পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইরানে শ শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে চীন। অথচ ইউরোপের দেশগুলো তার সঙ্গে কিছুতেই তাল মেলাতে পারছে না। তাই ইরানের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিনিয়োগে পশ্চিমা দেশগুলোর এখনই পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হওয়ার পর চীন দেশটিতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। তারা হাসপাতাল থেকে শুরু করে রেলওয়ে নির্মাণে বিনিয়োগ করছে। স¤প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ প্রতিান সিআটিআইসি দেশটির সঙ্গে এক হাজার কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করেছে। আর চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আরেও ১৫শ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়ায় নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ কারণে তারা কোনও বিনিয়োগ করছে না। কিন্তু এ সময়েও চীন ইরানে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করেছে। স¤প্রতি ইতালির রাজধানী রোমে দুই দেশের এক বিনিয়োগ বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরেন ইরানি ব্যবসায়ীরা। বৈঠকে ইরানের চেম্বার অব কর্মাসের বিনিয়োগ কমিশনের প্রধান ফেরিয়াল মোস্তফি ইরানে বিনিয়োগের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে আহŸান জানান। অন্যথায় চীন সব দখল করে নেবে বলেও সতর্ক করেন তিনি। এদিকে ইরান বলছে, বেইজিংয়ের ১২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড চুক্তির আওতায় ইরানের বন্দর, সড়ক, রেলওয়ে, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য চীন এ অর্থ বিনিয়োগ করছে। ইউরোপ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সহজ করার লক্ষ্যে এই বেল্ট অ্যান্ড রোড চুক্তি করা হচ্ছে। আর ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই ঋণচুক্তি প্রাথমিকভাবে ইউরো ও চীনের মুদ্রা ইউয়ানের মধ্যে বর্ধিত করা হবে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানায়, চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ১৫শ কোটি ডলারের সমঝেতা চুক্তি সই করেছে। আট কোটি জনগোীর দেশ ইরানের এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় বিদেশি বিনিয়োগকারী বিশেষ করে পশ্চিমারা তাদের প্রকল্পগুলোর সুরক্ষার নিশ্চয়তা চাচ্ছে। যাতে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর এ কারণে ইরান ও ইতালির সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদারিত্বও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছর তেহরানে ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি ইরান ও ইতালির মধ্যে বাণিজ্য আবার সচল করার ঘোষণা দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এ ঘোষণায় ইরানকে চারশ কোটি ইউরো ঋণ দিতে চেয়েছিল ইতালি। আর এখন নতুন করে তা হওয়ার তেমন কোনও সম্ভাবনাও নেই বলে জানিয়েছেন একজন ইতালিয়ান কর্মকর্তা। কিছু ইউরোপিয়ান ব্যাংক স¤প্রতি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়িয়েছে। এর মধ্যে অস্ট্রিয়ার ওবার ব্যাংক গত সেপ্টেম্বরে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক গত আগস্টে ইরানের সঙ্গে আটশ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি করেছে। তবে এসব চুক্তির অংক চীনের আশে পাশেও নেই। এ বিষয়ে ইতালিয়ান থিঙ্ক ট্যাংক ইউরোপিয়ান হাউজ আমব্রোসেটির প্রধান ভালেরিও ডি মোলি বলেন, ইরানের সামগ্রিক বাণিজ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছে চীন। তাই এখনই কিছু করতে হবে। নয়তো বহুল প্রত্যাশিত সুযোগ হারিয়ে যাবে। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।