নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ ইনিংসের ৩২তম ওভার। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে ব্যাটিংয়ে থাকা বাংলাদেশ বেশ একতরফা ভাবেই এগিয়ে। তৃতীয় উইকেটে তামিম-মুফফিকের জুটিও তখন আরো পরিনতর দিকে। গুড লেস্থে করা স্টোকসের প্রথম বলকে সম্মান জানালেন তামিম। পরের ফুলটস বলে স্মার্ট ব্যাটসম্যানের মতই থার্ড ম্যান দিয়ে করলেন বাউন্ডারিছাড়া। তেড়েফুঁড়ে এসে তামিমকে কি যেন বলতে গেলেন স্টোকস। কথা না বাড়িয়ে তামিম স্টোকসকে ইশারা করলেন বোলিং প্রান্তে ফিরে যেতে।
ব্যাটিংয়ে আগের চেয়ে আরো পরিনত তামিম অবশ্য এমন ¯েøজিংয়ে দমে যাওয়ার পাত্র নন, দমে তিনি যানওনি। ৮৪ রানে ব্যাটে থাকা তামিম পরে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের নবম শতক। হয়েছেন এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। ১১ বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শাহরিয়ার নাফীসের করা ১২৩* রানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে আসরে সেঞ্চুরি করেন তামিম। ১২৪ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে দেশসেরা ব্যাটসম্যান থেমেছেন ১৪২ বলে ১২টি চার ও ৩ ছক্কায় ১২৮ রান করে। সাথে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে করা মুশফিকের ঝড়ো ইনিংসে গড়েছেন ১৬৬ রানের জুটির রেকর্ড। বাংলাদেশও ইংল্যান্ডকে দিয়েছে ৩০৬ রানের লক্ষ্য। বাংলাদেশের জন্য বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষকে তিনশোর্ধো রানের লক্ষ্য বেধে দেয়ার মাত্র দ্বিতীয় উদাহরণ এটি।
চারজন স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশÑ তিন পেসার মাশরাফি-মুস্তাফিজ-রুবেলের সাথে স্পিন বিশেষজ্ঞ সাকিব। বাকি দশ ওভার মোসাদ্দেক-সৌম্য-মাহমুদুল্লাহকে দিয়ে মিটিয়ে নেয়ার প্রায়াস আর কি। দলে তো আগে থেকেই নেই নাসির, মিরাজকেও রাখা হয়নি একাদশে। বিকল্প বোলিংয়ের অপশনও তেমন নেই মাশরাফির হাতে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাই ভালোই ভুগতে হচ্ছিল বাংলাদেশকে। ২৬ ওভারেই মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড তুলে ফেলে ১৪৭ রান। শতকের পথে হাটছেন অ্যালেক্স হেলস (৭৯ বলে ৮১) ও জো রুট (৬৯ বলে ৬২)। অথচ তৃতীয় ওভারে দলীয় ৬ রানে জেসন রয়কে ফিরিয়ে কি দুর্দান্ত শুরুই না করেছিলেন দলনেতা মাশরাফি।
অথচ ওভালের এই মাঠেই একদিন আগে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৮৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল টাইগারা। ম্যাচের পরেই অবশ্য কোচ হাতুরোসিংহে বলেছিলেন এটা বাংলাদেশের আসল চিত্র নয়। গতকালের উদ্বোধনী ম্যাচে ব্যাটিংয়ে অন্তঃত তারই প্রমাণ রেখেছে মাশরাফি বাহিনী। শেষদিকে দ্রæত উইকেট পতনে অন্তঃত ২০-২৫ রান কম হয়েছে বটে। সৌম্য-তামিমের ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিটা জমে উঠতেই ফিরলেন ইমরুল, দলীয় ৯৫ রানে। এরপরই আসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের রেকর্ড ১৬৬ রানের জুটি। তৃতীয় উইকেটে মাত্র ২৫ ওভারের এই জুটি দিয়ে রিতিমত ইংলিশ পেসারদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছেন দেশসেরা দুই ব্যাটসম্যান। একসময় তো মনে হচ্ছিল সাড়ে তিনশও করে ফেলতে পারে বাংলাদেশ। তিন্তু ৪৫তম ওভারে তামিম আউট হওয়ার পরের বলেই মুশফিকও (৭২ বলে ৭৯) ফিরলে সেই স্বপ্ন শেষ হয়। টি-টোয়েন্টির যুগে এসেও শেষ ৫ ওভারে আরো ৪ উইকেট হারিয়ে সাকিব-সাব্বির-মাহমুদুল্লাহরা যোগ করতে পারেন মাত্র ৪৩ রান। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই রান জয়ের জন্য যথেষ্ঠ বাংলাদেশের কাছে?
ওভালের ইতিহাস বলছে, ‘না’। তিনশ’ তাড়া করে জয়ের ভুরি ভুরি রেকর্ড আছে এই মাঠে। গত বিশ্বকাপের পর ১৩ ম্যাচের মধ্যে ১০ ম্যাচেই গড়ে ২৯৬ তাড়া করে জিতেছে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে আছে ৩৯৮ তাড়া করে জিয়ের রেকর্ডও! তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও বাংলাদেশের বিপক্ষেই কথা বলে। রান তাড়া করে ম্যাচ জেতাটা তো ইদানিং একটা আর্ট ইংলিশদের কাছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।