Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চল্লিশ বছর ধরে বিএনপির পথচলা

মহিউদ্দিন খান মোহন | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেশের দুই প্রধান দলের একটি বিএনপি চল্লিশ পেরিয়ে একচল্লিশে পা দিল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পদচারণা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল বিএনপির। নানা ঘাত-প্রতিঘাত, বাধা-বিপত্তি, চড়াই-উৎরাই পার হয়ে সে দলটি একচল্লিশ বছরে পদার্পন করল। এ চল্লিশ বছরের মধ্যে দলটি রাষ্ট্রক্ষমতায় যেমন ছিল, তেমনি বিরোধী দলেও ছিল এবং আছে। এ চার দশকে দলটি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। আজ সময় এসেছে দীর্ঘ চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ দল বিএনপিকে নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনার। দেশবাসীর যে প্রত্যাশা বিএনপির কাছে ছিল, তার কতটুকু পূরণ করতে পেরেছে, কিংবা জনগণের আস্থা কতটুকু অর্জন করতে পেরেছে, তার নিকাশ করার সময় এখন অবশ্যই হয়েছে। চল্লিশ বছর একটি রাজনৈতিক দলের জন্য কম সময় নয়।
বিএনপির আজকের অবস্থা এবং অবস্থান নিয়ে কথা বলতে গেলে দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন কথা অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। এটা অনস্বীকার্য যে, দেশের এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জন্ম হয়েছিল বিএনপির। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে মর্মান্তিক এক হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছিল। মধ্য আগস্ট এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সংঘটিত ঘটনাবলী বাংলাদেশে জন্ম দিয়েছিল চরম অস্থিরতা। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন থাকবে কীনা তা নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। ওইসব ঘটনাবলী থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য। সে সময় ঘটনা পরম্পরায় রাষ্ট্রক্ষমতার পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসা সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান বিষয়টি বেশ গভীরভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। মূলত. ওইসব ঘটনাবলীই তাকে একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল গঠনে তাগিদ দেয়।
বিরুদ্ধবাদীরা ‘বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে’ বলে কটাক্ষ করে থাকে। এর দ্বারা তারা জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি প্রতিষ্ঠার কথাই বলে থাকেন। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেই দলটি গঠন করেছিলেন। তবে, তাতে দেশ বা জাতির কোনো মহাসর্বনাশ হয়েছে, এমনটি নয়। বরং ওই সময়ে বিএনপির মতো একটি জাতীয় ঐক্যের প্ল্যাটফরম গঠন ছিল সময়ের দাবি। সে সময় দেশে যে বিশাল রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা ঐতিহাসিক সত্য। আজ অনেককে গলা উঁচু করে কথা বলতে শোনা যায়। কিন্তু পচাত্তরের পনেরই আগস্টের পর তারা রহস্যময় নিরবতা পালন করেছিলেন। একটি অংশ নেতা শেখ মুজিবের লাশ সিঁড়িতে ফেলে রেখে বঙ্গভবনে ছুটে গিয়েছিলেন মন্ত্রিত্বের শপথ নিতে। আরেকটি অংশ চোখ-মুখ বন্ধ করে লুকিয়ে পড়েছিলেন। মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর বাকশাল সরকারই বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। খন্দকার মোশতাক কর্তৃক সামরিক শাসন জারির ফলে দেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এমনিতেই একদলীয় শাসন জারি থাকায় দেশে দ্বিতীয় কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না, সামরিক শাসনের কারেণ তাও বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৭৬ সালে যখন দেশে পুনরায় বহুদলীয় রাজনীতি চালু করা হয় এবং বাকশাল আইনে বিলুপ্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে পুনরুজ্জীবনের সুযোগ দেয়া হয় তখন একে একে দলগুলো তাদের কর্মকান্ড শুরু করে। প্রথমে ঘরোয়া রাজনীতি এবং পরবর্তীতে উন্মুক্ত রাজনীতি শরু হয়। জিয়াউর রহমান দেখলেন যে, বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর একটিরও এককভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়া বা রাষ্ট্র পরিচালনার সক্ষমতা নেই। আর সদ্য ক্ষমতাচ্যুত বাকশালের প্রতি মানুষের কোনো সহানুভ‚তি বা সমর্থন নেই। একটি সার্বভৌম দেশের জন্য এ পরিস্থিতি মোটেই সুখককর নয়। রাজনৈতিক এ শূন্যতার সুযোগ নিয়ে দেশি বিদেশি অশুভচক্র যে কোনো সময় যে কোনো অঘটন ঘটিয়ে দিয়ে পারে, যা ডেকে আনতে পারে জাতীয় বিপর্যয়।
জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর লোক হলেও এবং উত্তরাধিকার সূত্রে সামরিক শাসনের দন্ড হাতে পেলেও মনেপ্রাণে ছিলেন গণতান্ত্রিক। তাই তিনি দ্রæততম সময়ের মধ্যে দেশে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবন এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালু করার উদ্যোগ নেন। তিনি অনুভব করলেন যে, বিভিন্ন ধারা-উপধারায় বিভক্ত জাতিকে একটি রাজনৈতিক ছাতার নিচে না আনতে পারলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা যেমন কঠিন হয়ে পড়বে, তেমনি জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের আশাও হয়ে যাবে সুদূরপরাহত। কীভাবে দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র চালু করা যায়, সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে কীভাবে জনগণের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেয়া যায়, জিয়াউর রহমান সে ভাবনায় মনোনিবেশ করলেন। তিনি সেই সময়ের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করলেন। ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে বঙ্গভবনে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের উপায় উদ্ভাবনে পরামর্শ চাইলেন। ওই বৈঠকে তৎকালীন ন্যাপ চেয়ারম্যান (পরবর্তীতে সিনিয়র মন্ত্রী) মশিয়ূর রহমান যাদুমিয়া, সদ্য পুনর্জন্ম নেয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক উকিল, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মনি সিংহ, ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অংশ নিয়েছিলেন। বলা যায়, ওই বৈঠক থেকেই জিয়াউর রহমান তার করণীয় সম্বন্ধে একটি ধারণা পেয়েছিলেন। যার প্রতিফলন হিসেবে মশিয়ূর রহমান যাদু মিয়াকে তার পাশে দেখা গেছে।
জানুয়ারিতেই এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আসন্ন। আর সে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে নতুন রাজনৈতিক পোলারাইজেশন শুরু হয়। এরই মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল, যা জাগদল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তিতে ন্যাপ, জাগদল, ইউপিপি, মুসলিম লীগ, লেবার পার্টি ও তফসীলি জাতি ফেডারেশন সমন্বয়ে গঠিত হয় জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এবং জিয়াউর রহমান সে ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বণ্ডীতা করেন। প্রায় এক কোটি ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক ঐক্য জোট মনোনীত প্রার্থী জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে পরাজিত করে জিয়াউর রহমান সরাসরি জনগণের ভোটে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। এরপরই তিনি একটি রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেন। আর সে রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার জন্য আহ্বান জানান দেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষ ও রাজনীতিকদের। বিপুল সাড়া পান তিনি জনগণের কাছ থেকে। আর সে বিপুল জনসমর্থনকে পুজি করে জিয়াউর রহমান সেনানায়ক ও সামরিক শাসক থেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এ যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর। আত্মপ্রকাশ করে দেশের নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। সংক্ষেপে এই হলো বিএনপি গঠনের ইতিহাস।
বিএনপি আত্মপ্রকাশের পাঁচ মাসের মাথায় দেশে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওটা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নতুন রাজনৈতিক দল বিএনপি দুই শতাধিক আসনে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বলা বাহুল্য যে, ওই সময়ে একক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। এর প্রধান কারণ ছিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তা। তাঁর সততা এবং দেশপ্রেম তাঁকে এ দেশের মানুষের হৃদয় সিংহাসনে আসন করে দিয়েছিল। বিএনপি ও জিয়াউর রহমান সমার্থক। তখনও যেমন, এখনও তেমন। এখনও জিয়াউর রহমানের দল হিসেবেই বিএনপি এদেশের গণমানুষের প্রিয় দল হিসেবে সমাদৃত।
প্রতিষ্ঠার পর চল্লিশ বছর পথ হেঁটেছে বিএনপি। এ চার দশকে দলটিকে অনেক প্রতিক‚ল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিএনপির ওপর প্রথম ঝাপ্টাটি আসে ১৯৮১ সালের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আকস্মিক মৃত্যুর পর। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্যের হাতে তিনি নিহত হওয়ার পর অনেকেই বিএনপির টিকে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, রাষ্ট্রক্ষমতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে গঠিত দল বিএনপি বেশি দিন টিকবে না। বিশ্ব ইতিহাসের দিকে তাকালে এমন নজির বিরলও নয়। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত শাসকদের পতনের পর তাদের সৃষ্ট রাজনৈতিক দলও বিলীন হয়ে গেছে। এর কারণটি কারোরই অবোধ্য থাকার কথা নয়। রাষ্ট্রক্ষমতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দল গঠন করলেও তারা জনগণকে কোনো কালজয়ী রাজনৈতিক দর্শন দিতে পারেনি। ফলে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে তাদের বিদায়ের পর তাদের সৃষ্ট রাজনৈতিক দলেরও যবনিকাপাত ঘটেছে। এক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি শুধু একটি রাজনৈতিক দলই প্রতিষ্ঠা করেননি, সে সাথে জনগণকে দু’টি মূল্যবান উপহার দিয়েছিলেন। এক. তিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের আত্মপরিচয় উদঘাটন করেছিলেন তার ঐতিহাসিক ‘বাংলাদেশী জতিীয়তাবাদ’ তত্তে¡র মাধ্যমে। দুই. তিনি ‘উন্নয়নের রাজনীতি’ নামে এক নতুন রাজনৈতিক চিন্তাধারা জনগণের মধে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। সে উন্নয়নের রাজনীতির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে তাঁর উনিশ দফা কর্মসূচিতে। বাংলাদেশের আজ যে উন্নতি অগ্রগতি তা সূচিত হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাতে। তাঁর অঙ্কিত উন্নয়ন ম্যাপরুট ধরেই পরবর্তী সরকারগুলোকে পথ চলতে হচ্ছে।
আজ চল্লিশ বছর পরে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি টিকে থাকবে কীনা। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিএনপির দৃশ্যমান সাংগঠনিক দুরবস্থায় এ প্রশ্ন ওঠা অবান্তর নয়। পাঠক লক্ষ্য করুন, এখানে সাংগঠনিক দুরবস্থার কথা বলা হলো, জনসমর্থনের অভাবের কথা নয়। বিএনপি যে এখনও একটি বিপুল জনপ্রিয় দল তা কাউকে বলে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু সাংগঠনিকভাকে দলটি অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় পৌঁছেছে। কিন্তু কেন এমন অবস্থা? কেউ কেউ হয়তো সরকারের দমননীতির কথা বলবেন। হ্যাঁ, এটা ঠিক বর্তমান সরকার মাত্রাতিরিক্ত দমননীতি প্রয়োগ করছে বিএনপির ওপর। তাই বলে দলটি সে দমননীতির বিরুদ্ধে একেবারেই রুখে দাাঁড়াতে পারবে না, এটা কি মেনে নেয়া যায়? বলা বাহুল্য, একশ্রেণির নেতার আত্মস্বার্থপরতা এবং কর্মীদেরকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে না পারা দলটিকে ক্রমশ: দুর্বল করে দিচ্ছে। এটা কে অস্বীকার করবে যে, বিএনপি বর্তমানে চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। এ ধরণের সঙ্কটময় সময়ে দলকে টিকিয়ে রাখতে এবং ইস্পিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে যেটি সবচেয়ে জরুরি, তাহলো নেতাকর্মীদের ঐক্য। কিন্তু বিএনপিতে সে ঐক্য এখন অনেকাংশেই অনুপস্থিত। নেতাদের পারষ্পরিক দ্ব›দ্ব কোন্দল কর্মীদের মধ্যে হতাশার জন্ম দিচ্ছে।
গত চল্লিশ বছরে বিএনপির বিরুদ্ধে হরেক রকম ষড়যন্ত্র হয়েছে। কখনো দলটিকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, কখনো আবার শীর্ষস্থানীয় দু’ দশজন নেতাকে ভাগিয়ে নিয়ে দলটিকে দুর্বল করার চেষ্টাও হয়েছে। শোনা যায়, এখনও সে ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে কোনো কোনো মহল থেকে। প্রসিডেন্ট জিয়ার শাহাদাতের পর যারা ভেবেছিলেন বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তাদের ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে দলটি এখনও ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা নিয়ে টিকে আছে। এ টিকে থাকার পেছনে রয়েছে প্রধান নিয়ামক দলটির প্রতি জনগণের বিপুল আস্থা। তারা এখনও মনে করে বিএনপি তাদেরকে ভালো কিছু দেবে, যেমনটি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। জনগণের সে আস্থা ও বিশ্বাসের মূল্য বিএনপি নেতৃত্বকে দিতে হবে। নিজেদেরকে সুসংগঠিত করে শত প্রতিক‚লতাকে পায়ে দলে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার নিরন্তর সংগ্রামে ব্রতী হতে হবে। জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের যে কথা দলটির নেতাকর্মীরা বক্তৃতায় বলে থাকেন, সে লক্ষ্য পূরণের জন্য হাঁটতে হবে অনেকটা পথ। সে পথ বড়ই কঠিন ও বন্ধুর। সে বন্ধুর পথ চলতে চলতেই একদিন হয়তো দেখা যাবে পূর্বাকাশে নতুন সূর্য আভা ছড়াচ্ছে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন