Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মার চরে ভারতীয় গরুর ঢল শঙ্কিত স্থানীয় খামারিরা

| প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : পদ্মার পানি কমলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পদ্মা পেরিয়ে বানের পানির মত আসছে গরু। হাজার হাজার গরু বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায়। এমন চিত্র দেখা গেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী সীমান্তের চরাঞ্চলে। বিএসএফ-বিজিবি ম্যানেজ করেই প্রতিদিন বাংলাদেশে ঢুকছে হাজার হাজার ভারতীয় গরু-মহিষ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুইটি ও রাজশাহীর একটি বিট খাটালের মাধ্যমে এসব গরু-মহিষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বৈধর পাশপাশি অবৈধভাবেও আসছে গরু। দক্ষিনের চরে এপারে আসার অপেক্ষায় রয়েছে হাজার হাজার গরু-মহিষ। নৌকা ট্রলার চেপে ভরা পদ্মা পাড়ি দিয়ে আসছে ভারতীয় গরু-মহিষ। গত দু’দিন পদ্মাে দক্ষিন চরে গিয়ে দেখা যায় শুধু গরু আর গরু। কারো কারো গায়ে বৈধতার সীলও দেয়া আছে। আবার অনেকগুলোর গায়ে সীল নেই। এসব গরু মহিষের একটি অংশ বীট খাটালে শুল্ক দিয়ে বৈধভাবেই চলে আসছে। আবার সুযোগ সময় মত দেখভালকারীদের ম্যানেজ করে চলে আসছে। চরাঞ্চলের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানাগেল প্রতিদিন কয়েক হাজার গরু-মহিষ আসছে। একঝাঁক পার হতে না হতে আরেক ঝাক এসে হাজির। কোরাবনী ঈদের আগ পর্যন্ত এমনটি চলবে বলে জানালেন তারা।
অভিযোগ পাওয়া গেল বৈধভাবে গরু-মহিষ আমদানীতে বিট খাটাল ও পদ্মার খেয়া ঘাটে সরকারিভাবে বেধে দেয়া নিয়মের চেয়ে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। সীমান্তের বিট খাটাল থেকে পদ্মা নদী পার করতে ৫০০ টাকা ট্যাক্সসহ গরু-মহিষ প্রতি ৭০০ টাকা খরচ হওয়ার কথা থাকলেও তাদের কাছ থেকে ১২০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার পদ্মার পূর্ব পাড়ের বাখের আলী ঘাট থেকে পশ্চিম পাড়ের রঘুনাথপুর ঘাটে নৌকায় যাওয়ার সময় পদ্মার পাঁচটি চর খলিফাপুর চর, দেবপুর চর, দশরোশিয়া চরের অপেক্ষমান শতশত গরু দেখা যায়। গরু ব্যবসায়ীরা জানালেন ছাড়পত্র নিয়েই ওপারে নিয়ে যাওয়া হবে।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বিট খাটাল রয়েছে সাতটি। ওয়াহেদপুর, রঘুনাথপুর, সাতরোশিয়া, বাখের আলী, চরবাগডাঙা, হাকিমপুর ও ফরিদপুর। এর মধ্যে শুধুমাত্র শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মার পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ওহায়েদপুর ও রঘুনাথপুর এই দুইটি বিট খাটাল দিয়ে বর্তমানে গরু-মহিষ ঢুকছে বাংলাদেশে। বাকিগুলো বন্ধ রয়েছে। কি কারনে বন্ধ রয়েছে জানা না গেলেও গরু-মহিষ আসছে সমানে। করিডোরের ছাড়পত্র অনুযায়ী সকালেই গরু-মহিষের গায়ে নম্বর বসিয়ে দেয় বিজিবি। বিকেলের পর থেকেই গরু মহিষগুলো নৌকায় করে নদী পার করা হয়। গরু ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, বীট খাটালে বিধি মোতাবেক পঞ্চাশ টাকা নেবার কথা থাকলেও সেখানে নেয়া হচ্ছে আড়াইশো টাকা। আর সরকারী শুল্ক পাঁচশো টাকার স্থলে নেয়া হচ্ছে বেশী টাকা।
গরু-মহিষ প্রতি দেড়শো টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও নেয়া হচ্ছে আড়াইশো টাকা। ঘাট ইজারাদাররা বেশি টাকা আদায় করছে। আবার রাখালকে গরু পারাপারের জন্য দিতে হচ্ছে গরুপ্রতি দুইশো টাকা। অবশ্য ঘাট এবং খাটালের লোকজন অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা অস্বিকার করেন। অবৈধ পথে গরু আসার বিষয়টিও চেপে যান। চর বাগডাঙ্গা ইউনিয়নের মেম্বার জামাল উদ্দিন বলেন, যে পথগুলো দিয়ে গরু-মহিষ আমদানি সহজ হয় সেগুলোর বিট খাটাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রহস্যজনক ভাবে সেগুলো বন্ধ করে দুর্গম এলাকার দুইটি বিট খাটাল দিয়ে গরু-মহিষ আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এতে গরু-মহিষ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের চরম ভোগান্তি পোয়াতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, রাজশাহী জেলায় ছয়টি বিট খাটাল থাকলেও গরু ঢুকছে শুধুমাত্র একটি দিয়ে। চরমাজারদিয়াড় ওই বিট খাটাল দিয়ে প্রতিদিন ছয়শ’ থেকে এক হাজার গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মঙ্গলবারও এ বিট খাটাল দিয়ে গরু আসতে দেখা যায়। গরুর এমন আমদানীতে শংকিত স্থানীয় খামারীরা। এত গরু আসছে তারপরও হাটে গরুর দাম কমেনি। সিন্ডিকেট করেই দাম নিয়ন্ত্রন করছে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে গরুর হাট রাজশাহী সিটি হাটে গিয়ে দেখা যায় খামার ও ভারতীয় গরুতে ভরা। স্থানীয়রা ছাড়াও বাইরে থেকে ক্রতারা আসছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
৪ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ