পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কিশোরী ইলহামকে নিজ বাসায় গলা কেটে হত্যার ১৬দিন পার হলেও পুলিশ জানে না খুনি কারা। কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে। উদঘাটন হয়নি স্কুল ছাত্রী তাসফিয়া আমীন খুনের রহস্যও। খুনিদের ৭৪দিনেও চিহ্নিত বা গ্রেফতার করা যায়নি। বাসায় হানা দিয়ে মাকে জিম্মি করে নয় মাসের এক শিশুকে বালতির পানিতে চুবিয়ে মারে দুবৃর্ত্তরা। তারা কারা, কেন এই পাশাবিক হত্যাকান্ড, তাও জানে না পুলিশ। যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন মহিদ ও ফরিদুল ইসলামকে প্রকাশ্যে দিনের আলোতে অসংখ্য মানুষের সামনে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। ২৬ মার্চ মহিদ খুনের ঘটনায় ১৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়। ২৭এপ্রিল ফরিদ খুনের ঘটনায় মামলা হয় ৯ জনের বিরুদ্ধে। এখনও খুনি চক্রের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
আলোচিত এ পাঁচটি খুনের মামলাসহ চট্টগ্রামের অসংখ্য মামলার রহস্য উদঘাটন আর খুনিদের ধরতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। খুনের রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় খুনিরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে। মামলার তদন্তে গতি আসছে না। এতে করে নিহতের স্বজনদের মধ্যে হতাশা নেমে আসছে। ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। এসব হত্যাকান্ডের আগে পরে নগরীতে আরও বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি ঘটনায় খুব দ্রুত আসামিদের পাকড়াও করা গেছে, মামলার তদন্তও এগিয়ে চলছে। নগরীর পল্টন রোডে যুবলীগ কর্মী আবু জাফর অনিক খুনের ঘটনায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া দুই আসামীকে দ্রুত ফিরিয়েও আনা হয়েছে। এছাড়া নগরীর হামজার বাগে যুবক অনিক হত্যা, হালিশহর ও বাকলিয়ায় দুই যুবক খুনের ঘটনায় আসামিদের প্রায় সবাইকে পাকড়াও করা গেছে।
তবে কিশোরী ইলহাম, সানশাইন গ্রামার স্কুলের ছাত্রী তাফসিয়াসহ কয়েকটি আলোচিত খুনের ঘটনা তদন্তে কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। গত ২৭ জুন সকালে নগরীর বাকলিয়ার সৈয়দ শাহ রোডের লায়লা ভবনের গলা কেটে হত্যা করা হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ইলহামকে। এই খুনের ঘটনায় ইলহামের চাচীর ছোটভাই আইনজীবী রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করে। তাকে দুই দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা (আইও) বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন গতকাল (শুক্রবার) দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য মিলেনি। মামলা তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, খুনিদের চিহ্নিত করতে রক্তমাখা ছোরাসহ বেশকিছু আলামতের ডিএনএ পরিক্ষা করা হচ্ছে। খুনের রহস্য এখনও অজানা বলে জানান তিনি।
অভিজাত ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল ছাত্রী তাসফিয়া আমীন খুনের রহস্যও এখনও অজানা। রহস্য উদঘাটনে গত সপ্তাহে আসামি মোঃ ফিরোজকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তবে তার কাছেও তেমন কোন তথ্য মিলেনি। মামলার এজাহার নামীয় আসামী যুবলীগ নেতা ফিরোজ গত ৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক ফিরোজকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হয়। মামলাটির তদন্তভার থানা থেকে ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের পহেলা মে বন্ধু আদনান মির্জার সাথে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে বাসায় ফিরেনি তাসফিয়া। পরদিন নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ৩ মে তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমীন পতেঙ্গা থানায় কথিত প্রেমিক আদনান মির্জার, তার কথিত বড়ভাই ফিরোজসহ ছয়জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয় মামলায়। এই মামলার তদন্তে এখনও কোন গতি আসেনি।
বিগত ২৭ এপ্রিল নগরীর বাকলিয়া ডিসি রোডে ক্যাবল ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবলীগ নেতা ফরিদুল ইসলাম ফরিদকে। ওইদিন রাতে নিহত ফরিদের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মোহাম্মদ মুছা, মোহাম্মদ ফয়সাল ও রাসেলসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। অন্য আসামিরা হলেন- মাসুদ, জানে আলম, নবী, ইকবাল হোসেন, তৌহিদুল আলম ও মুরাদ। আসামিরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। খুনিরা ধরা না পড়ায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্যরাও।
তার আগে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি পালনের মধ্যে নগরীর ৩৮ নম্বর দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর এলাকার স্কুলের ভেতরে যুবলীগের নেতা মহিউদ্দিন মহিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত মহিউদ্দিন স্থানীয় রাজনীতিতে মরহুম এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। দলীয় কোন্দলের জেরে তাকে হত্যা করা হয়। এই খুনের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা হাজি ইকবাল ও তার ছেলেসহ ১৫জনকে আসামি করে মামলা হয়। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও হাজি ইকবালসহ অন্যরা পালিয়ে গেছে। মামলার আইও জানান, খুনের কারণ আর খুনিরা চিহ্নিত হলেও তারা ধরা না পড়ায় তদন্ত শেষ হচ্ছে না।
পতেঙ্গায় নয় মাসের শিশু খুনের রহস্যও এখনও অজানা। বিগত ১৫ জুন দুপুরে শিশুটির পিতা রিপন মিত্রের বাসায় হানা দেয় তিন যুবক। ওই তিন যুবক বাসায় হানা দিয়ে তার স্ত্রীকে জিম্মি করে শিশু কন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে বাথরুমের বালতির পানিতে চুবিয়ে মারে। পরে তারা বাসা থেকে টাকা পয়সা ও কিছু স্বর্ণালংকার লুট করে। পতেঙ্গা থানার ওসি আবুল কাশেম ভূইয়া গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মামলার তদন্ত চলছে তবে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি এখনও নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।