পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিচারকের এজলাসে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ঘটনায় কুমিল্লার আদালত জুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আদালতের সবকটি প্রবেশদ্বারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশির পরই ভেতরে যেতে পারছেন বিচারপ্রার্থী, সাধারণ মানুষ এমনকি আইনজীবীরাও। হত্যাকান্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গতকাল মঙ্গলবার ঘটনাস্থল এজলাস পরিদর্শন করেছে।
আদালতের সার্বিক চিত্র স্বাভাবিক থাকলেও বিচারপ্রার্থী লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। আবার আইনজীবীরাও বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঘাতক হাসানকে আসামি করে সোমবার রাতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘাতক হাসানকে আটক করা বাঙ্গরা থানার এএসআই ফিরোজ আহাম্মেদ। আর মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলা গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমারকে।
এদিকে সোমবার রাতে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে ঘাতক হাসান জানায়, আপন ফুফাতো ভাই ফারুককে হত্যার উদ্দেশ্যেই কৌশলে ধারালো ছোরা বহন করে আদালতে আসে সে। তাকে মনোহরগঞ্জের হাজী করিম হত্যা মামলায় আসামি করার জন্য ফারুকই দায়ী। আর তাই ওই হত্যা মামলায় চার্জশীটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই ফারুককে হত্যার চেষ্টা করে আসছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ফারুককে হাতের নাগালে না পাওয়ায় সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। সোমবার করিম হত্যা মামলায় হাজিরার ধার্য্য তারিখ ছিল। এদিন ফারুক আদালতে হাজিরা দিতে আসবে নিশ্চিত হওয়ার পর বাড়িতে থাকা একটি পুরাতন ছুরি শান দিয়ে কৌশলে বহন করে আদালতে নিয়ে আসেন হাসান। সকাল থেকেই আদালতের সামনে ছোরা নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন সে। কিন্তু ফারুকের দেখা মেলেনি। মামলার কাজ শুরু হওয়ার আগে আদালতে ফারুককে খুঁজে পায়নি হাসান। মামলার শুনানিতে হাজিরের ডাক পড়ার পর এজলাসের ভেতর ফারুককে দেখে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন হাসান এবং সাথে থাকা ছোরা বের করে একাধিকবার ফারুকের শরীরে আঘাত করেন। করিম হত্যার ঘটনায় জড়িত না থাকা সত্তে¡ও ফারুক তার সাক্ষ্যে হাসানের নাম বলায় এবং পরে আসামি হওয়ার ক্ষোভ থেকে ফারুককে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় তিন সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান কর্মকর্তা পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন ইনকিলাবকে জানান, দ্রুত এ হত্যাকান্ডের তদন্তের কাজ শেষ হবে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এটি একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা, এ ঘটনার পর থেকে আদালতের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, এ ঘটনায় পুলিশের কোন গাফিলতি আছে কিনা বিষয়টিসহ সার্বিক দিকগুলো খতিয়ে দেখা হবে।
কুমিল্লার কোর্ট পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, স্বল্পসংখ্যক পুলিশ দিয়ে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই কঠিন, তাছাড়া পুলিশ আদালতের অভ্যন্তরে নিরস্ত্র অবস্থায় দায়িত্ব পালন করে থাকে। ঘটনার সময় এজলাসের সামনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ থাকলেও নিরস্ত্র থাকায় কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি বলে দাবি কোর্ট পরিদর্শকের।
কুমিল্লা বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ আব্দুল্লাহ পিন্টু বলেন, আদালতের বিচারিক এজলাসে এমন হত্যাকান্ডের ঘটনা একেবারেই বিরল। ঘটনাটি নিয়ে আমরা শঙ্কিত। তিনি বলেন, আদালতে বিচার ব্যবস্থায় একজন মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনা ঘটানোর বিষয়ে আগে থেকেই অবগত হওয়ার সুযোগ নেই। তাই আদালত পাড়ায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।