নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক খেলোয়াড়রা। কী যোগ্যতা থাকলে এই পুরস্কার মিলবে? তা জানতে চেয়েছেন তারা। এবার একসঙ্গে চার বছরের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের পুরস্কারের জন্য সম্প্রতি ৪৯ জন সাবেক ক্রীড়াবিদ ও সংগঠককে মনোনীত করা হয়েছে। পরে মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, গত ২৯ আগষ্ট অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রীপরিষদ কমিটি ৪৯ জনের নাম চুড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর এই তালিকা প্রজ্ঞাপন আকারে খুব শিঘ্রই প্রকাশ করা হবে। সুত্রটি আরো জানায়, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই ওসমানী মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী মনোনীতদের হাতে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তুলে দিতে পারেন।
বরাবরের মতো এবারও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রীড়াঙ্গনের অনেকের মতে এবারও যোগ্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন এই পুরস্কার থেকে। বিশেষ করে অ্যাথলেটিক্স ও ভারোত্তোলনের মনোনয়ন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের দুই সাবেক ক্রীড়াবিদ। অ্যাথলেটিক্সে চার বছরে জাতীয় পুরস্কারের জন্য ৭ জন সাবেক অ্যাথলেটকে মনোনয়ন দেয়া হলেও অবহেলিত হয়েছেন ১৯৭৮ ব্যাংকক এশিয়ান গেমসে দেশের পক্ষে অংশ নেয়া সাবেক স্প্রিন্টার মো: ইকবাল হোসেন। এছাড়া ভারোত্তোলনে দেশসেরা সাবেক দুই নারী ভারোত্তোলক মোল্লা সাবিরা সুলতানা ও শাহরিয়া সুলতানা সূচিকে পাশ কাটানো হয়েছে। এ দু’জনকে বাদ নিয়ে এমন একজনকে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, যার দেশের ভারোত্তোলনে উল্লেখ করার মতো কোন অর্জন নেই। ফলে এই মনোনয়ন নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাবেক অ্যাথলেট মো: ইকবাল হোসেন বলেন,‘দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে ব্যাংকক এশিয়ান গেমসে প্রথমবার অংশ নেয় বাংলাদেশ। ওই আসরে অ্যাথলেট হিসেবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করি আমি। শুধু তাই নয়, ১৯৭৬ থেকে ‘৮৫ সাল পর্যন্ত টানা জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে অংশ নিয়ে ৯টি স্বর্ণসহ অসংখ্য রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক জিতেছি। দেশের পক্ষে খেলোয়াড় হিসেবে অসংখ্যবার বিদেশে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক পুরস্কারের পাশাপাশি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির শ্রেষ্ঠ অ্যাথলেটের পুরস্কারও পেয়েছি। পরে কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আসরের জাতীয় অ্যাথলেটিক্স দলের দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনে নির্বাহী সদস্য পদে থেকে কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি যোগ করেন,‘কিন্তু দূর্ভাগ্য আমার, আসন্ন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাইনি। অথচ যাদের নাম শুনছি তাদের মধ্যে বেশ ক’জন রয়েছেন যারা যোগ্যতায় আমার চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছেন। আমি আসলে বুঝতে পারছি না কী যোগ্যতা থাকলে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়া যায়?
এদিকে ভারোত্তোলনের সাবেক ৩ খেলোয়াড় এবার জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেও বঞ্চিত হয়েছে দেশসেরা দুই নারী ভারোত্তোলক শাহরিয়া সুলতানা সূচি ও মোল্লা সাবিরা সুলতানা। তাদের পাশ কাটিয়ে মনোনয়ন পেয়েছেন সরকারী শারিরীক শিক্ষা কলেজের জেসমিন আক্তার। যেখানে সূচি টানা ১৩ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণজয়ী। একবার আন্তর্জাতিক আসরের সেরা। সেখানে জেসমিনের অর্জন হাতে গোনা ক’টি পদক মাত্র। তার সেরা সাফল্য ২০১২ সালে নেপালে প্রথম সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জপদক জয়। অথচ এই আসরে সূচি জিতেছিলেন স্বর্ণপদক। মোল্লা সাবিরারও অর্জন অনেক। তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আসরে সাফল্য পেয়ে দেশের মান বাড়িয়েছেন। জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন না পেয়ে হতাশ সাবেক ভারোত্তোলক ও বর্তমানে কোচ শাহরিয়া সুলতানা সূচি। তিনি বলেন,‘কিছুই বলার নেই। যারা মনোনীতদের তালিকাটি তৈরী করেছেন, তারা কোন যোগ্যতা বিচার করেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। কী যোগ্যতায় জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়া হয় তাও আমি জানিনা।’ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্তদের দেয়া হয় ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, সনদপত্র, নগদ ৫০ হাজার টাকা ও একটি ব্লেজার
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।