পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কিশোরী তাসফিয়া আমীনের খুনি কারা তা এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। ৮১ দিনেও উদঘাটন হয়নি ঘটনার রহস্য। অপর কিশোরী ইলহাম বিনতে নাছিরকে কারা গলা কেটে নৃশংসভাবে খুন করছে তাও অজানা পুলিশের। চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর এই দুটি হত্যা মামলার তদন্তেও নেই কোন অগ্রগতি। তাসফিয়া আমীন হত্যা মামলা থানা পুলিশ থেকে ডিবিতে পাঠানো হয়েছে। আর ইলহাম খুনের মামলাটি যাচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিতে। দীর্ঘদিনেও খুনের রহস্য উদঘাটন আর খুনিচক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করতে না পারায় মামলা দুটির ভবিষৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
গত পহেলা মে বিকলে নগরীর ও আর নিজাম রোডের বাসা থেকে বন্ধু আদনান মির্জার সাথে বের হয় তাসফিয়া আমীন। পরদিন সকালে বাসা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের পতেঙ্গা নেভাল সৈকত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমীন। মামলার পর পুলিশ প্রধান আসামি আদনান মির্জাকে আটক করে। মামলার এজাহার নামীয় ছয় আসামির মধ্যে যুবলীগ নেতা ফিরোজ ও আসিফ মিজানসহ তিনজন এখন কারাগারে। শুরুতে মামলাটি তদন্ত করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। গত ৭ জুলাই মামলার তদন্তভার ডিবিকে দেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলায় নিহতের পিতা তাসফিয়া খুনের জন্য আদনান মির্জা ও তার সহযোগিদের দায়ী করেন। তারা সবাই ‘রিচ কিডস’ নামে একটি কিশোর গ্যাং এর সদস্য। তাসফিয়া আদনানের সাথে বের হয়ে বাসায় ফিরে না যাওয়ায় ওই রাতে তার বাবা তাকে বাসায় ডেকে আনেন। তাসফিয়া বাসায় ফিরে না আসা পর্যন্ত তাকে আটকে রাখতে চান তিনি। তবে মধ্যরাতে তাসফিয়াকে ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে আদনানকে নিয়ে যায় তার কথিত বড়ভাই যুবলীগ নেতা ফিরোজ।
অভিযোগ রয়েছে শুরুতে পুলিশ খুনের রহস্য উদঘাটন আর আসামিদের ধরতে তৎপর হয়ে উঠলেও পরে রাজনৈতিক চাপে সে গতি কমে যায়। আসামি আদনান মির্জাসহ অন্যরাও খুব প্রভাবশালী। পুলিশের আসামি ধরপাকড় অভিযানও হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এরমধ্যে অভিযুক্ত ফিরোজ আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। প্রথমে পুলিশ কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে বললেও পরে তার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক দাবি করে। একটি মহল থেকে প্রচার করা হয় সে আত্মহত্যা করতে পারে। এটি নিশ্চিত হতে তার ভিসেরা পরিক্ষা করা হয়। তবে সে পরিক্ষায় কোন বিষ পানের প্রমাণ মিলেনি। আবার ময়না তদন্ত রিপোর্টের তার মৃত্যুর কারণ অস্পষ্ট বলে জানা গেছে। ‘পানিতে ডুবে তার মৃত্যু’ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এদিকে আলোচিত এই খুনের ঘটনায় এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলেনি। আদনান মির্জার সাথে বের হয়ে সে কেন বাসায় ফিরেনি। আদনানের দাবি গোল পাহাড়ের চাইনা গ্রিল রেস্টুরেন্ট থেকে তারা বের হয়ে আলাদা অটোরিকশায় উঠে বাসায় চলে যায়। তা হলে প্রশ্ন তাসফিয়া বাসায় না গিয়ে একা কেন কীভাবে পতেঙ্গা সৈকতে গেল। সেখানে সে কিভাবে মারা গেল। বলা হচ্ছে সে পানিতে ডুবে মারা গেছে, তবে তার লাশ যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে পানি ছিলো না। আর জোয়ারের পানি থাকলে তার লাশ সেখান থেকে ভাটার টানে সরে যাওয়ার কথা।
মামলার তদন্ত তদারকির দায়িত্বে থাকা ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি,বন্দর-পশ্বিম) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন শেষ কথা নয়, মামলা তদন্তে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। তিনি বলেন, আমরা তদন্তে অনেক তথ্য পেয়েছি, আশাকরি খুব শিগগির একটি উপসংহারে পৌঁছতে পারব।
অপরদিকে দীর্ঘ ২৪ দিনেও নগরীর বাকলিয়ায় কিশোরী ইলহাম বিনতে নাছির খুনের কোন কিনারা হয়নি। খুনি কারা, কেন তাকে খুন করা হলো তাও জানে না পুলিশ। গত ২৭জুন সকালে বাকলিয়ার সৈয়দ শাহ রোডের লায়লা ভবনে হানা দিয়ে ইলহামের গলা কেটে হত্যা করা হয়। মা খুশবু মেঝো মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পর বাসায় একা ছিল ইলহাম। সে নগরীর মেরন সান স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। খুনিরা তাকে খুন করে বাসার আলমিরা থেকে দুটি আংটি ও এক জোড়া কানের দুল নিয়ে যায়। পুলিশ বলছে, এটি নিছক ডাকাতির ঘটনা নয়, বরং ঘটনার পারিপার্শিকতায় মনে হয়েছে এটি পরিকল্পিত খুন।
আর খুনিরা তাদের পরিচিত কেউ। লায়লা ভবনে ইলহামরা ছাড়াও তার তিন চাচার বাসা। তাদের বাসার দরজা সবসময় খোলা থাকে। কারণ সবাই এক বাসা থেকে অন্য বাসায় আসা-যাওয়া করে। ইলহামের সাথে তার দাদীও থাকতেন। তবে ঈদে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পর তিনি তখনও বাসায় ফিরেনি। খুনিরা তা জানতো, কখন তার মা মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাবে-তাও তাদের জানা ছিল। এই ঘটনায় পুলিশ রিদোয়ানুল কবির রাজু নামে নিহতের এক স্বজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
তবে তার কাছ থেকে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। মামলার আইও বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘটনার রহস্য এখনও উদঘাটন সম্ভব হয়নি। এজন্য আটটি আলামতের ডিএনএ পরিক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার সন্দেহভাজন রাজুর ডিএনএ পরিক্ষার জন্যও আদালতের অনুমতি পাওয়া গেছে। তিনি আশাবাদি মামলার রহস্য উদঘাটন হবে। তবে মামলাটি খুব শিগগির সিআইডিতে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।