নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিউজিল্যান্ড : ১৯৪/৪ (২০.০ ওভারে)
বাংলাদেশ : ১৬৭/৬ (২০.০ ওভারে)
বাংলাদেশ ২৭ রানে পরাজিত।
শামীম চৌধুরী : ২৮ মাস আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও হয়নি এমনটা। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা পেলেও একমাত্র টি-২০ ম্যাচ বৃষ্টি ভাসিয়ে নেয়ায় লজ্জা নিবারণের কিছুটা উপায় পেয়েছিল বাংলাদেশ দল। তবে এবার নিউজিল্যান্ড সফরে ফিরেছে বাংলাদেশ আগের চেহারায়। টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে গতকাল ২৭ রানে হেরে ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে সব ম্যাচ হারের অতীতটাই মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে সব ক’টি ম্যাচ হারের পর আর কোন সিরিজে সব ক’টি ম্যাচ হারের অতীত নেই, ওয়ানডে এবং টি-২০ সিরিজ ৩-০ তে হেরে এখন টেস্ট সিরিজের সামনে দাঁড়িয়ে সেই দুঃসহ অতীতই রাঙ্গাচ্ছে চোখ।
ওয়ানডে সিরিজের পর টি-২০Ñচিত্রনাট্যটা একই থেকেছে। প্রতিটি ম্যাচেই আশা জাগিয়ে ফিনিশিংয়ে হতে হয়েছে হতাশ। গতকালও মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে তার ব্যতিক্রম হয়নি। অথচ, দু’দলের স্কোরের তুলনামুলক বিশ্লেষণে ১০ ওভার পর্যন্ত এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রথম পাওয়ার প্লেতে নিউজিল্যান্ডের স্কোর যেখানে ৪১/২, সেখানে বাংলাদেশের ৬৯/১, দলীয় হাফ সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডকে খেলতে হয়েছে ৫৪ বল, সেখানে বাংলাদেশের লেগেছে মাত্র ৩৮টি বল। ৮১ বলে নিউজিল্যান্ড পূর্ণ করেছে সেঞ্চুরি, সেখানে বাংলাদেশের লেগেছে ৭৩টি বল! ১০ ওভার পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড যেখানে টেনে-টুনে স্কোর নিয়েছে ৫৫/৩, সেখানে বাংলাদেশের স্কোর ৮৯/২! অথচ, দৃশ্যপটে পরিবর্তন এসেছে পরবর্তী ১০ ওভারে। নিউজিল্যান্ড যেখানে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ বোলারদের পাড়া মহল্লা মানে নামিয়ে এনে যোগ করেছে ১৩৯ রান, সেখানে শেষ ৬০ বলে ১০৬ রানের লক্ষ্য দূরূহ হয়েছে বাংলাদেশের, যোগ করতে পেরেছে মাত্র ৬৮ রান! প্রতিটি ম্যাচেই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের দীক্ষা দিয়েছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন, এই ম্যাচেও চেনারূপে হাজির তিনি। টি-২০’র ডেঞ্জারম্যান কোরে এন্ডারসনকে নিয়ে ৪র্থ উইকেট জুটিতে ১২৪ রানে বাংলাদেশকে রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার নেতৃত্বটা তিনিই দিয়েছেন। মাশরাফির বলে ৫৩ রানের মাথায় মিড উইকেটে সাকিবের হাতে এবং ৫৮ রানের মাথায় ডিপ ব্যাওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে তামীমের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া উইলিয়ামসন থেমেছেন ৬০ এ। অন্য এন্ডের ব্যাটসম্যান কোরে এন্ডারসন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টি-২০তে রেকর্ড ১০টি ছক্কায় ৪১ বলে ৯৪ রানের সাইক্লোন ইনিংসে বাংলাদেশ বোলারদের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন।
অথচ, রান পাহাড়ে চাপা পড়েও টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ কিছুর আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে ৩৯ রানে ছন্দে ফেরা সৌম্য এদিন ভয়ঙ্কর রূপ ছড়ানো শুরু করেছেন প্রথম ওভারে ট্রেন্ট বোল্টকে ২টি বাউন্ডারি মেরে। নিশামকে এক ওভারে ৩টি বাউন্ডারিতে পাওয়ার প্লে পর্বকে কাজে লাগানো সৌম্য ৯ম ওভারে লেগ স্পিনার ইস সোধিকে সুইপ করতে যেয়ে করলেন ভুল, দিলেন রিটার্ন ক্যাচ (২৮ বলে ৬ চার এ ৪২)। ওই যে ধাক্কা খেল বাংলাদেশ, সেই শোকটাই যেনো কাটিয়ে উঠতে আর পারলো না। বোল্টকে এক ওভারে মাহামুদুল্লাহ’র তিনটি বাউন্ডারি পর্যন্ত আশার সঞ্চার করতে পারেনি। বোল্টকে তামীমের আপার কাটে থার্ডম্যান দিয়ে ছক্কা, প্রথম স্কোরিং শটে বোল্টকে বাউন্ডারির মতো নজকাড়া শটের স্মৃতিচারণ ছাড়া কিছুই যে নেই প্রাপ্তি ব্যাটিংয়ে। কেন উইলিয়ামসকে সুইপ করতে যেয়ে সাব্বির বোল্ড হয়ে (১৮), সোধিকে ফ্লিক করতে যেয়ে মাহামুদুল্লাহ একই আউটে শিকার হয়ে আশা ভরসার মৃত্যু ঘটিয়েছেন। ক্যাচ ড্রপের অপবাদ থেকে মুক্তি পেতে সাকিবের ৩৪ বলে ৪১ রানের ইনিংসটি কেবলই ছিল সান্ত¦না। দু’দলের মধ্যে ব্যবধান ছক্কাতেওÑনিউজিল্যান্ডের ১১টির বিপরীতে বাংলাদেশের ছক্কা মাত্র ১টি। ফিল্ডিংয়ের সময় ছক্কা বাঁচাতে যেয়ে ইমরুল কায়েসের ইনজুরিও ব্যাটিং বেসামাল করে দিয়েছে বাংলাদেশকে। তবে এই সিরিজে প্রাপ্তির খাতায় সবচেয়ে বড় অর্জন পেস বোলার রুবেলের ধারাবাহিকতা। দ্বিতীয় টি-২০তে ৩/৩৭ এ এই ফরমেটের ক্রিকেটে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড টপকে গেছেন গতকাল (৩/৩১)। তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ৭ উইকেটে সবাইকে ছাড়িয়ে বোলারদের শীর্ষে রুবেল। ওয়ানডে সিরিজে অপাংক্তেয় থাকার জ্বালাটা ভালই জুড়িয়েছেন এই পেসার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।