পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমেরিকা থেকে এসে মা ও বড় বোনকে খুন করেন মাসুদুর রহমান। খুনের পরদিনই ফিরে যান আমেরিকায়। তিন কোটি টাকা দামের একটি বাড়ি দখলের জন্যই বড় বোন আর গর্ভধারিনীকে খুন করেন মাসুদ। আলোচিত এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হারুন অর রশিদ মুন্না (৩৯) ও তার গাড়িচালক মো. মাহফুজ (২৮) এমন তথ্য জানিয়েছেন। আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা বলেছেন, আমেরিকা প্রবাসী মাসুদুর রহমান দেশে ফিরে তার মা ও বোনকে হত্যার মিশনে অংশ নিয়েছেন। হত্যার পর মাসুদ খুনি চক্রের অন্য সদস্যদের কোরআন ছুঁয়ে শপথ করায়, যাতে এই ঘটনা প্রকাশ না করে।
শনিবার সন্ধ্যায় দুই আসামি মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালতে জবানবন্দি দেন। শুক্রবার রাতে দুইজনকে নগরীর টাইগারপাস এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছরের ১৫ জুলাই খুলশী থানার আমবাগান এলাকার মেহের মঞ্জিল নামে একটি ভবনের পানির ট্যাংক থেকে ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা (৬৭) ও তার ৯৪ বছর বয়সী মা মনোয়ারা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মামলার আইও ইলিয়াছ খান বলেন, ২০১৪ সালের ১৪ মার্চ মাসুদুর রহমান আমেরিকায় যান। তাকে আমেরিকায় পাঠানোর সব ব্যবস্থা করেন বড় বোন মেহেরুন্নেসা। কিন্তু আমেরিকায় যাওয়ার আগে মেহেরুন্নেসা মাসুদুরের কাছ থেকে তার সম্পত্তি নিয়ে নেয়। মাসুদুর প্রথমে বিয়ে করেন এক পাকিস্তানি নাগরিককে। কিন্তু মেহেরুন্নেসার পছন্দ না হওয়ায় তাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়। পরে মাসুদুর আবার খুলশীতে তাদের বাড়ি ফেরতের পাঁয়তারা করেন। সব মিলিয়ে বোনের ওপর ক্ষোভ থেকে তাকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয়। বোনকে খুন করতে গিয়ে মাকেও মেরে ফেলে, এমন তথ্যও পুলিশের কাছে রয়েছে বলে জানান আইও।
হত্যাকান্ডের আটদিন পর মেহেরুন্নেসার ভাইপো ও মনোয়ারার নাতি মুশফিকুর রহমানকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছিল। মুশফিক মনোয়ারার মেজ ছেলে মতিউর রহমানের ছেলে। ২০০৪ সালে মতিউর মারা যাওয়ার পর মুশফিকের মাকে বিয়ে করেন তার সেজ চাচা মোস্তাফিজুর রহমান। হত্যাকান্ডের পর এই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর মেহেরুন্নেসা ও মনোয়ারার কাছে বড় হন মুশফিক। কিন্তু তাদের অমতে বিয়ে করায় তাকে মেহের মঞ্জিল ছাড়তে হয়েছিল। এ নিয়ে দাদি-ফুপুর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি।
আইও ইলিয়াছ বলেন, মুশফিক বখে গিয়েছিল। এজন্য মেহেরুন্নেসা তার মাকে দায়ী করেছিলেন। কারণ মা মুশফিককে রেখে দেবরকে বিয়ে করেছিলেন। হত্যাকান্ডের আগে মুশফিকের মাকে মারধর করেন মেহেরুন্নেসা। মুশফিক এ বিষয়ে আমেরিকায় চাচা মাসুদুরের কাছে বিচার দিয়েছিল। মাসুদুরও এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে মুশফিকুরকে উসকানি দিয়ে ফুফুর উপর ক্ষুব্ধ করে।
এই ঘটনায় মো. মুসলিম (২৫), মেহেরুন্নেসার প্রতিবেশী মো. মাসুদ রানা (৩৯) ও বিএনপি নেতা মো. শাহাবউদ্দিন ওরফে সাবু ওরফে মুছাকে (৩৭) গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালতে দেওয়া মুন্না ও মাহফুজের জবানবন্দিতে এসেছে- শাহাবউদ্দিন সাবু’র বাসায় বসে ছয়জন মিলে হত্যার পরিকল্পনা হয়, যার মধ্যে মাসুদুর ও মুশফিকও ছিল। মাসুদুরের পরিকল্পনা ছিল- মায়ের কাছ থেকে খুলশীর ওই বাড়ির দানপত্র আদায় করা। তারপর শাহাবউদ্দিন সাবু’র মাধ্যমে সেটি তিন কোটি টাকায় বিক্রির কথা ছিল। মা ও বোনকে খুন করতে পারলে সেটি সহজে দখলের পরিকল্পনা থেকে তারা এই ঘটনা ঘটায়।
হত্যাকান্ডের ওই রাতে সাড়ে ১২টার দিকে মাসুদুর নিজেই বাসার দরজায় টোকা দিলে মেহেরুন্নেসা দরজা খুলে দেয়। এ সময় মেহেরুন্নেসা বলেন, তুই বিদেশ থেকে হঠাৎ দেশে কেন?’ এ সময় মাসুদুর মেহেরুন্নেসার কাছ থেকে সম্পত্তির দুটি দলিলে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মেহেরুন্নেসা স্বাক্ষর দিতে না চাইলে তাকে গলাটিপে ধরে এবং মুশফিক পিঁড়ি দিয়ে তার ফুফুর মাথায় আঘাত করে।
সবাই মিলে তাকে হত্যা করে লাশ ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর মেহেরুন্নেসার মা মনোয়ারাকে হত্যার জন্য মাসুদুরের নেতৃত্বে সবাই তার কক্ষে ঢোকে। মাহফুজসহ কয়েকজন মাকে হত্যা না করার অনুরোধ করলে মাসুদুর বলে- এই বুড়িকে বাঁচিয়ে রেখে লাভ নেই। এরপর মনোয়ারার হাত বেঁধে তাকে সিঁড়ির কাছে আনার পর তিনি চিৎকার দিলে শাহাবউদ্দিন সাবু তার পেটে লাথি মারে। মাসুদ তার গলা টিপে ধরার জন্য মুসলিমকে (পরে গ্রেফতার) নির্দেশ দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মনোয়ারার লাশও ট্যাংকের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।