Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হুমকির মুখে মৎস্য খাত

উপকূলীয় অঞ্চলের অভিযান সত্তেও চলছে রেণু আহরণ ও পোনা নিধন

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

[-অদক্ষ পোনা আহরণকারীরা সুন্দরবনের নার্সারি গ্রাউন্ডে শিকার করছে মাছ
-১টি পোনা আহরণে বিভিন্ন প্রজাতির ৯০টি মাছের পোনা নিধন হচ্ছে]
উপকুলীয়াঞ্চলের সম্ভাবনাময় মৎস্য খাত হুমকির মুখে। অপরিকল্পিতভাবে বাগদা রেনু আহরণ, নিষিদ্ধ ঘোষিত পারসের পোনা ও অবাধে মাছের পোনা নিধনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এ কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতি সুন্দরবন উপকুলীয়াঞ্চল থেকে কয়েক দফায় কোস্টগার্ড ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা প্রায় কোটি টাকা মূল্যের আহরণ নিষিদ্ধ পারসে ও বাগদা রেনু পোনা আটক করে। এছাড়া প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল জব্দ করা হয়। কোস্টগার্ড প্রতি সপ্তাহে একাধিক অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছের পোনা আটক করে নদীতে অবমুক্ত করছে। তবুও থেমে নেই চোরা সিন্ডিকেট চক্রের অপতৎপরতা। সুন্দরবনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও ডাকাতদের সহযোগিতায় সিন্ডিকেট চক্র দেশের সম্পদ বিনষ্টে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের ৫ হাজার ৭৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট সুন্দরবনের ৩ হাজার ৯শ বর্গকিলোমিটার জঙ্গল এবং ১ হাজার ৭ বর্গকিলোমিটার জলাভুমি। এ জলার মধ্যে ৮শ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র উপকুল এবং বনের অভ্যন্তরে জলার আয়তন ৯৬০ বর্গকিলোমিটার। কয়েক বছর আগেও অভ্যন্তরীণ জলাভুমি অর্থাৎ নদী-নালা খাল-বিল ও হ্রদের প্রতি বর্গকিলোমিটার মাছের উৎপাদন ছিল ৪ মেট্রিক টনের বেশি এবং সমুদ্র উপকুলীয় অঞ্চলে প্রতি বর্গকিলোমিটার মাছ উৎপাদন হতো ৪ মে:টন। কিন্তু বর্তমান সুন্দরবনে এলাকায় মাছের উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে উপকুলীয় অঞ্চলের শহর, বন্দর, ও হাট-বাজারে ইলিশ ও রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের দু®প্রাপ্যতা দেখা দিয়েছে। সূত্র আরো জানায়, চিংড়ি চাষের মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল হৃদ থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে বাগদা পোনা সংগ্রহ করে। এছাড়া প্রায় সারাবছরই সুন্দরবনের অভ্যন্তরে এবং উপকুলীয় এলাকার হাজার হাজার জাল মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বন বিভাগের বৈধ অনুমতি নিয়ে বনের অভ্যন্তরে হতে বাগদা পোনা আহরাণ ও শিকার করা হয়। মৎস্য খাত থেকে বন বিভাগের মাধ্যমে প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকারের প্রায় দু’ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু অপরিকল্পিত পদ্ধতিতে পোণা আহরণ ও মাছ শিকারের ফলে রাজস্ব আয়ের চেয়ে বহুগুন ক্ষতি হচ্ছে মংস্য সম্পদের । বাগদা পোনা ধরার সময় নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে অন্যান্য মাছের পোনা। এছাড়া জেলার ছোট ছোট মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার করার কারণে সুন্দরবনসহ দক্ষিণাঞ্চলের রামপাল, মংলা, বড় কালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার নদী-নালা ক্রমান্বয়ে মংস্য শূন্য হয়ে পড়েছে।
জেলে সূত্রে আরো জানা যায়, গভীর সমুদ্র মাছ ও চিংড়ির যে সব পোনা ছাড়ে এ পোনাই খাদ্যের সন্ধানে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে চলে আসে। সুন্দরবনের খাল, বিল, পুকুর, নদী-নালা প্রভিতৃ হচ্ছে মাছের নার্সারী গ্রাউন্ড। অদক্ষ পোনা আহরণকারীরা না বুঝে এ নার্সারী গ্রাউন্ডে চরম আঘাত করেছে। পোনা ধরার ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণ না থাকায় সেই জালে আটকা পড়া সকল পোনা চরে ফেলে দেয় এবং চিংড়ির পোনা বেছে নিয়ে তা নিদির্ষ্ট সংরক্ষণ করে থাকেন। এভাবে ১টি বাগদা পোনা আহরণ করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ৯০টি মাছের পোনা নিধন করছে।
সূত্রমতে, সাদা মাছ অর্থাৎ রুই, কাতলা, মৃগেল, শোল, কই, বোয়াল, রয়না, পাবদা, পুটি, ট্যাংরা প্রভৃতি মাছের দাম এখন ৪’শ থেকে ৬’শ টাকা প্রতি কেজি। অন্যদিকে নদীর মাছ ভেটকী, পারশে, চিংড়ি, ভোলা, মেদ, ইলিশ, জাবা, ফেকশা, লোটে, রুপচাঁদ প্রভৃতি মাছের দাম গত ৩ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। প্রতি কেজি মাছ প্রকার ভেদে ৩”শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। মানুষ বাড়ছে কিন্তু মাছের উৎপাদন বাড়ছে না। মাছের দু®প্রাপ্যতার কারণে মাছ এখন সাধারণ মানুষের কাছে সোনার হরিণের মত। নিন্ম ও সাধারণ আয়ের মানুষেরা চাহিদা মত মাছ ক্রয় করতে পারছেনা। অপরদিকে সমুদ্রে মাছ শিকারে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর মধ্যে ডাকাতদের উৎপাত অন্যতম। তাছাড়া থাইল্যান্ড ও ভারতের চোরা মৎস্য শিকারীরা অবৈধ অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশ সীমানায় জোর পূর্বক মাছ ধরছে। প্রতি বছর হাজার হাজার টন মাছ পাচার হয়ে যাচ্ছে। তেমনি নদী ও সমুদ্রের পোনা একই ভাবে ধরে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে মাছের বঙ্ক বিস্তার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সঙ্কট দেখা দিচ্ছে মাছের। মৎস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশব্যাপী হাতেগোনা কিছু সংখ্যক প্রকল্পে সরকারের বা ব্যাংকের ঋন প্রকল্প কিংম্বা বিশেষ সহায়তা দেয়া হলেও তৃণমুল পর্যায়ে বিশেষ কোন বাস্তবমুখী প্রকল্প গত একযুগেও গ্রহন করা হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হুমকির


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
--> function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->