নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : শ্রীলঙ্কায় ২ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে এবং ২ টি-২০ ম্যাচের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ শেষ করে বিশ্রামের ফুরসত পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। আগামী ১২ থেকে ২৪ মে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট এবং আগামী ১ জুন থেকে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের আগে ইংলিশ কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। টিম ম্যানেজমেন্টের প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে আয়ারল্যান্ড সফরকে সামনে রেখে ইংল্যান্ডে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ১০ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্পের সিদ্ধান্ত পাকা করেছে বিসিবি।
২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে সামনে রেখে ব্রিসবেনে ১৫ দিনের অনুশীলন সুবিধা কাজে আসায় এ বছরের মে ও জুনে ইউরোপে ২টি ওয়ানডে টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বিসিবির টাকায় ইংল্যান্ডে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ’র মধ্যে ১০ দিনের এই কন্ডিশনিং ক্যাম্পের জন্য ইংল্যান্ডের সাসেক্সকে চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। মুস্তাফিজুরের দল সাসেক্সের মাঠে অনুশীলন সুবিধা ছাড়াও বেশ ক’টি ওয়ানডে ওয়ার্মআপ ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, এমন তথ্যই দিয়েছেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনÑ‘কন্ডিশনিং ক্যাম্পের জন্য ৭ থেকে ১০ দিন ইংল্যান্ডের সাসেক্সে কাটাবে বাংলাদেশ দল, এ ব্যাপারে সব কিছু ঠিক ঠাক করা হয়েছে।’
সাসেক্সে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে বাংলাদেশ দল যাবে আয়ারল্যান্ডে, ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্টে খেলতে। ১২ থেকে ২৪ মে অনুষ্ঠেয় এই ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্টে খেলে ১ জুন থেকে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিবে বাংলাদেশ দল।
সহযোগী সদস্য দেশগুলোর ক্রিকেট উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখতে আইসিসি’র শর্ত মেনে ইতোঃপূর্বে ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ড স্কটল্যান্ড সফর করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সে ধরনের শর্ত আরোপিত হয়নি আইসিসি’র পক্ষ থেকে, আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের অনুরোধে ঢেকি গিলে এ বছরের মে মাসে সেখানে নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অংশগ্রহণে সম্মতি দিয়েছে বিসিবি। ২০১৭ সালে অনুষ্ঠেয় ৮ জাতির আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের কঠিন সমীকরণ মিলিয়েছে, ওয়ানডে র্যাংঙ্কিংয়ে সেরা ৮ এ থাকতে হবে বলে যে শর্ত ছিল,তা পূরণ করেছে বাংলাদেশ দল ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ৭ এ উঠে। কিন্তু ৭ নম্বরে উঠে বাংলাদেশকে যেখানে চোখ রাখতে হচ্ছে ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণ, স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে বাদ দিয়ে সেরা ৭ এ থাকতে না পারলে খেলতে হবে বাংলাদেশকে বাছাইপর্বে, সেখানে নিচের সারির র্যাঙ্কিংয়ের দলের সঙ্গে খেলা মানেই র্যাঙ্কিং হারানোর শঙ্কা।
আফগানিস্তানকে গত বছরে আতিথ্য দিয়ে,এক ম্যাচ হেরে ৯৫ থেকে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ৯১ তে নেমে তা হাড়ে হাড়ে পাচ্ছে টের বিসিবি। বাংলাদেশের পেছনে থাকা পাকিস্তান ৮৯ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে এখন দিচ্ছে সতর্কবার্তা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বোর্ডের সভাপতি নিজে বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজ খেলার প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এ কারণেই। অথচ, এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আইসিসি’র ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ইংল্যান্ডকে বাদ দিয়ে সেরা ৭ এ থাকার চ্যালেঞ্জ যেখানে বাংলাদেশের, সেখানে কেন ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ১২ নম্বর দল আয়ারল্যান্ডের মাটিতে তাদের ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে খেলবে বাংলাদেশ? ইংল্যান্ডের মতো আইরিশ কন্ডিশনে স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলা উপমহাদেশের দেশগুলোর জন্য কঠিন বলেই র্যাঙ্কিংয়ে তলানীতে থাকা দলটির কাছে র্যাঙ্কিং পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা তো থাকছেই। ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ড সফরে ২ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ১-১ এ সমতা হওয়ার সেই অতীতটাও তাই ভাবতে হচ্ছে বিসিবিকে।
তবে আয়ারল্যান্ড সফরে আয়ারল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টূর্নামেন্টে অংশগ্রহনের কারন হিসেবে এতদিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রাক প্রস্ততির কথা বলা হলেও তবে সিদ্ধান্তটা নাকি অনেক আগেই নিয়েছে বিসিবি, এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি সিইওÑ‘ আয়ারল্যান্ড সফরের সিদ্ধান্ত অনেক আগের। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোয়ালিফাই করার আগেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’ আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে কথা দিয়েছে বলেই ওয়ানডে র্যাঙ্কিং ধরে রাখতে আয়ারল্যান্ড সফরকে সামনে রেখে সাসেক্সে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি সিইও ‘আয়ারল্যান্ড ট্যুরকে সামনে রেখে একটু বেশি সিরিয়াস হতে হচ্ছে। কারণ ওখানে যেমন নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে র্যাঙ্কিং পয়েন্ট বেড়ে যাবে, বিপরীতে আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে গেলে র্যাঙ্কিং পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা আছে। যেহেতু আয়ারল্যান্ডের কন্ডিশন ইংল্যান্ডের মতোই,তাই ইংল্যান্ডেই কন্ডিশনিং ক্যাম্প করতে হচ্ছে।’ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে আসর শুরুর ক’দিন আগেই ইংল্যান্ডে আতিথ্য পাবে দলগুলো, দলগুলোর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ওয়ার্মআপ ম্যাচ। আয়ারল্যান্ড সফর শেষে সেই সুযোগ তো পাচ্ছেই বাংলাদেশ দল, বাড়তি হিসেবে পাচ্ছে বোর্ডের টাকায় সাসেক্সে ১০ দিনের অনুশীলন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে ইংলিশ কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার সুযোগ অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই পাচ্ছে বাংলাদেশ দল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।