Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্সে সংঘর্ষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ফ্রান্সজুড়ে আবারও সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারীরা। রাজধানী প্যারিসসহ গোটা দেশে টানা নবম সপ্তাহের মতো এ বিক্ষোভ চলছে। প্যারিসসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে শনিবার বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশত আহত ও কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। রাজধানী প্যারিসে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। শনিবার ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ৮৪ হাজার বিক্ষোভকারী মাঠে নামেন। গত সপ্তাহের তুলনায় শনিবার অনেক বেশি বিক্ষোভকারীকে রাস্তায় দেখা যায়। গত নভেম্বরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে গোটা দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলনের সূত্রপাত হলেও ধীরে ধীরে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে তালিকায় যুক্ত হয় জীবনযাপনের ব্যয় বৃদ্ধিসহ অন্য অনেক চাহিদার। এতে সরবারবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয়। রাজধানী প্যারিসে হাজার হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগেও বিক্ষোভের দিনগুলোতে রাস্তায় পুলিশ সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেন, বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৫ জানুয়ারি একটি জাতীয় বিতর্কের আয়োজন করা হবে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি লাখ মানুষের দাবিকে অগ্রাহ্য করছেন। অন্যদিকে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। আয়ারল্যান্ডের আধাসরকারি স¤প্রচারমাধ্যম আরটিই জানিয়েছে, ফ্রান্স দেশজুড়ে মোতায়েন নিয়োগ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্যকে। শুধুমাত্র রাজধানী প্যারিসেই রয়েছে পাঁচ হাজার রায়ট পুলিশ। আন্দোলনের সময় পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। পুলিশও কাদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। ডি লা কনকর্ড চত্বরে পুলিশ বড় বড় ব্যারিকেড স্থাপন করেছে। সেখানে পাঠানো হয়েছে সশস্ত্রযান। অন্যদিকে শঁজ এলিজে এলাকায় রয়েছেন কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা। প্যারিসের উত্তরের একটি শহরে জড়ো হয়েছিলেন হাজারখানেক আন্দোলনকারী। অপর আরেকটি শহরে দেখা গেছে বারোশোর মতো আন্দোলনকারীকে রাস্তায় জমায়েত হতে। স্থানীয় পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বল বিয়ারিং পাওয়া গেছে। এদিকে একজন সাবেক বক্সারের ঘুষিতে দুই পুলিশ সদস্যের আহত হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্টনার বলেছেন, আন্দোলনকারীরা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন তারা জানেন, সহিংসতা হবে। সুতরাং পরিণতির জন্য তারা দায়ী থাকবেন। ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ (ইয়োলো)। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে। এই আন্দোলনের কোনও ঘোষিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া তাদের কর্মসূচিতে উত্তাল হতে শুরু করে প্যারিসসহ ফ্রান্সের বড় বড় সব শহর। জ্বালানি তেলের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে সেইসব মানুষ, অর্থনৈতিক চাপে যারা এমনিতেই পর্যদুস্ত। বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ