রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোস্তফা মাজেদ, ঝিনাইদহ থেকে : ঝিনাইদহে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পেয়ারা চাষ। খরচের তুলনায় লাভ দ্বিগুণ, তাই অন্যান্য ফসলের তুলনায় চাষিরা ঝুঁকছেন পেয়ারা চাষের দিকে। বিভিন্ন জেলায় চাহিদা বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, জেলায় এবার পেয়ারার আবাদ হয়েছে ৫০৬ হেক্টর জমিতে, এর মধ্যে কোটচাদপুর উপজেলাতেই আবাদ হয়েছে ২৫০ হেক্টর। এছাড়া প্রতি বছরই বাড়ছে পেয়ারার আবাদি জমির পরিমাণ। সাধারণত, পেয়ারা গাছে গুটি আসার সময় পোকামাকড় বা রোগাক্রান্তের সম্ভাবনা থাকে। তাই রোগ ও পোকার হাত থেকে রক্ষা এবং ফলকে রসালো করতে গাছে গুটি আসার পর সেগুলোতে ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ব্যাগিং পদ্ধতিতে প্রতিটি পেয়ারা গুটি পলি ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। এভাবে বেশ কয়েকদিন রাখার পর ফল খাওয়ার উপোগী হয়। ক্ষেতে পেয়ারা গাছের চারা রোপণের ১৪ মাস পর থেকেই ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রথম বছর প্রতি বিঘা জমিতে পেয়ারা আবাদে খরচ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা, পরবর্তী বছর থেকে খরচ কমে দাঁড়ায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বছরে বিঘাপ্রতি পেয়ারা হয় অন্তত ৫শ’ মণ। ভালো করে পরিচর্যা করা গেলে একটি গাছ থেকে একটানা ৭/৮ বছর পেয়ারা সংগ্রহ করা যায়। ঝিনাইদহের কোটচাদপুরের নওদাগ্রামের সফল পেয়ারা চাষি আব্দুস সালাম জানান, ৩ বছর আগে ১ বিঘা জমি দিয়ে পেয়ারা চাষ প্রথম শুরু করেছিলেন তিনি। এখন পেয়ারা বাগান রয়েছে ১১ বিঘা জমিতে। বছরের শীত ও বর্ষা এই দুই মৌসুমে ক্ষেতের পেয়ারা বিক্রি করা হয়। আমার ক্ষেত থেকে প্রতি বছর গড়ে ৭০ টাকা কেজি দরে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করা হয়। এতে খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে অন্তত ৩ লাখ টাকা। পেয়ারা চাষি আব্দুস সালাম আরো জানান, প্রথম যখন পেয়ারা চাষ শুরু করি তখন অনেকেই আমাকে পাগল বলতো। কিন্তু কারো কথায় আমি পিছপা না হয়ে এগিয়ে যেতে থাকি। এখন আমি পেয়ারা চাষ করে সফল। আমার লক্ষ্য প্রতি বছর ১ বিঘা জমি থেকে অন্তত ৩ লাখ টাকা লাভ করা। তবে আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক মানুষই এগিয়ে আসছেন পেয়ারা চাষের দিকে। অন্যান্য পেয়ারা চাষিরা জানান, এলাকায় পেয়ারা আবাদে অনেক চাষিই এগিয়ে আসছেন। মোটামুটি সবাই সফল। কেননা পেয়ারা আবাদে অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক বেশি লাভ হয়। পেয়ারা ব্যবসায়ীরা জানান, কোটচাদপুরের বাগান থেকে পেয়ারা কিনে সেগুলো ঝাকায় ভরে সরবরাহ করা হয় ঢাকা, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মোকামে। এতে প্রতি কেজি পেয়ারাতে খরচ বাদে নীট লাভ থাকে প্রায় ১০ টাকা। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল আহসান জানান, ঝিনাইদহের মাটি অত্যন্ত উর্বর, যা পেয়ারা চাষের জন্য উপযোগী। তাই জেলায় গেল ৪ বছরে পেয়ারার আবাদ বেড়েছে ব্যাপক হারে। এখানে থাই জাতের পেয়ারার চাষ বেশি হয়। এই পেয়ারাগুলা আকারে বড় হয়, ১ থেকে ২ পিসে এক কেজি ওজন হয়। যার দরুন চাষিরা পেয়ারা বিক্রি করে ভালো লাভ পেয়ে থাকেন। তিনি আরো জানান, যেহেতু এটা লাভবান ফসল, সেজন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা অনেক সুবিধা হচ্ছে। এ জেলার পেয়ারার স্বাদ ভালো, তাই বিভিন্ন জেলায় এর চাহিদা রয়েছে অনেক। আগামীতে চাষিরা যাতে করে পেয়ারা আবাদে আরো বেশি আগ্রহী হয় সেজন্য তাদেরকে বালাইনাশক, সুষম সার ব্যবহার, ব্যাগিং পদ্ধতিসহ পেয়ারা উৎপাদনের বিভিন্ন কৌশল সম্বন্ধে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।