Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলা ট্রেনে যেসব সুবিধা মিলবে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:৪০ এএম

ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য চীন থেকে ১০০টি বগি আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৫টি বগি দেশে এসে পৌঁছেছে। বাকিগুলোও জুন-জুলাইয়ের মধ্যে দেশে এসে পৌঁছাবে। এসব বগি এতটাই অত্যাধুনিক ট্রেনে আগুন ধরার আগেই অ্যালার্ম (সতর্ক সংকেত) বাজবে। বগিতে যুক্ত থাকবে ওয়াইফাই, সিসি ক্যামেরা, টিভি মনিটর এবং পরিবেশবান্ধব বায়ো টয়লেট।
রেলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম সলিমুল্লাহ বাহার আজকের পত্রিকাকে জানান, পদ্মা রেল সেতু প্রকল্পের বগিগুলোতে ওয়াইফাই রাউটার এমনভাবে যুক্ত, কেউ চাইলেও চুরি করতে পারবে না। আগের ট্রেনগুলোতে ওয়াইফাই যুক্ত থাকলেও ব্যবহার করা যায়নি। কারণ রাউটার বাইরে থাকায় চুরি হয়ে যেতো। কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য আনা বগিগুলো ইন্টারবিল্ড ওয়াইফাই হওয়ায় (ভেতর থেকে সংযোগ), চুরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যাত্রীরা অনায়াসে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এই ১০০টি কোচ তৈরি করছে চীনের সিআরইসি তাংশান কোম্পানি লিমিটেড। কোচগুলোর মধ্যে রয়েছে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপার কার, ১৬টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার, ৫২টি শোভন চেয়ার কার, ১৮টি প্যান্ট্রি ও গার্ড ব্রেকসহ শোভন চেয়ার কার এবং ১০টি পাওয়ার কারসহ শোভন চেয়ার কার। ২০২৩ সালের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সব বগি দেশে এসে পৌঁছাবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ১৫টি কোচ ইতিমধ্যে এসেছে। বাকিগুলোও জুন-জুলাইয়ের মধ্যে চলে আসবে। কোচগুলোর প্রতিটিতেই থাকবে সিসি ক্যামেরা। কোচগুলো প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। তবে স্লিপার কোচে ক্যামেরা লাগানো থাকবে কোচের করিডরে। শারীরিকভাবে অক্ষম যাত্রীরা ট্রেনে ওঠার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, বিশেষ ধরনের টয়লেটসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকবে বলে জানান তিনি।
আফজাল হোসেন বলেন, এই ট্রেনের বিশেষ আরেকটি দিক হলো অটো অ্যালার্ম। অর্থাৎ ট্রেনে কোনো কারণে আগুন ধরার আগেই বিশেষভাবে বসানো সেনসর অ্যালার্ম দিয়ে সতর্ক করবে।
২০২৪ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালানোর লক্ষ্য রয়েছে রেলওয়ের। সে অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। চীন থেকে আসা এসব কোচ সৈয়দপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর কোচগুলো ফাইনাল ট্রায়াল দিয়ে ঠিকঠাকমতো পেলে বুঝে নেবে রেলওয়ে।
প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, যেসব কোচ আনা হচ্ছে, ওইগুলো সব ট্রায়াল দেওয়া হবে। কোনো ত্রুটি থাকলে গ্রহণ করা হবে না।
জানা যায়, ২০১৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প। রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
একই সঙ্গে বিদ্যমান ভাঙা-পাচুরিয়া-রাজবাড়ী পর্যন্ত রেলপথটি ব্যবহার করে এসব অঞ্চলের মানুষ ঢাকার সঙ্গে সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে মাওয়া, সেখান থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার ব্রড গেজ রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর বাইরে ৪৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার লুপ ও সাইডিং লাইন এবং তিন কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি ছয়টি স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • N.M.Jakaria ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:৪০ পিএম says : 0
    ডুয়েল লাইনের রেল যোগাযোগ না করায় রাষ্ট্রের যে অপূরণীয় ক্ষতি হইয়া গেল।এই ক্ষতির দায় কে নিবে। পরিকল্পনাবিদদের একটু খানি নিরবুদ্ধিতার কারণে এই ক্ষতিটা হইয়া গেল দেশের।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা সেতু

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৬ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ