নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : শেষের নাটকটা ‘সোপ অপেরা’ হতে পারল না, নাট্যাংশ হয়েই থাকল। আগের দিন প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের ২২২ মিলিয়ন ইউরো ফিরিয়ে দিয়ে নেইমারের দলবদল নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা ফিরিয়ে এনেছিল স্প্যানিশ লিগ কমিটি। কিন্তু নেইমারকে আটকানো যায়নি। সরাসরি বার্সেলোনাকেই পুরো রিলিজ কলজের অঙ্কটা দিয়ে এসেছে পিএসজি। গেলপরশু রাত থেকেই নেইমার আর বার্সেলোনার নন। অনেক নাটকীয়তার পর রেকর্ড ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো ট্রান্সফার ফিতে বার্সলোনা থেকে পিএসজিতে যোগ দেন নেইমার। ২৫ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের দল বদলে ভেঙ্গে গেল গত বছরের অগাস্টে ১০ কোটি ইউরোয় জুভেন্টস থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নাম লেখানো পল পগবার দল বদলের রেকর্ডটি। ফ্রান্সের দলটি তাকে যে সোনায় মুড়িয়ে রাখবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ট্রান্সফারের আগেই দলটির আরব মালিক নেইমারকে একটি ব্যক্তিগত জেটও দিয়েছেন ব্যবহার করবার জন্য। ক্লাবে নাম লেখানোর সঙ্গে সঙ্গেই পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ১০ নম্বর জার্সিও!
বার্সেলোনায় লিওনেল মেসি ১০ নম্বর জার্সি পরায়, নেইমার খেলতেন ১১ নম্বর। ব্রাজিল দলে অবশ্য ১০ নম্বর জার্সি তার। এখন প্যারিসের দলটিতেও পছন্দের নম্বর পেলেন ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। যেটি আগে ছিল জøাতান ইব্রাহিমোভিচের দখলে। সুইডেনের এই স্ট্রাইকার গত বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে গেলে জার্সিটি পান হাভিয়ের পাস্তোরে। আর্জেন্টিনার এই খেলোয়াড় তা উপহার দিয়েছেন নেইমারকে। ‘এটা একটা ছোটো উপহার, প্যারিসে স্বাগতম। আমি চাই সে খুশি হোক এবং প্রথম দিন থেকেই এখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করুক।’ ১০ নম্বর জার্সি ছেড়ে দিয়ে নেইমারের কাছে চাওয়াটাও জানালেন পাস্তোরে, ‘আমি তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চাই যাতে সে এবং পুরো স্কোয়াড এগিয়ে যেতে পারে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারে।’
গত মৌসুমে মোনাকোর কাছে লিগ ওয়ানের শিরোপা হারায় পিএসজি। পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো তারা শিরোপাটি জিততে পারেনি। তবে পিএসজির অনেক দিন ধরেই মূল লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতা। ২০১৩ সালে সান্তোস থেকে বার্সেলোনায় আসার পর নেইমার প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে হয়ে মোট ১০৫টি গোল করেছেন। জিতেছেন দুটি লা লিগা, তিনটি কোপা দেল রে ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ মোট আটটি শিরোপা। ২০১৪-১৫ মৌসুমে বার্সেলোনার ‘ট্রেবল’ জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালের বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়ার লড়াইয়ে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পিছনে থেকে তৃতীয় হন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড।
তবে সেসব ছাপিয়ে বার্সা শিবির এবং নেইমারের মনে এখনও শোক আর বিচ্ছেদ যন্ত্রনার ছাপ স্পষ্ট। সবার আগে প্রিয় সুহৃদকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মেসি। আর্জেন্টাইন যাদুকর বলেছিলেন, ‘যেখানেই যাও, ভারো থেকো।’ হৃদয় ভাঙার আওয়াজ তাতে লুকয়ানি এতটুকু। সেই একই অনুরক্তি ফুটে উঠলো সুয়ারেজের কণ্ঠেও। ব্রাজিলের এই খেলোয়াড়কে ‘কখনও বদলে না যাওয়ার’ আহŸানও জানিয়েছেন উরুগুয়ে স্ট্রাইকার। ইন্সটাগ্রামে সতীর্থকে বিদায় জানিয়েছেন এভাবে, ‘বন্ধু আমার, আগামীর সবকিছুর জন্য তোমার মঙ্গল কামনা করছি!!! তোমার সমর্থন, তোমার সঙ্গে থেকে আমি যা কিছু শিখেছি এবং একসঙ্গে আমরা যেসব দারুণ মুহূর্ত কাটিয়েছি-সেসবের জন্যও তোমাকে ধন্যবাদ!!!...কখনও বদলে যেও না, তোমাকে ভালোবাসি ছোট ভাই।’
সদ্য সাবেক সতীর্থদের বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডও। এক ভিডিও বার্তায় নেইমার নিজে ব্যাখ্যা করেছেন তাঁর বার্সা ছেড়ে যাওয়ার কারণ। নতুন চ্যালেঞ্জের খোঁজেই তিনি ছেড়ে যাচ্ছেন কাতালানদের। তবে যাওয়ার আগে মেসিদের জন্য আবেগময় বার্তা দিতে ভোলেননি। মেসির সঙ্গে খেলতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন নেইমার, ‘আমার দেখা সেরা অ্যাথলেটের সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি নিশ্চিত তাঁর চেয়ে ভালো আর কাউকে আমি দেখব না। লিও মেসি আমার সঙ্গী ছিলেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে ছিলেন আমার বন্ধু এবং আমি তাঁর সঙ্গে খেলতে পেরে গর্বিত। লুইস সুয়ারেজ ও তাঁর সঙ্গে ঐতিহাসিক এক জুটি গড়েছিলাম। একজন অ্যাথলেটের পক্ষে যা জেতা সম্ভব, সবই জয় করেছি।’
শুধু মেসিই নন, বার্সেলোনায় খেলাটাও যে তাঁর কাছে অনেক বড় কিছু ছিল সেটাও জানিয়েছেন নেইমার। এই ক্লাবে নিজের প্রথম দিককার কথা স্মরণ করেছেন নেইমার, ‘বার্সেলোনায় খেলা চ্যালেঞ্জের চেয়েও বেশি কিছু ছিল। এত বড় বড় খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলছি, যেন ভিডিও গেম! আমার শুরুর দিনগুলোর কথা এখনো মনে আছে। মেসি, ভালদেস, জাভি, ইনিয়েস্তা, পুয়েল, পিকে, বুসকেটসদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে বসা। এমন এক ক্লাবে খেলা যারা ‘ক্লাবের চেয়েও বেশি কিছু।’ আমি অবিস্মরণীয় কিছু মুহূর্ত পার করেছি। এটা একটি শহরের চেয়ে বেশি ছিল, একটা ঘর। বার্সেলোনা ও কাতালুনিয়া সব সময় আমার হৃদয়ে থাকবে কিন্তু আমার নতুন চ্যালেঞ্জ দরকার ছিল।’
নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে যা বেছে নিয়েছেন সেটা বেশ কঠিন। পিএসজির মতো ক্লাবকে ইউরোপের সম্ভ্রান্তদের তালিকায় আনার কঠিন দায়িত্ব এখন নেইমারের কাঁধে, ‘আমি পিএসজির প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। এ ক্লাবকে শিরোপা জেতাতে চাই আমি, যা সমর্থকেরা আশা করে। ক্যারিয়ারের জন্য এটা খুব কঠিন পথ কিন্তু আমি এ চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।