Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ বন্যা, রাস্তায় কুমির-সাপ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:৫৭ পিএম

অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় পথঘাটগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে এবং কুমির ও সাপ রাস্তায় চলে এসেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বাড়িঘর, স্কুল ও বিমানবন্দর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং হাজার হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। খবর এএফপি।

সোমবার অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স উপদ্রুত এলাকায় বালুর ব্যাগ সরবরাহ করেছে, উভচর মালবাহী যানবাহন মোতায়েন করছে ও আটকা পড়া বাসিন্দাদের ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করেছে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতে কুইন্সল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্ম-মণ্ডলীয় উত্তরাঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে সাধারণত ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তবে এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। রবিবার কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের পথ খুলে দেয়। বন্যার পানির স্রোতের গতিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলছেন কর্তৃপক্ষ। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত টাউন্সভিলে গাড়িগুলো পানিতে প্রায় ডুবে গেছে।

স্থানীয় বেতারের সাংবাদিক গাবি এলগুড বলেন, ‘জীবনে আমরা বন্যায় এতো বেশি পানি দেখিনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখানে এলে আপনি মনে করতে পারেন যে এর চেয়ে বেশি পানি বাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়নি।’

ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্থানীয়দের আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণে অন্ধকারেই দিনাতিপাত করার পাশাপাশি কুমির ও জলাশয়গুলোর অন্যান্য হিংস্র সরীসৃপ প্রাণী থেকেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে। বন্যা উপদ্রুত টাউন্সভিলে বেশ কয়েকটি লোনাপানির কুমির দেখা গেছে।

জরুরি সংস্থাগুলো ভয়াবহ এই দুর্যোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছে না। শুধু গতরাতেই জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ১৮ জনকে পানি থেকে উদ্ধার করেছে। এরা বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল।

রাজ্যপ্রধান আনাস্তাসিয়া প্যালাজজুক বলেন, ১ হাজার ১শ’ জনের বেশি জরুরি সহায়তা চেয়েছে। টাউন্সভিলের প্রায় ৪শ’ বাসিন্দা নিকটস্থ লাভারাক সেনা ব্যারাকে আশ্রয় নিয়েছে। রেড ক্রসও দুর্গতদের সহায়তা ও উদ্ধার তৎপরতায় এগিয়ে এসেছে।

স্থানীয় কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার স্কট উইন্টার বলেন, ‘রাতভর ছোট নৌযানের সাহায্যে মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’

প্যালাজজুক আগামী দিনগুলোতে উপদ্রুত অঞ্চলগুলোর বাসিন্দারা আরো কঠিন সময়ের সম্মুখীন হতে পারেন বলে সতর্ক করেছেন। ভয়াবহ বন্যায় স্কুল ও আদালতগুলো বন্ধ রয়েছে। আরো বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি নদীতে জরুরি সতর্কতা বহাল রাখা হয়েছে।

এরগোনের জরুরি নারী মুখপাত্র এমা অলিভেরি বলেন, ১৬ হাজারের বেশি লোক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় অন্ধকারের মধ্যে রয়েছেন এবং কখন পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারছেন না।

আবহাওয়া ব্যুরো জানায়, টাউন্সভিল থেকে সামান্য উত্তরে ইনগাম শহরে সোমবার সকালে কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ১০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১শ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ২০ হাজার বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যেতে পারে। প্যারাজজুক বলেন, ‘২০ বছরের মধ্যে না, ১শ’ বছরে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেয়া দেয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এর আগে এ ধরনের বন্যা দেখিনি।’

আবহাওয়া ব্যুরোর মুখপাত্র এ্যাডাম ব্লাজাক বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাছাড়া বৃষ্টিপাত কমে আসার পরও বন্যার পানি নেমে যেতে কিছুটা সময় লাগবে।

কোন কোন এলাকায় মাত্র এক সপ্তাহেই এক বছরের সমপরিমান বৃষ্টি হয়েছে। বছরে এই অঞ্চলে গড়ে ৮০ ইঞ্চি বৃষ্টি হয়। তবে কোন কোন শহরে ইতোমধ্যেই এর চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

 

 



 

Show all comments
  • jack ali ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:১১ পিএম says : 0
    All these happenings --because of our Grave Sins---
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্ট্রেলিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ