পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাহাড়ে বাড়ছে অস্ত্রশস্ত্রের ঝনঝনানি। চলছে খুনের বদলে খুন। পার্বত্য জনপদে জানমালের নিরাপত্তার শঙ্কায় দিনাতিপাত করছে নিরীহ বাঙালি ও উপজাতীয় জনসাধারণ। সর্বশেষ গতকাল শনিবার খাগড়াছড়ি শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে গোলাগুলিতে মারা গেছে ৬ জন। সংঘাত সহিংসতার সূচনা হয় পার্বত্য শান্তিচুক্তির পক্ষে-বিপক্ষে পাহাড়ি বিভিন্ন সংগঠনের দুই মেরুতে অবস্থানের প্রেক্ষাপটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাস্তবে বর্তমান সশস্ত্র সংঘাতের নেপথ্যে রয়েছে ভিন্ন কয়েকটি কারণ। এর মূলে প্রথমত রয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য জনসংহতি সমিতি এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউফিডিএফ) বিভিন্ন গ্রুপ ও দলছুট পাহাড়ি গ্রুপগুলোর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। আর এলাকাওয়ারি জোর-জবরদস্তিতে কর্তৃত্ব বা আধিপত্য বিস্তারের পেছনে রয়েছে কথিত ‘টোল কালেকশনে’র নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, একেকটি এলাকা টার্গেট করে নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখা অথবা পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যে দিন দিন মারমুখী লড়াইয়ে লিপ্ত হচ্ছে পাহাড়ি গ্রুপগুলো। ঘটছে হিংসাত্মক ঘটনা। এতে করে বিভিন্ন গ্রুপ ও দলছুট গোষ্ঠির কর্মী-ক্যাডারদের মৃত্যু হচ্ছে শুধু তাই নয়, বরং স্থানীয় জনসাধারণও রেহাই পাচ্ছে না তাদের হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে। নিরীহ মানুষ রয়েছে উভয় সঙ্কটে। জনসংহতি সমিতি ও ইউফিডিএফ’র কয়েকটি গ্রুপ ছাড়াও তাদের অঙ্গ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে পাল্টাপল্টি প্রতিযোগিতা এবং সহিংসতা বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে পার্বত্য জনপদে বসবাসরত ১৩টি ক্ষুদ্র উপজাতি বা নৃগোষ্ঠি এবং অউপজাতি তথা বাঙালি নির্বিশেষে শান্তিপ্রিয় সাধারণ জনগণের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনসংহতি সমিতি এবং ইউফিডিএফ’র বিভিন্ন গ্রুপ পরস্পরের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর প্রতিযোগিতার খেলায় নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করছে। এরজন্যই বাঙালী-উপজাতি নির্বিশেষে পাহাড়ের বাসিন্দাদের কাছ থেকে যথেচ্ছ ‘টোল’ বা বাধ্যতামূলক চাঁদা উসুল করছে। সাধারণ নাগরিকদের জিম্মি করা হচ্ছে অবৈধ অস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখিয়ে। পাহাড়ি গ্রুপগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জোরজবরদস্তিতে চাঁদা, টোল বাবদ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চাঁদার অর্থ দিয়ে বিপুল অংকের তহবিল গড়ে তুলেছে। চাঁদাবাজি নৈরাজ্যের মুখে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি-খামার, পরিবহন, রাস্তাঘাট, সড়ক অবকাঠামো নির্মাণসহ উন্নয়ন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মানুষের জীবন-জীবিকার পথ রুদ্ধ এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। সবচেয়ে সম্ভাবনার বিশাল ক্ষেত্র পর্যটন শিল্প সম্ভাবনা মার খাচ্ছে। বলা বাহুল্য পাহাড়ি সংগঠনগুলো স্থানীয় জনসাধারণের জীবনধারনের কোনো সমস্যা-সঙ্কট, অভাব-অভিযোগ নিয়ে মাঠে আসতে কখনো দেখা যায়না।
সশস্ত্র পাহাড়ি গ্রুপগুলোর দেয়া ‘রেইট’ অনুযায়ী চাঁদা বা কথিত ‘টোল-ট্যাক্স’ না দিয়ে কোনো নাগরিকের বাড়িঘরে থাকা দায়। চাঁদাবাজিতে ওরা প্রধানত টার্গেট করছে বাঙালী পার্বত্যবাসী এবং জুম চাষী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপজাতীয় নাগরিকদের। বাংালীদের পাশাপাশি তংচইঙ্গা, খুমি, চাক, ম্রোং, পাংখো, লুসাই ক্ষুদ্র উপজাতীয়রা চাঁদা টোল পরিশোধে বাধ্য হচ্ছে। বাঁশ, বেত, কাঠ, ছন সংগ্রহ, বেচাকেনা ও পরিবহন, আদা, হলুদ, কলা, ধান, আনারস, লেবু, কমলা, খাদ্যশস্য চাষাবাদ, গবাদিপশু-পাখি বেচাকেনা করা এবং যাবতীয় কৃষিজ দ্রব্য উৎপাদনের পর কৃষকের কাছ থেকে চাঁদা-ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য সশস্ত্র পাহাড়ি গ্রুপগুলোর শক্তি বাড়িয়ে তোলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।