নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মনের গহীনে এখনো জাতীয় দলের খেলার স্বপ্ন লালন করে চলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের একসময়ে সবচেয়ে বড় তারকা মোহাম্মাদ আশরাফুল। ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ক্রিকেট থেকে দীর্ঘ পাঁচ বছর ছিলেন নির্বাসনে। আগামী পরশু শেষ হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ।
কি দুঃসহ সময়-ই না পার করতে হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরির মালিককে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিং এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অপরাধে নিষেধাজ্ঞার খাড়ায় পড়েন একসময়ের দেশসেরা ব্যাটসম্যান। আগামী ১৩ আগস্ট শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে আর কোন বাধা থাকবে না ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। অবশ্য ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট থেকেই ফিরেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে।
আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সুযোগ পেয়ে আবেগে আবøুত আশরাফুল। জানালেন এই দিনটার জন্যেই তার দীর্ঘ প্রতীক্ষার কথা। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেন, ‘২০১৮ সালের ১৮ আগস্টের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিক্ষা করেছি। আমি আমার দোষ স্বীকার করার পর পাঁচ বছরের বেশি পেরিয়ে গেছে। যদিও গত দুই বছর আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছি, কিন্তু এখন জাতীয় দলের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হতে আর কোন বাধা রইল না। আবারও বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলে সেটা হবে আমার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন।’
জাতীয় দলে ফিরতে পারবেন কি পারবেন না, তার ছোট প্রমাণ কিন্তু গত মৌসুমে দিয়েছেন আশরাফুল। প্রথম বছর তেমন ভাল করতে না পারলেও ২০১৭-১৮ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে পাঁচ সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন। কীর্তিই তো! আশরাফুল ছাড়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের যে এক আসরে এমন কীর্তি আছে আর একজনের। দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ মোমেন্টাম ওয়ানডে কাপে ২০১৫-১৬ মৌসুমে একই কীর্তি গড়েন আলভিরো পিটারসেন। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে ২৩টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ৪৭.৬৩ গড়ে রান তুলেছেন আশরাফুল। তবে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। ১৩ ম্যাচে গড় ২১.৮৫, সেঞ্চুরি মাত্র ১টি। সেটা নিজেও মানছেন আশরাফুল, ‘ফেরার পর প্রথম মৌসুমটা তেমন ভাল কাটেনি, তবে ২০১৭-১৮ মৌসুমে বেশ ভাল করেছি। আসন্ন মৌসুমে আরও ভাল করতে চাই।’
ঘরেয়া ক্রিকেটে প্রমাণ করে তবেই যে জাতীয় দলের বার্তা দিতে হবে সেটা ভালো করেই জানেন আশরাফুল, ‘এখন আমি আমার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে দলে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবো। আমি এরইমধ্যে দীর্ঘ একমাসের ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি। ১৫ আগস্টের পর আসন্ন জাতীয় ক্রিকেট লিগের জন্য প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি নেব।’
২০১৪ সালের জুনে বিপিএলের দুর্নীতি বিরোধী ট্রাইব্যুনাল আশরাফুলের উপর ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই সঙ্গে জরিমানা করা হয় ১০ লাখ টাকা। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ডিসিপ্লিনারি প্যানেল শাস্তি কমিয়ে পাঁচ বছরে নামিয়ে আনে। বিসিবি ও আইসিসি তাতে নাখোশ হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পাঁচ বছরই স্থির থাকে। তবে ওই দুই বছর তাকে বিসিবি কিংবা আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমে অংশ নিতে হবে বলে শর্ত আরোপ করা হয়। এর অংশ হিসেবে ২০১৫ সালের বিপিএলে দুর্নীতি বিরোধী অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি, যেখানে তাকে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়ে সচেতন করতে দেখা যায়।
বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তদের মাঝে আজও আশরাফুল জনপ্রিয় একটি নাম। বয়সটাও যে আহমরি হয়েছে তা নয়। গত মাসে পা দিয়েছেন চৌত্রিশে। এই বয়সে এখনো অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাতিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদেরকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে ব্যাটিংয়ের ভাষায় গর্বের লাল-সবুজ জার্সির দাবি জানিয়ে রাখতেই পারেন আশরাফুল।
আশরাফুলের সেই ঘটনাপঞ্জি
৩১ মে, ২০১৩ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে তদন্তে নামে বিসিবি
০৪ জুন, ২০১৩ ২০১৩ বিপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে বহিষ্কার
১৮ জানুয়ারী, ২০১৪ বিপিএল দুর্নীতি দমন ট্রাইবুনালে শুনানি
১৮ জুন, ২০১৪ বিসিবি কর্তৃক ৮ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা
২২ জুলাই, ২০১৪ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আশরাপুলের আপিল
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিসিবির ডিসিপ্লিনারি প্যানেল কর্তৃক শাস্তি কমিয়ে করা হয় ৫ বছর
২১ অক্টোবর, ২০১৪ শস্তি না কমানোর জন্য বিসিবির ব্যর্থ আপিল
১৩ আগস্ট, ২০১৬ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ
১৩ আগস্ট ২০১৮ সব ধরনের ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।