Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশাল বোর্ডে পাশের হার দশমিক ৩১ভাগ বাড়লেও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার এযাবতকালের সর্বনিম্নে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৮, ৫:২৬ পিএম

গতবছরের তুলনায় দশমিক ৩১ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ৭০.৫৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা এযাবতকালের সর্বনিম্নে মাত্র ৬৭০-এর হ্রাস পেয়েছে। যা মোট পরিক্ষার্থীর মাত্র ১.০৮%। গতকাল দুপুর দেড়টায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কাছে ফলাফলের সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন। গত প্রায় এক দশকের মধ্যে এবারই বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে সর্বাধীক সংখ্যক ৬২হাজার ১৭৩ ছাত্রÑছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করলেও পাশের হার নিয়ে হতাশ অভিভাবক মহল। এবারো ছেলেদের তুলনায় মেয়দের ফলাফল যথেষ্ঠ ভাল। গড় পাশের হারের হিসেবে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাশের হার প্রায় ১০ভাগ বেশী। বিজ্ঞান বিভাগের পাশের হারও গড় পাশের হারের চেয়ে প্রায় ৯ভাগ বেশী। দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার মধ্যে এবার বরিশালের অবস্থান শীর্ষে। গতবছর শীর্ষে থাকা পটুয়াখালী জেলার অবস্থান এবার সর্বনিম্নে। জেলাটিতে পাশের হার কমেছে গতবছরের চেয়ে শতকরা ১৪ভাগেরও বেশী। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও ঝালকাঠীর ৫টি কলেজের শতভাগ ছাত্রÑছাত্রী পাশ করলেও দুটি প্রতিষ্ঠানের পাশের হার শূণ্য।

এবারো বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সব ছাত্রই জিপিএ-৫ নিয়ে পাশ করে তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। অপরদিকে বরিশাল মহানগরীতে এযাবতকালের ভালফল করা অমৃত লাল দে কলেজের পাশের হার কমে পিছিয়ে পড়েছে। সরকারী সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ শীর্ষে উঠে এসেছে।

এবার বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ৬২হাজার ১৭৩ পরিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০হাজার ৩৫৬ছাত্রী। যাদের গড় পাশের হার ৭৬%। আর ৩১ হাজার ৮১৭ ছাত্রের পাশের হার মাত্র ৬৫.৩৫%। এ হিসেবে ছাত্রদের ফেলের হার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশী, ৩৩.৬৫%। 

এবারের এইচএসসি পরিক্ষায় বরিশাল বোর্ডের বিজ্ঞান বিভাগে গড় পাশের হার ৭৫.৬২% হলেও এ বিভাগে মেয়েদের পাশের হার ৭৯.২৭%। আর ছেলেদের ৭২.৪০%। আর শিক্ষা বোর্ডে এবার যে ৬৭০ছাত্রÑছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে, তার মধ্যে ৪৩৬ জনই বিজ্ঞান বিভাগের। তবে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্রদের জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা বেশী। তবে এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে  জিপিএ-৫’এর গড় পাশের ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়রা এগিয়ে। ৬৭০জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ৩৭০ ছাত্রী। মানবিক বিভাগের ৩৩ হাজার ৪১ পরিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১৩৯ ও বিজনেস স্টডিজের ১৬হাজার ৫৯৩ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ৯৫ জন জিপিএ-৫ মান নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। 

সাম্প্রতিক ফলাফল বিশ্লেষনে দেখা যায়, গতবছর বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় গড় পাশের হার ছিল ৭০.২৪%। যার মধ্যে জিপিএ-৫ নিয়ে পাশের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮১৫। ২০১৬ সালে ৬১ হাজার ৫৩৮ পরিক্ষার্থীর মধ্যে পাশের হার ছিল ৭০.১৩%। জিপিএ-৫’এর সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৮৭। ২০১৫সালে বরিশাল বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ছিল ৭০.০৬%। আর ৫৫হাজার ৮০৪ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে জিপিএ-৫ নিয়ে পাশ করে মাত্র ১হাজার ৩১৯ ছাত্রছাত্রী। 

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় মানবিক ও ইসলাসী শিক্ষা বিভাগে গড় পাশের হার মাত্র মাত্র ৬৬.৪৮%। যার মধ্যে ছাত্রী ৭২.৮৮%। আর এ বিভাগে ছাত্রদের পাশের হার মাত্র ৫৭.৭৮%। অপরদিকে ব্যবসায় শিক্ষায় গড় পাশের হার ৭৪.৮১% হলেও ছাত্রীদের উত্তীর্ণের হার ৮১.৭৫%। ব্যাবসায় শাখায়  ছাত্রদের পাশের হার ৭০.৪২ %। 

দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার প্রায় ৩৩৩টি কলেজের ৬২,১৭৩ ছাত্রছাত্রী ১১৬টি কেন্দ্রে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশ নেয়। আর বরিশাল বোর্ডের ৬টি জেলার মধ্যে পাশের হারে এবার বরিশাল জেলা শীর্ষে উঠে এসেছে। জেলায় পাশের হার ৭৬.৩০%। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ঝালকাঠী জেলা, পাশের হার ৬৩.৮৭%। ৭০.১২% পাশ করে দ্বীপ জেলা ভোলার অবস্থান তৃতীয়।  পিরোজপুর জেলার অবস্থান ৪র্থ। পাশের হার ৬৮.৯২%। বরগুনা জেলার অবস্থান পঞ্চমে। পাশের হার ৬৬.৭৫%। আর গতবছর শীর্ষে থাকা পটুয়াখালী জেলায় এবার মাত্র ৬১.২২% ছাত্রছাত্রী পাশ করে ৬টি জেলার মধ্যে অবস্থান সর্বনিম্নে। 

গতকাল প্রকাশিত বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষার ফলাফলে জিপিএ ৪<৫ গ্রেড নিয়ে পাশের হার ছিল ৬.০৪%। জিপিএ ৩.৫<৪ গ্রেডে পাশের হার ১১.২৪%। জিপিএ ৩<৩.৫নিয়ে পাশের হার ২০.৮৪%। জিপিএ ২<৩ গ্রেডে পাশের হার ২৯.৬৯%। আর ১<২গ্রেড প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১.৬৬%। 

গতকাল দুপুরে দক্ষিনাঞ্চলের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে এইচএসসি পরিক্ষার ফল প্রকাশের পরে সর্বত্র যেমনি আনন্দের বণ্যা বইয়েছে, তেমনি অনেক ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের আর্তনাদও চোখে পড়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের এ ফলাফল প্রকাশের পরে গতকাল দুপুরের পর পরই বরিশাল মহানগরীর বেশীরভাগ মিষ্টির দোকানই খালি হয়ে যায়।

 

 

 

 

 

 


নাছিম উল আলম/ 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এইচএসসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ