Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সন্তানকে খুনের পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

ঘটনাস্থল রাজধানীর স্বামীবাগ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৪ এএম, ২৮ আগস্ট, ২০১৯

রাজধানীর স্বামীবাগ এলাকায় এক বছর বয়সের শিশুসন্তানকে বিষপানে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এক মা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অচেতন অবস্থায় মা ও সন্তানকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় শিশুর মাকে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। নিহত শিশুর নাম জান্নাত ও মায়ের নাম সোনিয়া আক্তার (৩০)। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

সোনিয়া আক্তার খুলনার রূপসা উপজেলার আইজগতি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। আনোয়ার সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত। স্ত্রী-সন্তানসহ স্বামীবাগ মিনি স্বপ্ন সুপারশপ ভবনের তৃতীয় তলায় থাকেন তিনি। জান্নাত তাদের একমাত্র সন্তান। সোনিয়া আক্তারের স্বামী আনোয়ার হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, পারিবারিক তেমন কোনো কলহ নেই। তবে আমার স্ত্রী সোনিয়া মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন।

গেন্ডারিয়া থানার ওসি (তদন্ত) শেখ আমিনুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গেন্ডারিয়ার স্বামীবাগ এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং শিশুটিকে বিষ (কেরি ট্যাবলেট) খাওয়ানোর আলামত সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিক অবস্থায় মনে হয়েছে ওই মহিলা মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। এক বছর বয়সী মেয়েকে বিষ বা মাছের ওষুধ জাতীয় কিছু তরল খাবার খাওয়ায় এবং নিজেও পান করে।

তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে সোনিয়া আক্তার মোবাইল ফোনে তার স্বামী আনোয়ার হোসেনকে জানায়, মেয়ে কেমন করছে। খবর পেয়ে দ্রুত বাসায় ফিরে স্ত্রী-মেয়েকে অসুস্থ দেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অসুস্থ সোনিয়ার চিকিৎসা চলছে, কিছুটা সুস্থ হলেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আনোয়ার হোসেন আরো জানান, গত সোমবার রাতে ডিউটিতে ছিলেন তিনি। তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এ জন্য দুই থেকে তিন দিন আগে ছোট ভাই সাদ্দামকে ফোন করে তার স্ত্রীসহ তাদের বাসায় দেখা করতে বলেন সোনিয়া। কিন্তু সাদ্দাম জানান, তিনি এখন আসতে পারবেন না, কিছুদিন পর আসবেন বলে জানান। এ জন্য ভাইয়ের ওপর রাগ করেন সোনিয়া। এ কারণে সকালে তিনি নিজে কীটনাশক জাতীয় কিছু পান করেন এবং শিশুসন্তান জান্নাতকেও পান করান। পরে নিজেই ফোন করে তাকে (আনোয়ারকে) বাসায় আসতে বলেন। বেশ কিছুদিন আগে তাকে অপারেশন করা হয় এবং এর আগে সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা হয়। এ জন্য সোনিয়া প্রায় সময়ই মানসিকভাবে অসুস্থ থাকত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, দ্রুত বাসায় গিয়ে দেখি, দু’জনই ফ্লোরে পড়ে রয়েছে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, শিশুটির লাশ ঢামেকের মর্গে রাখা হয়েছে। শিশুর মা সোনিয়া আক্তার ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ