাতে ভবিষ্যতে মৃত বন্যপ্রাণীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
গত নভেম্বর থেকে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়ার বিস্তৃর্ণ জঙ্গল, সবথেকে খারাপ অবস্থা নিউ সাউথ ওয়েলসের, ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড থেকেও, নাসার উপগ্রহ চিত্রেও ধরা পড়ল দাবানলের ভয়াবহতা। বনভূমি ও ঘর-বাড়ি সহ সবই গ্রাস করে নিচ্ছে এই আগুন। সিডনির কাছেও চলে এসেছে আগুনের লেলিহান শিখা। ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বর্ষবরণের রাতেই দাবানলের কারণে ঘরছাড়া হয়েছেন হাজার হাজার অস্ট্রেলিয়বাসী। উপকূলীয় এলাকায় উদ্বাস্তুদের মতই দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
এই নিয়ে তৃতীয়বার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে হল প্রশাসনকে। গত ছয় সপ্তাহ ধরে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলকে কাছ থেকে দেখেছেন সিজনির ফটোজার্নালিস্ট ম্যাট অ্যাবোট। নতুন বছরের শুরুতেই দাবালনের এই ভয়াবহতা আগে দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছেন তিনি।
নাসার উপগ্রহেও ধরা পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের ভয়ঙ্কর ছবি। এই দাবানল পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তন ডেকে আনছে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। পৃথিবীতে বাড়ছে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ।
নাসার ২৬টি উপগ্রহ প্রায় ৯০০টি ছবি পাঠিয়েছে। গতবছর ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তারপর এই দাবানল। ইতিমধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসের ১০ হাজার স্করায় মাইল এলাকা জ্বলছে বলে নাসার উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে সেই ধোঁয়া ছড়াচ্ছে নিউজিল্যান্ডের দিকেও। সূত্র: বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।