পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী বিক্ষোভে শুক্রবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইরান। কয়েক লাখ মানুষ সমবেত হয়েছিলেন রাজধানী তেহরানে। ওই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পশ্চিমা অন্য দেশগুলোর ঘোর আপত্তি থাকা সত্তে¡ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়। চুক্তির অন্য শরীক দেশগুলো চুক্তিতে বহাল থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এমন প্রত্যয় ঘোষণা করেছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি সম্পাদন করেন। এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতা বা বোঝাবুঝি পাকা করতে সহসাই কূটনৈতিক সফরে যাওয়ার কথা ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর। অনলাইন আল জাজিরা এ খবর দিয়ে লিখেছে, শুক্রবার তেহরানে মানুষের ঢল নেমেছিল। এ সময় তাদের হাতে ছিল নানা রকম প্লাকার্ড। তাতে লেখা ছিলÑ যুক্তরাষ্ট্রের পতন হোক। ট্রাম্প আপনি কা-জ্ঞানহীনের মতো কথা বলছেন। কারণ, ট্রাম্প ওই চুক্তিকে ভয়াবহ, এক পক্ষীয় ও পরাজয়মুলক বলে আখ্যায়িত করেছে। শুক্রবারের র্যালি থেকে শ্লোগান দেয়া হয়Ñ যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক। আমরা লড়াই করে মরবো। কিন্তু কোনো সমঝোতা মেনে নেবো না। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সম্পাদিত ইরানের পারমাণবিক চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীরা হলোÑ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর উদ্দেশ্য ইরানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল করা, যার বিনিময়ে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনা বন্ধ বা স্থগিত বা সীমিত রাখে। কিন্তু ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে তার দেশকে প্রত্যাহার করে নেন। পরে অবরোধ আরোপ করেন নতুন করে। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, শিগগিরই এ বিষয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যদের সঙ্গে সমঝোতা শুরু করতে। একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আজ শনিবার থেকেই এ সফরে বের হওয়ার কথা রয়েছে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফের। এ সফরে তিনি প্রথমে যাবেন চীন ও রাশিয়া। এরপর যাবেন ব্রাসেলস। সেখানে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে তার সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মঘেরিনির। শুক্রবার তিনি নিশ্চিত করেছেন, তারা ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তি অটুট রাখতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফ্রান্স বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে যে শাস্তি দিচ্ছে তাতে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর শত শত কোটি ডলার লোকসান হবে। তাই ইউরোপের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বকে সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে ফ্রান্সের। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্সের। একই রকম সম্পর্ক রয়েছে বৃটেনেরও। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো লি মাইরে বলেছেন, অবরোধ বিরোধী পদক্ষেপ কি কি হতে পারে তা ইউরোপীয় কমিশনের কাছে প্রস্তাব আকারে উত্থাপন করবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। তিনি বলেন, বাইরে থেকে দেয়া অবরোধ কি আমরা মেনে নেবো? জবাব হলোÑ না। যুক্তরাষ্ট্রকে কি এই গ্রহের অর্থনীতির মোড়ল হিসেবে গ্রহণ করতে হবে? এরও উত্তর হলো- না। লা মাইরে বলেছেন, ইরানে এরই মধ্যে ব্যবসা করছে তাদের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে রেনল্ট, টোটাল, স্যানোফি, ড্যানওয়ান ও পিউগিওট। এএফপি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।