Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি

সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস ম্যাখোঁর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ফ্রান্সে অর্থনৈতিক সংকট এবং জ্বালানি তেলের ওপর অতিরিক্ত করারোপের প্রতিবাদে করা সরকার বিরোধী বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তবে তিনি আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তিনি সর্বনিম্ন মজুরি বাড়ানো ও কর কমানো এবং জ্বালানি তেলের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রুশ সংবাদ সংস্থা তাস।
সোমবার রাতে টেলিভিশনে প্রচারিত জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ম্যাখোঁ বলেন, ‘প্রথমে আমি দেশের জন্য অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছি। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে যে কেউ তার কর্মের মাধ্যমে মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে। সেক্ষেত্রে আমরা ভীষণ মন্থর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে জরুরি সংস্কার আনতে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেবে সরকার।
বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সংঘটিত সহিংস কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্সের এ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা যে ক্ষোভ দেখিয়েছেন তা সত্যিই অনেক গভীর ও অনেকে ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় যৌক্তিক।’ তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভ বন্ধ করে আপনারা সবাই শান্ত থাকুন। আমি বিশ্বাস করি, একত্রে খুব শিগগিরি আমরা এ সংকট নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে পারব।’
ম্যাখোঁ এ সময় ২০১৯ সাল থেকে সর্বনিম্ন মজুরি ১০০ ইউরো বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন যে, এখন থেকে অল্প আয়ের পেনশনভোগীদের জন্য পরিকল্পিত শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব বাতিল করা হলো, অতিরিক্ত সময়ের মজুরির ক্ষেত্রে আর কোনো শুল্ক নেয়া হবে না ও মালিক পক্ষ বছর শেষে কর্মচারীদেরকে শুল্কমুক্ত বোনাস দেবেন।
তবে বিক্ষোভকারীরা ধনী ব্যক্তিদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের যে প্রস্তাব দেন তা নাকচ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের দুর্বল করবে। বরং আমাদের আরও চাকরির সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
সর্বনিম্ন মজুরি শতকরা সাত শতাংশ হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর এই অতিরিক্ত মজুরি মালিক পক্ষের পরিবর্তে সরকারিভাবে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ফ্রান্সভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে দেশটির সরকার বিষয়ক মন্ত্রী অলিভার ডাসসপ্ট বলেন, সব মিলিয়ে এই সব কিছুর জন্য ব্যয় হবে কমপক্ষে আট থেকে দশ বিলিয়ন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ফাইন টিউনিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং দেখার চেষ্টা করছি এই অর্থায়ন কিভাবে করা যায়।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর থেকে ফ্রান্সে আন্দোলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে সে আন্দোলন সরকারবিরোধী তথা পুঁজিবাদ বিরোধী ‘হলুদ জ্যাকেট’ আন্দোলনে রূপ নেয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববিহীন ইয়েলো ভেস্ট বিক্ষোভকারীরা সরকারের কাছে ন্যুনতম পেনশন, কর ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন, অবসরের বয়সসীমা কমানোসহ ৪০টিরও বেশি দাবি তুলে ধরে। গত চার সপ্তাহে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসসহ গোটা দেশ সহিংস বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে গেছে। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক দশকের মধ্যে ফ্রান্সে এটিই সবচেয়ে বড় সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা। গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীর নজিরবিহীন সংঘর্ষ হয় যার ফলে অন্তত চারজন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হয়। গ্রেফতার করা হয় সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে। সূত্র: বিবিসি, টাইম ও পার্স টুডে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ