Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দাউদকান্দিতে যাত্রীবাহী বাস খাদে : ৬ দিনমজুরের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭

সাদিক মামুন ও মোঃ আলী, কুমিল্লা থেকে : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যে সবচেয়ে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে কুমিল্লার দাউদকান্দি। গত দেড় মাসে দাউদকান্দিতে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্রী, চিকিৎসক, পিতা-পুত্র এবং একই পরিবারের একাধিক সদস্যসহ অন্তত ৩০ জনের বেশি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সড়কপথে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের কাছে দাউদকান্দি এখন ভয়ানক স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। গতকাল (শনিবার) ভোর ৫টায় দাউদকান্দিতে বাস দুর্ঘটনায় ৬ যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছে প্রায় ৪০জন। নিহত ৬ যাত্রীর সবাই দিনমজুর। কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে যাত্রীবাহী বাসটি বেপরোয়াভাবে দ্রুতগতিতে চালানোর কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাউদকান্দির জিংলাতলী এলাকায় সড়কের পাশে একটি খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৫জন এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে ১জনসহ ৬জনের মৃত্যু ঘটে।
দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ দিনমজুর লোক স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা ছেড়ে কুমিল্লায় কাজের আশায় ছুটে আসে। দিনমজুর ও সাধারণ যাত্রীদের নিয়ে ঝুমুর স্পেশাল (ঢাকা মেট্্েরা-ব-১৪-৫২৩৯) নামের একটি বাস শুক্রবার রাতে নীলফামারী থেকে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। প্রায় ৫০ যাত্রী নিয়ে বাসটি কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। আহত যাত্রীদের কেউ কেউ জানান, শীতের রাত্রিতে বেশিরভাগ যাত্রীই ঘুমাচ্ছিল। চালক শুরু থেকে দ্রুতগতিতে বাসটি চালিয়ে আসছিল। আজ (শনিবার) ভোর ৫টার দিকে বাসটি দাউদকান্দি এলাকায় আসলে চালক বেপরোয়াভাবে চালাতে থাকে। কুয়াশার কারণে সামনে সবকিছুই অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। যেসব যাত্রী সজাগ ছিল তারা চালককে আস্তেধীরে চালানোর জন্য বললেও সে কোন কথাই পাত্তা দেইনি। যার ফলে চালকের বেপরোয়া চালানোর জন্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশে একটি খাদে পড়ে যায়।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আউয়াল জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। নিহতরা সবাই দিনমজুরের কাজ করে। কাজের আশায় তারা নীলফামারি থেকে কুমিল্লায় আসছিল। নিহতরা হলো- নীলফামারী জেলার জলঢাকা থানার গরধর্মপাল গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে মোঃ শাহজাহান (৪০), একই গ্রামের মৃত গাটিয়া সরকারের ছেলে এনামুল হক (৬০), ডোমার থানার গোমনাতী গ্রামের মমিনুর রহমানের ছেলে মোঃ বাবু (১৮), একই থানার মেলা পাঙ্গা গ্রামের জ¦াকালা মিয়ার ছেলে ফারুক হোসেন (২২) ও একই গ্রামের আতিয়ার হোসেন (৪৮) এবং ৪০ বছর বয়সী এক দিনমজুরের পরিচয় জানা যায়নি।
নওগাঁয় নিহত ৩ ; আহত ৩
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় গতকাল সকালে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন  নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩জন। আহতদের মধ্যে লক্ষণ চন্দ্রের (৩৫) অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার দিকে ভটভটি যোগে নওগাঁ শহরে যাবার সময় উপজেলার রসুলপুর মোড়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রলির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই বিশ্বজিৎ ও জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়। এবং লক্ষনসহ আরও দুজন গুরুতর আহত হয়।
মৃত বিশ্বজিৎ আত্রাই উপজেলার রসুলপুর গ্রামের অনাথ চন্দ্রের ছেলে ও জাহাঙ্গীর একই গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে।
এদিকে নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, জেলার মহাদেবপুর উপজেলার নওহাটা বাজার থেকে নাজমুল হক নামের এক চালক ভটভটি নিয়ে নওগাঁ শহরে আসছিলেন। সকাল ১১ টার দিকে হাঁপানিয়া বাজারে এলে ভটভটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে ওই চালক ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ব্যাপারে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নেত্রকোনায় পৃথক সড়ক নিহত ২, আহত-৩
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনায় পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছে।  
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনা-কেন্দুয়া সড়কে সদর উপজেলার লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়নের বায়রাউড়া বাজারের সন্নিকটে এলোঙ্গিয়া বক্স কালভার্টের নিকট গত শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে বাস চাপায় মোটর সাইকেল আরোহী ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান ফকির (৪৫) ঘটনাস্থলেই নিহত এবং তার বন্ধু কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোঃ আনিসুর রহমান আহত হয়। নিহত হাবিবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের কাছারপুর গ্রামে। অপরদিকে কলমাকান্দা-দূর্গাপুর সড়কের ডোয়ারীকোনা গোরস্থানের কাছে শুক্রবার বিকালে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার চাপায় সালমা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূ নিহত এবং তার স্বামী রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও শিশু কন্যা রোজিনা আক্তার (১২) আহত হয়েছে। তাদেরকে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপোলক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত সালমা আক্তারের বাড়ি কলমাকান্দা উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে।
মাদারীপুরে  নিহত ৩, আহত -৫
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার সমাদ্দার ব্রীজ এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ৩ জন নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ১২টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সমাদ্দার ব্রীজ এলাকায়।
স্থানীয় ও পুলিশ জানান, সদর উপজেলার সমাদ্দার ব্রীজ এলাকায় দ্রুতগতির হানিফ পরিবহনের একটি বাস যাত্রীবাহী নসীমনকে ধাক্কা দিলে ঘটনা ঘটনাস্থলেই নসীমনের ৩ যাত্রী নিহত হয়। নিহতরা হলেন সদর উপজেলার কাউয়াকুড়ি গ্রামের সুমন মাতুব্বার (৩২) তার ভাইগ্না, হাসান মাতুব্বর (১২) এবং সাকিল (১৪)। এঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৫ জন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ