নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী কলম্বো (শ্রীলঙ্কা) থেকে : টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে দু’দলের শক্তির তারতম্যকে সামনে এনে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রেখেছিলেন কোচ হাতুরুসিংহে। অথচ, যে গল এ ৪ বছর আগে শ্রীলংকার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম ড্র’ করতে পেরেছে বাংলাদেশ দল, সেই গল টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ক্ষয়িঞ্চু শক্তির শ্রীলংকার কাছে ২৫৯ রানে! তামীমের মতিভ্রম রান আউট, কিংবা শুভাশিষের নো বল ডেলিভারিকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সাকিবের আত্মাহুতি নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। সেখান থেকে রাতারাতি এতোটা বদলে শ্রীলংকার মাটিতে প্রথম টেস্ট জিতল কীভাবে বাংলাদেশ দল ! এটাই প্রশ্ন। তবে এর কৃতিত্ব নিতে চাননি হাতুরুসিংহে। গল টেস্টে হারের পর ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে একটি সভা করেছে, আত্মোপলব্ধির ওই সভাই দলকে সেরা খেলায় করেছে উদ্বুদ্ধ, ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষা বদলে দিয়েছে ওই সভা, তা জানিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ হাতুরুসিংহে ‘ছেলেদের উপর আমি ভীষণ খুশি। গল টেস্টের পর এই জয়ের জন্য তারা আসলেই অনেক কষ্ট করেছে। তারা নিজেরা দরজা বন্ধ করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে। ফলাফলের জন্য অন্যকিছু করতে হবে, সেই সভা থেকে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। আমাকে খুব বেশি কিছু করতে হয়নি। পরিবর্তন দরকার, সে সিদ্ধান্ত তারাই নিয়েছিল। আমি শুধু প্রশ্নগুলোর জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তারা নিজেদের মন খুলে একঘণ্টা ধরে এসব নিয়ে আলাপ করেছে। তবে এই পাঁচ দিনে তাদের খেলার শক্তিটাই ছিল ইতিবাচক। এখনো কোনো কোনো জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন আছে। তবে তাদের শরীরি ভাষায় লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখেছি।’
তামীম নিজেও বদলে যাওয়ার গল্প হিসেবে টেনে এনেছেন ওই সভাকেই ‘গল টেস্টে হারের পর আমরা নিজেদের মধ্যে একটা সভা করেছি, তাতেই এই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন। এই ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময়ে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, ক্যাচ ধরার চেষ্টা, শেষ পর্যন্ত লড়াই করা, সবকিছু ওই সভায় আলোচনারই সুফল।’
চতুর্থ দিনে মুস্তাফিজুরের একটি স্পেল (৭-১-২৪-৩) শ্রীলংকাকে নামিয়ে এনেছে ব্যাকফুটে। তাই মুস্তাফিজুরের ওই স্পেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হাতুরুসিংহে ‘এখনকার অবস্থা থেকে তারা এক ম্যাচ অনভিজ্ঞ ছিল, এই তো। তবে তারা উন্নতি করছে, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচটি ঘুরিয়ে দিয়েছে ৪র্থ দিনে লাঞ্চের পরে মুস্তাফিজুরের স্পেলে। প্রচন্ড গরমে ফাস্ট বোলারদের জন্য করণীয় কিছুই ছিল না। কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় সময়ে সে বোলিংয়ে এসে ৭ ওভারের এক স্পেলে ৩ উইকেট নিয়েছে। ম্যাচের ওটাই ছিল আমাদের জন্য ক্রুশিয়াল সময়।’
পি সারা ওভাল টেস্ট-এর আগে সাকিবকে তাতিয়ে দিতে চেয়েছিলেন কোচ হাতুরুসিংহে, সাকিবের বোলিংয়ের ধার সেই আগের মতো আর নেই বলে করেছিলেন মন্তব্য এবং এটা নাকি সাকিবকে তার অতীতের ম্যাচের ভিডিও দেখিয়ে বলেছেন, তা জানিয়েছেন হাতুরুসিংহে ‘দ. আফ্রিকার বিপক্ষে ২০১০ সালে সাকিবের বোলিং দেখেছি। সে ভিন্নধর্মী এক বোলার। সে এখন কি করছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাকে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে সেই আলোচনাই করেছি। যখন মুস্তাফিজ এক এন্ডে বল করেছে, তখন অন্য এন্ডে সে যতোটা সম্ভব রান চেক দিয়ে বোলিংয়ের চেষ্টা করেছে।’
পি সারা ওভালটি হাতুরুসিংহের বড়ই পরিচিত। বাবার সঙ্গে ১২ বছর আগে খেলা দেখতে এসেছিলেন এই শ্রীলংকার এই মাঠে। এই মাঠে বল বয় চরিত্রেও ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট এন্ড অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। এই ক্লাবের হয়ে পারফর্ম করেই টেস্ট, ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে। বাড়ির পাশের এই ক্লাবটির অনার্স বোর্ডে লেখা আছে তার নাম। অথচ যে ভেন্যুতে এসে নস্টালজিয়ায় ফিরে যাবেন, সেই ভেন্যুতেই নিজের দেশকে দিলেন ধাক্কা! হাতুরুসিংহের নাম উচ্চারণ করে তাই শ্রীলংকার সমর্থকদের কেউ কেউ করেছেন আজে-বাজে উচ্চারণ। হাতুরুসিংহের কাছে হারটা বড়ই লেগেছে শ্রীলংকা ক্রিকেটেরও। সিরিজের সেরা ১০
ম্যাচ/ইনি. রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক ১০০/৫০
কুশল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ২৫৪ ১৯৪ ৬৩.৫০ ৫৮.৯৩ ১/০
তামীম ইকবাল (বাংলাদেশ) ২/৪ ২০৭ ৮২ ৫১.৭৫ ৫৪.০৪ ০/২
দিনেশ চান্দিমাল (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ১৯৮ ১৩৮ ৬৬.০০ ৪৪.৭৯ ১/১
দিমুথ করুণারতেœ (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ১৯৫ ১২৬ ৪৮.৭৫ ৪৫.৮৮ ১/০
সৌম্য সরকার (বাংলাদেশ) ২/৪ ১৯৫ ৭১ ৪৮.৭৫ ৫৮.৫৫ ০/৩
মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ) ২/৪ ১৯৩ ৮৫ ৬৪.৩৩ ৫০.১২ ০/২
সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) ২/৪ ১৬২ ১১৬ ৪০.৫০ ৬৯.৫২ ১/০
উপল থারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ১৫৬ ১১৫ ৩৯.০০ ৫৮.৮৬ ১/০
কুশল পেরেরা (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ১৪৩ ৫১ ৩৫.৭৫ ৪৮.৯৭ ০/২
নিরোশান ডিকওয়েলা (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ১২৯ ৭৫ ৩২.২৫ ৮৮.৯৬ ০/১
ম্যাচ/ইনি. উইকেট সেরা গড় ইকো. ৫/১০
রঙ্গণা হেরাথ (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ১৬ ৯/১৩১ ১৮.০০ ২.৭২ ১/০
মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ) ২/৪ ১০ ৬/১৯০ ৩৫.১০ ৪.০৩ ০/০
সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) ২/৪ ৯ ৬/১৫৪ ৩৯.৭৭ ২.৮৩ ০/০
মোস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ) ২/৪ ৮ ৫/১২৮ ২৭.৫০ ২.৮২ ০/০
কুশল পেরেরা (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ৮ ৫/১১৯ ৩৪.৭৫ ৩.১২ ০/০
লাকশান সান্দাকান (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ৬ ৪/১৭৪ ৪৫.৩৩ ৩.৮৮ ০/০
সুরঙ্গ লাকমাল (শ্রীলঙ্কা) ২/৪ ৩ ২/৯৭ ৫০.৩৩ ৩.১৪ ০/০
শুভাশিষ রায় (বাংলাদেশ) ২/৪ ৩ ২/৮৯ ৭৫.৩৩ ৩.৫০ ০/০
তাইজুল ইসলাম (বাংলাদেশ) ১/২ ২ ২/৭৮ ৩৯.০০ ২.৭৮ ০/০
তাসকিন আহমেদ (বাংলাদেশ) ১/২ ২ ২/১০৯ ৫৪.৫০ ৩.৭৫ ০/০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।