নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
‘ব্যাটিং ব্যর্থতায় আরেকটি হার’, ‘শুরুর ব্যাটিং নিয়ে আক্ষেপ’, ‘টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানের ভুলের মাশুল’- বহুদিন ধরেই দেশের গণমাধ্যমগুলোতে এমন শিরোনারে খবর কম ছাপা হয়নি। একেকটি ম্যাচ শেষে হয়, গ্লানি নিয়ে বরণ করতে হয় লজ্জার হার আর প্রতিবারই কাঠগড়ায় তোলা হয় ‘বাজে ব্যাটিং’কে। কখনও ওপেনার, কখনও টপঅর্ডার নইলে মিডল অর্ডার- ব্যাটিংয়ের আর কোনো ধাপ বাকি থাকলে সেটিও হয়তো উঠতো কাঠগড়ায়! দলে বদলের পর বদল করেও ভাগ্য যে বদলায় না বাংলাদেশের! এ যেন অনেকটা ‘নতুন বোতলে পুরনো মদ’!
ক’দিন আগেই যেখানে নিজেদের সুবিধামতো উইকেট বানিয়ে যেই মাহমুদউল্লাহর দল নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে বিশ্বের সেরা দুটি দল অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডকে, সেই মিরপুরেই এবার ব্যাটিংয়ে খাবি খাচ্ছে বাংলাদেশ দলই! এবার ব্যাটিং উইকেট বানিয়ে বিসিবি নিজেদের লজ্জা ঢাকার চেষ্টা করে যেন বিপদে ফেলে দিয়েছে দলকেই! মাত্র ১০৮ রানে গুটিয়ে গিয়ে এবার রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা ম্যাচটি হেরে গেছে ৮ উইকেটে, ১১ বল আগেই।
গতকাল মিরপুর শেরে বাংরা স্টেডিয়ামে শুরুতে চাপ, এরপর সেটা সামাল দেওয়া। তার মাঝেই খেই হারানো। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ ইনিংসের গতিপথ ছিল এমনই। ৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর নাজমুল হোসেনের সঙ্গে আফিফ হোসেনের জুটি আশা জাগালেও বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে। প্রথম ম্যাচে শেষ দিকে একটা লাফ দিলেও আজ হয়নি সেটাও। পাকিস্তানি বোলারদের সামনে রীতিমতো হাঁসফাঁস করেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
২০ ওভার খেলেও ১০৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে ২০ ওভার খেলে নিজেদের ইতিহাসেই এর চেয়ে কম রানের সংগ্রহ বাংলাদেশের আছে আর দুটি- ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষেই ৯ উইকেটে ৮৫ রানের পর গত আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯ উইকেটে ১০৪ রান। আগের দুটি ঘটনাও এই মিরপুরেই।
অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার ব্যর্থ হয়েছেন গতকালও। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই শাহিন শাহ আফ্রিদির ফুললেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা ডেলিভারিতে আড়াআড়ি ব্যাট চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন সাইফ। আম্পায়ার আউট না দিলেও সে উইকেটটা রিভিউ নিয়ে পেয়েছে পাকিস্তান। পরের ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমের অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বলে শরীর থেকে দূরে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম—৮ বলে ২ রানে। ৫ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে যথারীতি শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
২ ওভারে ২ উইকেট হারানোর চাপ এরপর সামাল দিতে হয়েছে আফিফ ও নাজমুলকে। আফিফ অবশ্য আফ্রিদির ওপর চড়াও হয়েছিলেন। ‘ফ্লিক’ করে ছয় মারার পর অবশ্য একটু ছন্দপতন হয়েছিল তার, আফ্রিদির আচমকা থ্রো পায়ে গিয়ে লাগার পর। ফিজিওর দ্বারস্থও হতে হয়। এরপর লেগবাই থেকে আরেকটা চারসহ সে ওভারে আসে ১২ রান, শেষ পর্যন্ত যেটিই হয়ে থেকেছে ইনিংসের সর্বোচ্চ। পরের ওভারে ওয়াসিমকে কাট করে আরেকটা চার মারেন আফিফ। দুই বাঁহাতির সামনে অফ স্পিনার শোয়েব মালিককে আনেন বাবর, তবে সুবিধা করতে পারেননি খুব একটা। ২ ওভারে মালিক গুনেছেন ১৬ রান।
পাওয়ারপ্লেতে অন্তত আগের দিনের তুলনায় ভালো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ, উঠেছে ৩৬ রান। শুরুর চাপ সামাল দিয়ে থিতু হয়েছিলেন আফিফ ও নাজমুল দুজনই। শেষ পর্যন্ত আফিফ আলগা শটে আউট হওয়ায় ভেঙেছে ৩৬ বলে ৪৫ রানের সে জুটি। দ্বিতীয় ওভার করতে আসা শাদাব খানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে যেন নিজেই ভড়কে গেছেন আফিফ, বল ব্যাটে লেগে উঠেছে সেখানেই! ২১ বলে ২০ রান করেই থামতে হয়েছে তাঁকে।
মাহমুদউল্লাহ নেমে সুবিধা করতে পারেননি। নেমেই শাদাবকে স্কুপ করতে গিয়ে এলবিডব্লু হয়েছিলেন, যদিও বেঁচে যান রিভিউ নিয়ে। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক এরপর স্ট্রাইক বদলানোর কাজেও সুবিধা করতে পারেননি খুব একটা, হারিস রউফের বলে থার্ডম্যানের দিকে খেলতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হয়ে ফিরেছেন ১৫ বলে ১২ রান করেই, চারও মেরেছেন মাত্র একটিই। নাজমুলের সঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়কের জুটিতে উঠেছে ২৮ রান, তবে খরচ হয়েছে ২৭ বল।
ইনিংসে বাংলাদেশের একমাত্র স্বস্তির জায়গা বলতে গেলে নাজমুল হোসেনের ব্যাটিংই। প্রথমে রান তুলতে প্রায় সমানসংখ্যক বল খেললেও পরে সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন একটু। ফাঁকা জায়গা বের করে মেরেছেন বাউন্ডারি, দুই স্পিনার শাদাব ও নওয়াজের খাটো লেংথের বলে। ফিফটিটাও নাগালেই ছিল তার। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে শাদাবের দুর্দান্ত ফিরতি ক্যাচে অবশ্য ৩৪ বলে ৪০ রান করেই থামতে হয়েছে তাঁকে, ইনিংসে মেরেছেন ৫টি চার।
শুরুতে ২ ওভারে ১০ রান দেওয়া আফ্রিদির ওভার স্বাভাবিকভাবেই রেখে দিয়েছিলেন বাবর। ১৭ ও ১৯তম ওভারে এই ফাস্ট বোলার দিয়েছেন মাত্র ৫ রান, সঙ্গে ছিল একটি লেগবাই। আগের দিন ক্যামিও খেলা নুরুল হাসানও এ সময় ফিরেছেন বড় শটের চেষ্টায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। এর আগেই নওয়াজকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মেহেদী। শেষ দিকে আমিনুল ইসলাম অপরাজিত ছিলেন ৮ রান, তাসকিন করেছেন ২ রান। দুজনেরই স্ট্রাইক রেট ছিল ৫০। শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে মাত্র ৪৪ রান। আর তাতেই তরান্বিত হয় লজ্জার হার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।