Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মৃত্যুর আগে বর্ণালী ওরা আমাকে লাশ বানাবে

ভোলা জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

মা আমাকে আর জোর করে ঢাকায় পাঠিওনা, ওরা আমাকে মেরে লাশ বানিয়ে পাঠাবে। আমার স্বামী প্রতিদিন আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। একা বাসায় কাঁদতে কাঁদতে চোখের জলও শুকিয়ে গেছে আমার। প্রতিদিন বলে তুই মর। তুই মরলে আমি তোর চেয়ে সুন্দর মেয়ে পাব। তোর বাবা-মা আমার বাবার সম্পদ দেখে তোকে আমার কাছে বিয়ে দিয়েছে। আমি অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করলে তাতে তোর কি?’

এভাবেই মেয়েকে প্রতিদিনের নির্যাতনের বর্ননা সংবাদকর্মীদের সামনে দিয়েছেন নিহত বর্ণালী মজুমদার বন্যার মা শিখা রানী সেন। তার জানান বর্নালী প্রায় তার স্বামীর পরকিয়া ও অনেক রাতেই মদপান করে মাতাল অবস্থায় তার স্বামী মিথুন বাসায় আসত। এ নিয়ে প্রায়ই বর্নালী ও তার স্বামী মিথুনের সাথে ঝগড়া হত। বর্নালী ছিল খুবই মেধাবী। সে এসএসসি, এইচ এসসি তে জিপিএ ৫ ঢাক বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পায় কিন্তু তার স্বামী তাকে ভর্তি করতে দেয় নাই।

সূত্র জানায়, ৫ বছর পূর্বে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের বাবুল মজুমদারের মেধাবী মেয়ে বর্ণালী মজুমদারের সঙ্গে পৌর ৬নং ওয়ার্ডের চুনি লাল দের ছেলে মিথুন দে ওরফে রাহুলের পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায় প্রতিনিয়ত মিথুন ও মিথুনের পরিবার নিহত বর্ণালীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করত। নির্যাতন করে কয়েকবার বাসা থেকেও বের করে দেয়।
পরে বর্ণালী ঢাকায় স্বামীর বাসা থেকে চলে আসে বোরহানউদ্দিনে। বর্ণালী স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বোরহানউদ্দিনে ফিরে আসলে তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি বর্ণালীর মা-বাবাকে অনুরোধ করলে তাকে অনেকটা জোর করেই ঢাকার বনশ্রীতে স্বামীর বাসায় পাঠায়।

পাঠানোর সময় বর্ণালী তার মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজনের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আর ঢাকা যাব না। আমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে লাশ বানিয়ে তোমাদের কাছে পাঠাবে। শেষ পর্যন্ত বর্ণালীর কথাই সত্য প্রমাণিত হলো। লাশ হয়েই বাবার ভিটায় ফিরলেন বর্ণালী মজুমদার বন্যা!
এদিকে বর্ণালীর মৃতের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে তার স্বামী মিথুন লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে রহস্যময়ভাবে আগেই রামপুরা থানায় গিয়ে আটকের নাটক করে বলে অভিযোগ করে বর্ণালীর পরিবার।

এ ব্যাপারে এসআই দীপককে বর্ণালীর মেয়ে ও কাজের মেয়ে তার বাসায় কেন মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তারা কোথায় থাকবে? আপনার কোনো কিছু জানার থাকলে আমার কাছে আসেন। এ ব্যাপারে ওসি আ. কুদ্দুস ফকিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কী কারণে বর্ণালীর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেব।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ