পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানকে এক সাথে কাজ করার একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মাহাথির মোহাম্মাদের মধ্যে। অন্যদিকে তাদের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান। সরকারি সফরে বর্তমানে তুরস্কে অবস্থান করছেন মাহাথির মোহাম্মদ। আঙ্কারার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে রজব তাইয়েব এরদোগানের একান্ত বৈঠকের পর দুই নেতা হাজির হন যৌথ সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, বিবৃতি দেয়া খুব সহজ। কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। তাই মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানের একসাথে কাজ করা জরুরি। এরদোগানের সাথে সুর মিলিয়ে মাহাথির মোহাম্মাদ বলেন, মুসলিম উম্মাহকে অন্যদের অধীনস্থতা থেকে মুক্ত করতে হবে। এর জন্য মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ঐক্য অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে এই তিনটি দেশকে (তুরস্ক, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়া)। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এ কারণেই আমি এই তিনটি মুসলিম দেশের পারস্পারিক ঐক্য ও সহযোগিতার ওপর জোর দিচ্ছি। অন্তত এই তিনটি দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত যাতে আমরা প্রতিরক্ষাসহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যুতে জোর গলায় কথা বলতে পারি। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যুতে তুরস্কের ভুমিকার প্রশংসা করে মাহাথির বলেন, আপনি যদি অতীতের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন তুরস্ক মুসলিম উম্মাহর ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যদিও বিভিন্ন কারণে বুঝতে পারছেন যে, মুসলিম বিশ্বে এখন এমন কোন একক শক্তি নেই যারা আমাদের রক্ষা করতে পারবে; কিন্তু আজীবন এমনটা থাকবে সেটি ভাবার কোন কারণ নেই। এদিকে তুরস্ক ও মালয়েশিয়ার এই চিন্তাকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের দ্য নিউজ অনলাইন জানিয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি টুইটারে মাহাথির ও এরদোগানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। কোরেশি লিখেছেন, মুসলিম রেনেসাঁ ও মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ ও প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও পাকিস্তানের এক সাথে কাজ করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এ বছরের জানুয়ারিতে তুরস্ক সফর করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সে সময় দেশটির বিভিন্ন ইস্যুতে একসাথে কাজ করার বিষয়ে সমঝোতা হয়। এবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময়ে আলোচনায় এলো মুসলিম বিশ্বের এই তিনটি দেশের এক সাথে কাজ করার বিষয়টি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তারা মনে করছেন মুসলিম বিশ্বের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দেশ তিনটি এক সাথে কাজ করলে তা হবে ঐতিহাসিক একটি পদক্ষেপ। আঙ্কারার মিডল ইস্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হুসেইন বাগচি বলেন, ইসলামী বিশ্বের দরকার একটি রেনেসাঁ। প্রধানমন্ত্রী মাহাথির একটি সঠিক প্রস্তাব করেছেন এই তিন দেশের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার বিষয়ে। এর ফলে মুসলিম বিশ্ব বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষার মতো খাতগুলোতে এগিয়ে যেতে পারবে। তিনি বলেন, এই তিনটি দেশই আরব বিশ্বের বাইরের। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাহাথির মোহাম্মদ মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কোন আরব দেশের কথা উল্লেখ করেননি। ইস্তাম্বুল ভিত্তিক সেন্টার ফর ইসলাম এন্ড গেøাবাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর এ আল-আরিয়ান এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, এই তিন নেতাই অনেক দিন ধরে গণতন্ত্র ও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে কাজ করছেন। তিনি বলেন, বিশ্ব যখন অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে তখন মাহাথিরের তুরস্ক সফর ও এই প্রস্তাব কার্যকর কিছু পদক্ষেপের সূচনা করতে পারে। চারদিনের সরকারি সফরে বর্তমানে তুরস্ক অবস্থান করছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মাহাথির মোহাম্মাদ। আনাদোলু, টিআরটি ওয়ার্ল্ড, স্ট্রেইট টাইমস, ডেইলি সাবাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।