Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্তি পাচ্ছেন রাশিয়ান গুপ্তচর মারিয়া বুতিনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৫১ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের জেলে বন্দি রাশিয়ান গুপ্তচর মারিয়া বুতিনা। অবশেষে তিনি ফ্লোরিডার জেল থেকে শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছেন। এরপরই তার ফিরে যাওয়ার কথা নিজের দেশে। অভিযোগ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে তিনি উচ্চ পর্যায়ের রিপাবলিকানদের সঙ্গে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন। গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের তদন্ত চলছে তিন বছর। এর মধ্যে তিনিই একজন মাত্র রাশিয়ান, যাকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়া হয়েছে। মারিয়া বুতিনা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রাইফেলস এসোসিয়েশনকে একটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

এর ফলে ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার এক ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

মারিয়া বুতিনার দাবি, তিনি শুধুই রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ককে ভাল করার জন্য চেষ্টা করছিলেন। একজন রিপাবলিকান অপারেটিভের সঙ্গে অবস্থান করে তিনি ওয়াশিংটনে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার দাবি, রাশিয়ার কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই।

ডিসেম্বরে ৩০ বছর বয়সী বুতিনা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন যে, তিনি অবৈধ কাজ করেছেন। অনিবন্ধিত একজন বিদেশী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। এ জন্য তাকে দেড় বছরের জেল দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক সময় তিনি জেল খেটেছেন। ওদিকে মস্কো থেকে তাকে মুক্ত করে দিতে তার ছবিসব ‘ফ্রি মারিয়া’ স্লোগানে একটি প্রচারণা চালায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেন তার আইনজীবী। তবে মারিয়ার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেন নি ওই আইনজীবী। তিনি শুধু এটুকু বলেছেন, মারিয়া ফিরে যাবেন রাশিয়া। রাশিয়ার মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, তিনি কয়েকদিনের মধ্যেই ফিরে যাবেন।

তিনি মুক্তি পান বা দেশে ফিরে যান না কেন এক্ষেত্রে একটি বিষয় অস্পষ্টই থেকে যাচ্ছে। তা হলো, তিনি কি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলের ভিতরে অনুপ্রবেশ করার মতো গোয়েন্দা অপারেটিভের অবস্থানে ছিলেন কিনা। নাকি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির মধ্যে সহযোগিতার চ্যানেল সৃষ্টি করেছে কেউ তাকে ব্যবহার করে, যারা রাশিয়ার হস্তক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।

জেল থেকে মারিয়া এনপিআর রেডিওকে বলেছেন, তিনি আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছিলেন। এ সময়ে তিনি শুধুই ‘সিভিল কূটনীতিতে’ যুক্ত হতে চেয়েছেন। তার ভাষায়, আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালবাসি। এই আমেরিকাকেও ভালবাসি। দুটি দেশকেই আমি ভালবাসি। এ কথা কখনোই লুকাবো না। আমি শান্তি প্রতিষ্ঠা করছিলাম।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে রাশিয়ার খুব ক্ষুদ্র একটি অস্ত্র অধিকার বিষয়ক গ্রুপ ও ন্যাশনাল রাইফেল এসোসিয়েশনের (এনআরএ) মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একটি সেতুবন্ধনের চেষ্টা করছিলেন মারিয়া। এই এনআরএ হলো রিপাবলিকানপন্থি আমেরিকার অস্ত্র বিষয়ক লবি। মারিয়ার ওই গ্রুপটি এনআরএ’র নেতাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিল রাশিয়ায়। সেখানে এনআরএ ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকদের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন মারিয়া ও মস্কোতে তার প্রভাবশালী স্পন্সর আলেকজান্দার তোরশিন। সেখানে প্রভাবশালী রিপাবলিকানদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুপ্তচর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ