Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্ট্রেলিয়ার গোলাপি হ্রদের রহস্যভেদ!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:১৫ পিএম

অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বিখ্যাত হ্রদ লেক হিলিয়া। এই হ্রদের পানির রং নীল নয়, গোলাপি। অনেকটা বাব্‌লগামের রঙের মতো। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মিডল আইল্যান্ডে এটি অবস্থিত। এই লেকের পানি গোলাপি রঙের কেন, এ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। দীর্ঘ দিন ধরে বিজ্ঞানীরা এর কারণ খুঁজে চলেছেন। অনেকেই ভাবতেন, লেক হিলিয়ারে লবণের পরিমাণ বেশি হওয়াতেই তার পানির রং নীল নয়। অনেকের আবার মত ছিল, ওই লেকে মাইক্রোঅ্যালগি বেশি থাকাতেই তার রং গোলাপি। তবে সম্প্রতি সে রহস্য ভেদ হয়েছে।

২০১৫-তে মিডল আইল্যান্ডের লেক হিলিয়ারের পানির রং নিয়ে গবেষণা শুরু করেন এক্সট্রিম মাইক্রোবায়োমি প্রজেক্ট (এক্সএমপি)-এর এক দল বিজ্ঞানী। সে হ্রদের পানি কেন গাঢ় গোলাপি, তার সন্ধান শুরু করেন তারা। বিজ্ঞানীরা প্রথমে ভেবেছিলেন, লেক হিলিয়ারের আশপাশের লবণাক্ত পরিবেশে বেশ কিছু এক্সট্রিমোফিল থাকার জন্য হয়তো তার পানির এমন রং। এক্সট্রিমোফিল হল তীব্র প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারা কিছু আণুবিক্ষনিক জীব।

মিডল আইল্যান্ডে গিয়ে বিজ্ঞানীরা প্রথমেই লেক হিলিয়ারের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। এর পর এক্সট্রিমোফিলগুলোর ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন তারা। পরীক্ষার পর বিজ্ঞানীরা দেখেন, লেক হিলিয়ারের পানিতে রয়েছে দশ ধরনের ব্যাকটিরিয়া, যারা লবণাক্ত পরিবেশে থাকতে ভালবাসে। তা ছাড়াও এখানে রয়েছে, বিভিন্ন প্রজাতির ডানালিয়েলা অ্যালগি বা শ্যাওলা। যার বেশির ভাগের রংই সবুজের পরিবর্তে গোলাপি বা লাল রঙের।

তবে এ ধরনের শ্যাওলার রঙের জন্যই লেক হিলিয়ারের পানির রং গোলাপি নয়! এর থেকে অবাক করে দেওয়া তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ওই নমুনায় যে সব ব্যাকটিরিয়া পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ছিল এক বিশেষ ধরনের ব্যাকটিরিয়াও। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, লেক হিলিয়ারের পানির যে নমুনা সংগ্রহ করেছেন তারা, তার ৩৩ শতাংশ জুড়ে ছিল স্যালিনিব্যাকটের রাবার নামের এক বিশেষ ব্যাকটিরিয়া। এক্সএমপি-র বিজ্ঞানীদের দাবি, কোনও শ্যাওলা নয়, বরং স্যালিনিব্যাকটের রাবার নামের ওই বিশেষ ব্যাকটেরিয়ার কারণেই লেক হিলিয়ারের পানির রং গোলাপি।

তবে নীল হোক বা গোলাপি, লেক হিলিয়ারের পানিতে গা ভাসাতে অনেকেরই উৎসাহের শেষ নেই। এই হ্রদের পানিতে লবণের পরিমাণ এতটাই বেশি যে, ডেড সি-এর মতো এখানেও ভাসিয়ে থাকা যায়, ডোবার কোনও আশঙ্কা নেই। তবে এক্কেবারে ছোট্ট এই দ্বীপে পৌঁছনো খুব একটা সহজ নয়। বোট বা হেলিকপ্টারে যাওয়া গেলেও দ্বীপটি বেশি দুর্গম। এ কারণে এখানে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্ট্রেলিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ