Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মিনি ম্যারাথনের নামে প্রতারণা!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪১ পিএম

বিগ বাংলা রানের মিনি ম্যারাথনে অংশ নিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছে দেশের বেশ ক’জন খেলোয়াড়। যাদের কেউ ফুটবলার, কেউবা অ্যাথলেট। জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় মিরোনা খাতুন, অ্যাথলেট আবু সালাম, সুমি আক্তার, পাপিয়া আক্তার কিংবা আনোয়ারুল ইসলাম- এরা সবাই এখন বঞ্চনার শিকার। বিগ বাংলা রানের মিনি ম্যারাথনে অংশ নিয়ে কেউ হয়েছিলেন চ্যাম্পিয়ন, কেউবা রানারআপ। কিন্তু পুরস্কারের অর্থ জুটেনি আজো। সম্প্রতি উত্তরাস্থ বিগ বাংলা রানের অফিসও এখন আর নেই বলেও অভিযোগ করেন তারা। প্রতিবছর ঘটা করে মিনি ম্যারাথন বা হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করে বিগ বাংলা রান। কিন্তু স্থানীয় অ্যাথলেটদের অর্থ তারা পরিশোধ করে না। বরং ব্ল্যাংক চেক দিয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আবিদুর রহমান শিমু। কিন্তু ব্যাংকে ধর্ণা দিলেও মেলে না অর্থ। এভাবেই বছরের পর বছর প্রতারণা করে যাচ্ছেন লন্ডন প্রবাসী শিমু।

২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে মিনি ম্যারাথন করছেন শিমু। ঢাকায় এসে প্রতি বছরেই ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রতিযোগিদের হাজার হাজার ডলার পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। চিত্র নায়ক ও নায়িকাদের নিয়ে ম্যারাথন শুরু করেন। কিন্তু বিদেশী অ্যাথলেটরা অর্থপুরস্কার পেলেও স্থানীয়দের ক্ষেত্রে লবডঙ্কা। বছরের পর বছর এভাবেই চালিয়ে যাচ্ছেন শিমু। অর্থ পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের অ্যাথলেটরা নৌবাহিনীর ফুটবলার ও অ্যাথলেট মিরোনা মিরো বলেন, ‘২০১৩ সালে ঢাকায় শুরু হয় মিনি ম্যারাথন। বেশ ক’বার অংশ নিয়েছি। কিন্তু পুরস্কারের অর্থ পেয়েছি মাত্র দু’বার। ২০১৬ সালে তৃতীয় হয়েছিলাম। ৩০০ মার্কিন ডলার জিতেছিলাম। কিন্তু আজও টাকা পাইনি। যদিও ২০১৬ সালের অর্থ পুরস্কারের চেক গত বছরের ১১ নভেম্বর দেয় (আইএফআইসি বনানী শাখা, চেক নং সিএজে ১৪৫০৭৪০ এবং একাউন্ট নাম্বার ১০৯৬৬৩৯৬০৮০০১)। আর বলে দেন, এবারের দ্বিতীয় স্থানের জন্য ৫০০ ডলারের চেক এক মাস পর দেয়া হবে। কিন্তু উত্তরার ৬ নং সেক্টরে গিয়ে দেখি তাদের অফিস তালা মারা। তারা অফিসও পরিবর্তন করে ফেলেছে। এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।’ একই বঞ্চনার শিকার সেনাবাহিনীর আবু সালাম, সুমি আক্তার, পাপিয়া আক্তার ও আনোয়ারুল ইসলামও। ল্যান্স কর্পোরাল আবু সালাম বলেন, ‘২০১৬ সালে প্রথম হয়ে পাঁচশ’ মার্কিন ডলার জিতেছিলাম। ওই বছর বিদেশীরা টাকা পেয়ে চলেও গেছে। কিন্তু আজ, কাল করে দু’বছর পার হয়ে গেছে। আমাকে দেয়া ব্লাংক চেক আজও ক্যাশ হয়নি। ব্যাংকে গিয়ে দেখি তাদের একাউন্টে কোন টাকা নেই।’ এভাবেই নাকি প্রত্যেক বছর দেশে এসে পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ঘটা করে মিনি ম্যারাথনের আয়োজন করে বিগ বাংলা রান। কিন্তু দেশী ক্রীড়াবিদদের অর্থ তারা পরিশোধ করে না। আবু সালামের কথায়, ‘এরা প্রতারক চক্র। প্রত্যেক বিশাল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।’ বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক সচিব এএসএম আলী কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডরেশনের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের আয়োজন তারা (বিগ বাংলা রান) করতে পারে না। এদের অনেকেই প্রতারক হয়। ঘটনা সত্যি হলে, এদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হওয়া উচিত। এবার থেকে আমরাও জানিয়ে দিব যে, ফেডারেশনের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম থেকে যেন সবাই বিরত থাকে। পরবর্তীতে তারা বাংলাদেশে এসে এমন কার্যক্রম চালাতে গেলে সবাই যেন আমাদেরকে জানায়, সেই নির্দেশই থাকলো। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লন্ডন থেকে শিমু যুগান্তরকে বলেন, ‘আবু সালামের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে আপনাকে ফোন দেবে।’ তবে আবু সালাম বলেন, ‘শিমু বলেছেন, ৫ মার্চ ঢাকায় এসে আমার সঙ্গে বসবেন ৭ মার্চ। ব্যাস, এতটুকুই।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রীড়া


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ