নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আশা আবারো মিলিয়ে গেল পার্ক দেস প্রিন্সেসের ধোয়াশার অন্ধকারে। প্যারিসবাসীর আশা পূরণ করতে পারেনি নেইমারহীন পিএসজি। ইউরোপিয়ান রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর রিয়াল মাদ্রিদ এবারো জিতেছে আপন ভঙ্গিমায়। জয়ের নায়ক? কে আবার, রোনালদো। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস আভেইরো।
বার্নাব্যুর প্রথম লেগে জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো, দল জেতে ৩-১ গোলে। পরশু প্যারিসে ফিরতি লেগে লুকাস ভাসকুজের মাপা ক্রস আর রোনালদোর হেডার যেন পিএসজির গোলপোস্ট নয়, তা বিষাক্ত তীরের ফলা হয়ে ভেদ করে প্যারিসবাসীর হৃদয়। ম্যাচ বলতে গেলে ওখানেই শেষ। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিতেও তখন স্বাগতিকদের করতে হত ৩ গোল! মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তির লাল কার্ডে তা হয়ে যায় আরো অসাধ্য। দশ জনের দলের বিপক্ষে পরে আরো এক গোল করে ২-১ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন কাসিমিরো। দুই লেগ মিলে ৫-২ ব্যবধানে এগিয়ে বীরদর্পে শেষ আটে পা রাখল টানা দুবারের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
অথচ শেষ ষোলর এই ম্যাচকে ঘিরে চলছিল কত আলোচনা। একদিকে নেইমার-এমবাপে-কাভানিদের নিয়ে গড়া ও ফেভারিট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করা পিএসজি। যে দল গঠন করতে গিয়ে দলের মালিক খরচ করেছেন কাড়ি কাড়ি অর্থ। নেইমারকে দলে ভেড়াতেই বার্সেলোনার কাছে গুনতে হয় ২০০ মিলিয়ন ইউরো! ইউরোপিয়ান ফুটবলে রাজত্বের মুকুট পরতে কোনই কার্পণ্য করেনি পিএসজি। অপরদিকে ঘরোয়া লিগ ও কাপ থেকে বিদায় নেয়া রিয়াল। হারলেই নিশ্চিত হবে ট্রফিশূন্য বছর। কোচ জিনেদিন জিদানের নড়বড়ে চেয়ারটাও তখন হাতছাড়া হওয়ার নিশ্চিততূল্য শঙ্কা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মানেই যে ভিন্ন রিয়াল তা আরো একবার প্রমাণ দিয়ে নিজেদের রাজত্ব ধরে রাখল রেকর্ড ১২ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
এখন উল্টো পিএসজি কোচ উনাই এমিরির চাকরি পড়ে গেছে শঙ্কায়। গেল বছরও এই পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল এমিরির দলকে। সেই বেদনাদায়ক বিদায়ের কথা হয়ত শুধু প্যারিসবাসী কেন কোন ফুটবল রোমান্টিকই ভুলবেন না। নিজেদের মাঠে ৪-০ গোলে জয়ের পরও ন্যু ক্যাম্পে নেইমার-মেসির বার্সেলোনার কাছে ৬-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল পিএসজিকে।
রিয়ালের খেলায় বিঘœ ঘটাতে আগের রাতে তাদের ভালোমত ঘুমোতে দেয়নি পিএসজির উগ্র সমর্থকরা। রিয়ালের টিম হোটেলের বাইরে মধ্যরাতে ড্রাম বাজিয়ে ও আগুনের ফুলকি তৈরী করে হট্টগোলের সৃষ্টি করে তারা। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ম্যাচ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে স্টেডিয়ামেও ছিল একই চিত্র। পুরো মাঠ ছেয়ে যায় ধোঁয়াশায়। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ম্যাচ শুরু না হতেই এবার তা রূপ নেয় আরো মারাত্মক আকারে। রেফারি কিছু সময় খেলা বন্ধ করে অধিনায়ক থিয়াগো সিলভার সাহায্য কামনা করেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে।
এর খানিক পরেই ধোয়াশা কেটে যায় রিয়ালেরও। বাম প্রান্ত থেকে বাড়ানো ভাজকুয়েসের ক্রস খুজে নেয় অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় থাকা রোনালদোকে। কোন ভুল করেননি পর্তুগিজ তারকা। উড়ে আসা বলে মাথা ছুঁইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন দলের প্রাণ ভোমরা। চলতি মৌসুমে এ নিয়ে আট ম্যাচের সব কটিতেই গোল করলেন ‘সিআর-সেভেন’ (মোট ১২টি)। টানা নয় ম্যাচে গোল করে লুই ফন নিস্টলরয়ের রেকর্ডেও বসিয়েছেন ভাগ।
৬৬তম মিনিটে দশজনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। এর খানিক পরেই দলকে সমতায় ফেরান কাভানি। জটলার মধ্যে বল তার পায়ে লেগে জালে জড়ায়। ৮০তম মিনিটে কাসিমিরোর পা থেকে আসে সেই জয়সূচক গোল। ৪৭টি ইউরোপিয়ান ম্যাচে এটি পিএসজির মাত্র দ্বিতীয়া হার (জয় ৩০, ড্র ১৫)।
পুরো ম্যাচে একাধীক গোলের সুযোগ নষ্ট করেন করিম বেনজেমা। দুবার তো গোলরক্ষককে একা পেয়েও ব্যর্থ হন ফরাসি স্ট্রাইকার। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও গ্যারেথ বেলকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান জিদান। ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানিয়ে এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘অমার কোন সন্দেহ নেই যে সে অনেক বেশি খেলতে চায়। কিন্তু সামনে এখনো অনেক খেলা বাকি এবং প্রত্যোককেই এজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ পিএসজি কোচ এমিরি রিয়াল যোগ্য দল হিসেবেই বিজয়ী হয়েছে বলে মনে করেন, ‘এটা সত্যি যে মাদ্রিদই জয়ের দাবিদার। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তারাই সেরা।’
একই রাতে লিভারপুল-পোর্তোর অনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে জেতেনি কেউই। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হওয়ায় এথম লেগের সেই ৫-০ ব্যবধানের জয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে লিভারপুল। ৯ বছর পর আসরের শেষ আটে উঠল অল রেডরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।