পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মৌ মৌ গন্ধ ও অপরূপ
সৌন্দর্য কাছে টানছে
মানুষ-পাখিকে
মানবদেহের জন্য ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ কুসুম ফুলের বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে নাটোরের লালপুর উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে। দেখতে দারুণ আর পুষ্টিগুণে ভরা কুসুম ফুলের তেল বেশ উপকারী। দেশি-বিদেশি পাখির খাবার হিসেবেও এগুলো বেশ জনপ্রিয়। চরাঞ্চলের বালু মাটির পড়ে থাকা পতিত জমিতে কোনো কিছুই চাষাবাদ হতো না। চাষাবাদের আগ্রহও ছিল না কারো। কিন্তু এসব অনাবাদি জমিতে এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে কুসুম ফুলের চাষ করে সফলতা পাওয়ায় এখন অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন চাষে। চরাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কুসুম ফুলের চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জিন্নাত আলী ও নারী কৃষাণী সাবি বেগম। তারা দু’জনে মোট দেড় বিঘা জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করেছেন।
সরেজমিনে চরাঞ্চলের জিন্নাত আলী ও কৃষাণী সাবি বেগমের কুসুম ফুলের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, আড়াই থেকে সাড়ে ৩ ফুট লম্বা গাছের পাতা ও কাÐের রং গাঢ় সবুজ। প্রতিটি গাছে ফুটে আছে সাদা, হলুদ, লাল ও খয়েরিসহ ৭টি রঙের পাপড়িযুক্ত ফুল। ফুলে হলুদ ও লাল বর্ণের অপরূপ রঙ আর মিষ্টি মৌ মৌ গন্ধ শুধু মানুষকেই নয়, উপকারী কীট পতঙ্গকেও আকৃষ্ট করে। কুসুম ফুলের কাÐ, পাতা ও কলিতে ছোট ছোট কাঁটা রয়েছে। বাহারি এসব ফুলের পাপড়ি পাখির কচি পাখনার পালকের মত তুলতুলে। এমনই নজরকাড়া অপরূপ ফুলের নাম কুসুম। এ ফুলের বীজ থেকে উৎপাদিত তেল প্রাকৃতিক ও উন্নত মানের ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহারে খ্যাতি রয়েছে। একটি তেলবীজ শস্য। গ্রামে ফুলবিচি নামে এর পরিচিত রয়েছে। কৃষি বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলা হয় কুসুম ফুল। তবে কালের আবর্তে এখন ফুলটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।
কুসুম ফুলচাষী কৃষাণী সাবি বেগম বলেন, এ জমি আগে পড়েই থাকতো। এবরই প্রথম তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শে ১৫ কাঠা জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করেছেন। কুসুম ফুল চাষে তার তেমন কোনো খরচ হয়নি। অন্য ফসলের মতো সার কীটনাশক বা পরিচর্যা করতে হয় না। তেমন কোনো রোগবালাইও নাই। শুধু জমি চাষ দিয়ে বীজ বুনলেই হয়ে যায়। বপনের চার মাসের মধ্যেই কুসুম ফুল ঘরে উঠে। বাজারে এর চাহিদাও বেশ ভালো। প্রতি বিঘাতে ৪-৫ মণ কুসুম ফুলের বীজ পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ কুসুম ফুলের বীজ ৫-৬ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। কুসুম ফুলের বীজ পাখির খাদ্য ও তেল উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কুসুম ফুল চাষী জিন্নাত আলী বলেন, এই প্রথম তিনি কুসুম ফুলের চাষ করেছেন। জমিতে বীজ বপন করা ছাড়া তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। প্রতি বিঘাতে খরচ হয় মাত্র ৩ হাজার টাকা। তিনি ১০ কাঠা জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করেছেন। খুব সুন্দর হয়েছে। লাল, হলুদ, গোলাপি, সোনালি, মেজেন্ডাসহ বাহারি রঙের কুসুম ফুলের সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে তার জমিতে ভিড় করছেন। এরই মধ্যে নতুন এ ফুল চাষ দেখে অনেক কৃষকই কুসুম ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করে তার কাছে বীজ চেয়েছেন। ফুলের বীজ থেকে তেলের পাশাপাশি কুসুম ফুলের বীজ পাখিদের জন্য জনপ্রিয় একটি খাদ্য। ফলে যারা পাখির ব্যবসা করেন তারা বীজ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তিনি আরো জানান, এবার লাভ হলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে কুসুম ফুলের চাষ করবেন তিনি।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মার চরাঞ্চলে এবারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১ বিঘা জমিতে দুইজন কৃষক তেল জাতীয় ফসল কুসুম ফুলের চাষ শুরু করেছেন। পোকামাকড়ের আক্রমণ কম, কম খরচে অনাবাদি জমির জন্য কুসুম ফুলের চাষ অন্যতম। বাজারে চাহিদা ভালো থাকালে কুসুম ফুলের চাষে আগামীতে আরো বাড়বে। আগ্রহী কৃষকদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।