Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোনালদোর মাইলফলকে রিয়ালের জয়

| প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : মাঠের ডান কোনে গ্যালারির দিকে ডান হাতের তর্জনি উঁচিয়ে কিছুদুর ছুট, বাতাসে ভেসে দুই বাহু মাথার উপর থেকে এক ঝাঁকিতে নীচের দিকে প্রসারীতকরণ, এরপর ময়ূরের পেখম মেলার মত বুকটা ফুলিয়ে আনন্দ গর্জন। ফুটবল প্রেমীদের কাছে উদযাপনটা অতিব পরিচিত। কিন্তু আশ্চর্য হলেও গত সাত মাস ইউরোপ সেরাদের আসরে অমন উদযাপন করতে দেখা যায়নি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে!
পরিসংখ্যানটা দুই দিন আগের। পরশু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে দীর্ঘ ৬৫৯ মিনিটের নীরবতা ভাঙলেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ তারকা। সেই পরিচিত উদযাপনও দেখা গেছে একবার নয়, দুবার। তাতে রিয়াল মাদ্রিদ তো বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে ২-১ গোলে জিতলই ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপিয়ান আসরে গোলের সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন রোনালদো।
অ্যারিয়েঞ্জ অ্যারেনায় অবশ্য প্রথম গোল উদযাপন করে স্বাগতিকরাই। আর্তুরো ভিদালের হেডারে ২৫ মিনিটে লিড নেয় বায়ার্ন। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়ার সহজতম সুযোগ হাতছাড়াও করেন ভিদাল। পেনাল্টি শটটা কোথায় নিয়েছিলেন সেটা হয়তো ভিদাল নিজেও জানেন না। ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে বল উড়ে যায়। গোল না হওয়াতে অবশ্য রেফারির ভুলটা শুধরে যায়। ফ্রাঙ্ক রিবেরির ক্রস ডি বক্সে দানি কারবাহালের হাতে নয়, কাঁধে লেগেছিল। সে যায় হোক, বায়ার্ন ২-০ গোলে এগিযে গেলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিনই হত রিয়ালের।
বিরতি থেকে ফিরেই দলকে সমতায় এনে দেন রোনালদো। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের জন্য সবচেয়ে বড় আঘাতটা আসে ৬১তম মিনিটে। তিন মিনিটের ব্যবধানে দুই হলুদে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জাভি মার্টিনেজ। বাকি আধাঘণ্টা প্রতিপক্ষ শিবিরে ১০ জনের দল পেয়ে রিতিমত তান্ডবলীলা চালান রোনালদো-বেনজেমারা। গ্যারেথ বেলকে তার দুই মিনিট আগে তুলে নেন জিনেদিন জিদান। কারবাহালের ক্রস থেকে ৭৭তম মিনিটে আসে রোনালদোর সেই মহেন্দ্রক্ষণ। দলকে এগিয় নিতে ভুল করেননি ৩২ বছর বয়সী। প্রতিপক্ষের মাঠে দুই গোল পাওয়া মানে নিজেদের মাঠে রিয়াল ১-০ গোলে হারলেও সেমিফাইনাল নিশ্চিত। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি অবশ্য রোনালদোর ৯৭তম গোল। কিন্তু ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ১০০তম। এমন মাইফলকে পৌঁছাতে পেরে খুশি রোনালদো। এজন্য সব কৃতিত্ব দিলেন সতীর্থদের, ‘আজ (পরশু) রাতের জয় ও ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ১০০ গোল পাওয়ায় আমি ভীষণ খুশি। সকল সতীর্থ ও কোচদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। তারা ছাড়া এটা সম্ভব হত না।’
ম্যানুলে নয়্যার অমন দেয়াল হয়ে না দাঁড়ালে ‘সিআর-সেভেন’ গোল পেতে পারতেন আরো। যোগ করা সময়ে কিভাবে যে হোঁচট খেলেন তা একমাত্র তিনিই জানেন। নইলে হ্যাটট্রিকটাও পূর্ণ হয় যেত। এ সময় রামোসও স্বভাসসুলভ হেডারে গোল করেছিলেন, কিন্তু অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। দুর্দান্ত নৈপুণ্যে রোনালদো- বেল-বেনজেমাদের একাধীকবার গোলবঞ্চিত করেন জার্মান গোলরক্ষক নয়্যার। নইলে শিষ্যের কাছ থেকে আরো বড় লজ্জা উপহার পেতেন কার্লো আনচেলত্তি।
বায়ার্নের আসল আঘাতটা আসে মূলত ম্যাচের আগেই, কাঁধের চোটে গোলম্যাশিন খ্যাত পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভান্দোভস্কিকে হারানোর মধ্য দিয়ে। রিয়ালের রক্ষণ গলে বেরিয়ে আসার মত তাই ছিল না কেউ-ই। তার পরিবর্তে খেলা টমাস মুলার তো নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন দীর্ঘদিন ধরে। সাথে যোগ হয় জাভির লাল কার্ড। ফলাফল শিষ্যের কাছে গুরুর হার। ব্যবধানটাও এমন যে দ্বিতীয় লেগের লড়াইটাও তাতে হয়ে গেছে অনেকটা একপেশে। সফরকরী দলের দুই গোলের ব্যবধানে জয় হয়তো কঠিন কিছু নয়, কিন্তু মাঠের নাম যে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু! লা লিগার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপার দিকেও ভালোমতই এগিয়ে গেল জিনেদিন জিদানের দল।
দিনের অন্য ম্যাচে নিজেদের মাঠে লেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। অঁতোয়ান গ্রিজম্যানের করা সেই পেনাল্টি গোলে অবশ্য বিতর্ক জড়িয়ে আছে। রিপ্লেতে দেখা গেছে গ্রিজম্যানকে ফাউল করা হয়েছিল ডি বক্সের বাইরে। কিন্তু ফরাসি স্ট্রাইকার হুমড়ি খেয়ে পড়েন বক্সের ভেতর। হারের ব্যবধান ছোট হওয়ায় কিং পাওয়ারে ঠিকই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকছে লেস্টারের সামনে।
এর আগের দিন বোমা হামলার কারণে স্থগিত হওয়া ম্যাচে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে তাদেরই মাঠে ৩-২ গোলে হারায় মোনাকো। লিগ ওয়ানের দলের হয় কিলিয়ান এমবাপে করেন জোড়া গোল, বাকিটা সিভেন বেন্দার আত্মঘাতী। পরের লেগে মোনাকোর মাঠের পরীক্ষাটা কঠিন হলেও জার্মান দলটির আশা বাঁচিয়ে রেখেছে দেম্বেলে ও কাগাওয়ার করা গোল দু’টি।

এক নজরে ফল
বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ২ : ৩ মোনাকো
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ১ : ০ লেস্টার সিটি
বায়ার্ন মিউনিখ ১ : ২ রিয়াল মাদ্রিদ

ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় শীর্ষ গোলদাতা
খেলোয়াড় ক্লাব ম্যাচ গোল
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ম্যান ইউ, রিয়াল মাদ্রিদ ১৪৩ ১০০
লিওনেল মেসি বার্সেলোনা ১১৮ ৯৭
রাউল গঞ্জালেস রিয়াল মাদ্রিদ, শালকে ১৫৮ ৭৬
ফিলিপ ইনজাগি পার্মা, জুভেন্টাস, এসি মিলান ১১৪ ৭০
আন্দ্রিয়া শেভচেঙ্কো ডায়নামো কিয়েভ, এসি মিলান, চেলসি ১৪২ ৬৭



 

Show all comments
  • mizan ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১০:৩১ এএম says : 0
    He is the best no doubt.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোনালদো

১১ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ