পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে ২৫ জুন। এ সেতুর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত পৃথক রেল প্রকল্প রয়েছে। এটিও সরকারের মেগা প্রকল্প নাম পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প। রেলওয়ের এ পথ দিয়ে ট্রেন যাবে পদ্মা সেতুর নিচে লেয়ার ডেক দিয়ে। পদ্মা রেল সেতু ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকে প্রথম বছরই প্রায় ১০৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ভাড়া (ট্যারিফ) দিতে হবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত হার অনুযায়ী ৩৫ বছর এই ভাড়া বা টোল দিয়ে যেতে হবে। এর জন্য রেলকে ব্যয় করতে হবে ছয় হাজার ২৫২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। তবে প্রতিবছর এই হার ভিন্ন হবে।
সংস্থাটির মতে, নির্মাণব্যয়ের খরচ দিতে হলে টোলের ভাগও দিতে হবে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অর্থ বিভাগে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মূলত সেতু কর্তৃপক্ষের দাবি করা অর্থ পরিশোধ অসম্ভব সেটিই যুক্তি দিয়ে তুলে ধরবে রেলওয়ে। রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব আলোচনা হয়েছে। রেলওয়ের মহাপরিচালক ডিএন মজমুদার বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত ট্যারিফ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে পর্যালোচনা করা হয়েছে নানা বিষয় নিয়ে। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে মন্ত্রণালয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে ট্রেনে কী পরিমাণ যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করতে হবে এবং সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের সঙ্গে এর তফাতের পরিমাণ পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে।
বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তারা জানান, রেলের নিজস্ব আয় দিয়ে প্রস্তাবিত অঙ্ক পরিশোধ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তবে মালিকানা দিলে টোলের ভাগসহ রাজস্ব অর্জনে রেল রাজি হবে এমন আভাস মিলেছে বৈঠকে। বঙ্গবন্ধু সেতু ও পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের সংখ্যা এক হবে না। ট্যারিফ নির্ধারণে কোথাও ৫০ কিলোমিটার, কোথাও ৮০ কিলোমিটার আবার কোনো ক্ষেত্রে ১০০ কিলোমিটার হিসাব করা হয়। একে পনটেজ চার্জ বলা হয়।
এ রুটে ট্রেন চলাচলের সম্ভাব্য চাহিদা, আয় ও ব্যয়, বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে যাত্রী পরিবহনের আয় ও নির্ধারিত ট্যারিফের তারতম্য সবই খতিয়ে দেখে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। সেখানে বলা হয়, রেলওয়ে ডেক, ভায়াডাক্ট ইত্যাদি নির্মাণে ঠিকাদারের ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা। এটি মোট ব্যয়ের শতকরা হিসাবে ১৭ দশমিক ০২৫ শতাংশ। এ জন্য ট্যারিফ প্রস্তাব ৬২৫২ কোটি টাকা। রেল মনে করছে, সেতু বিভাগের দাবি করা প্রস্তাবটি যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবধর্মী নয়। এটি পরিশোধের সুযোগ নেই মর্মে সেতু কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
বঙ্গবন্ধু সেতু ব্যবহারের জন্য বর্তমানে নির্ধারিত টোল বছরে ১ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে ১ কোটি থেকে দেড় কোটি টাকা নির্ধারণে সম্মতির তথ্য জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। অন্যান্য বড় সেতুর মতো পদ্মা সেতুতে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহনে ট্রেন চালুর প্রথম দিন থেকে ১০০ কিলোমিটার ‘পনটেজ চার্জ’ হিসাবে আদায় করার কথা বলেছে রেলওয়ে।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা সেতু লাভজনক স্থাপনা। এই স্থাপনার মালিকানার অংশ পেতে চায় রেলওয়ে। সেতু বিভাগের দাবি করা অর্থ নির্মাণব্যয়ের ১৭ দশমিক ০২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হলে মালিকানা পেতে পারে রেলওয়ে। এর মাধ্যমে নিট মুনাফা অর্জন করতে পারে সংস্থাটি। তাই সেতু কর্তৃপক্ষকে নির্মাণ খরচ দিলে টোলসহ আয়ের উৎস তৈরি করতে চায় রেল। এ জন্য সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে। পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের অবকাঠামো নির্মাণের পরিপ্রেক্ষিতে ট্যারিফ সংক্রান্ত আরেকটি বৈঠক হতে পারে সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
সেতু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব অনুযায়ী, পদ্মা সেতুতে রেল চালানোর জন্য ২০৫৬-৫৭ অর্থবছর পর্যন্ত টোল ও ট্যারিফ দিয়ে যেতে হবে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার ট্যারিফ দিতে হবে রেলকে। পরের চার বছর প্রায় ১০৫ কোটি টাকা করে দিতে হবে। ২০২৭-২৮ অর্থবছর থেকে ২০৩১-৩২ অর্থবছর পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কোটি টাকা করে প্রতিবছর দিতে হবে। পরের পাঁচ বছর দিতে হবে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা করে। ২০৩৭ থেকে ২০৪৭ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর প্রায় ১৮০ কোটি টাকা করে টোল দিতে হবে। শেষের ১০ বছরে দিতে হবে সর্বোচ্চ হারে ট্যারিফ। এই সময়ে প্রায় ২৩০ কোটি থেকে ২৫১ কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে হবে। এর মধ্যে এক বছরে সর্বোচ্চ দিতে হবে প্রায় ২৫১ কোটি ১২ লাখ টাকা।
পদ্মা সেতুর টোল থেকে ১৮ বছরেই পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয় উঠে আসবে বলে প্রক্ষেপণ করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। যদিও টোলের পুরো টাকা বিবিএ পাবে না। টোলের আয় থেকে প্রথমেই ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত ঋণের সুদসহ কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য ৩৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ৩৬ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। তবে বিভিন্ন সংস্থা থেকে নেওয়া ট্যারিফ ও যান চলাচলে আদায়কৃত টোলের টাকার মাধ্যমে ১৫ বছরেই নির্মাণ খরচ উত্তোলনের চিন্তা করছে সেতু বিভাগ।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।